দিল্লি ডায়েরি। —ফাইল চিত্র।
প্রফেসর শঙ্কু তাঁর পকেটে বটিকা ইন্ডিকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। এক বার সেটি খেলে বহু দিন খিদে পেত না। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে আজকাল পকেটে তেমনই এক বটিকা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাতে যদিও খিদে দূর হচ্ছে না, তবে গলায় খুসখুসে ভাব থাকলে, বা অল্প কাশি হলে নিমেষে সেরে যাচ্ছে। গত ৩১ অক্টোবর প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীর প্রয়াণবার্ষিকীতে প্রার্থনাসভায় হাজির ছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেত্রী মহসিনা কিদোয়াই। বয়স ৯২ বছর। কিন্তু কংগ্রেসের সব অনুষ্ঠানে নিয়ম করে তিনি উপস্থিত থাকেন। সে দিন ভোরবেলা প্রার্থনাসভায় মাঝে মাঝেই কাশছিলেন মহসিনা। পাশে বসেছিলেন খড়্গে। সঙ্গে সঙ্গে পাঞ্জাবির পকেট থেকে বটিকা বার করে আনলেন। মহসিনা মুখে পুরে ফেললেন সেই বটিকা। তিনি কাশছিলেন দেখে পরে সনিয়া গান্ধী মহসিনার খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন। মহসিনা জানিয়েছেন তিনি ভালই আছেন মল্লিকার্জুনের অব্যর্থ বটিকার গুণে।
স্মরণ: ইন্দিরা গান্ধীর সমাধিস্থলে মল্লিকার্জুন খড়্গে, সনিয়া ও রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
মানুষের হুঁশ নেই
দীপাবলির আগে থেকেই দিল্লির আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। বাতাসে দূষণ বাড়ে। প্রতি বছরই এ নিয়ে রাজনীতি হয়। প্রতি বছরই ধোঁয়াশা ফিরে আসে। এ বছর দিল্লির অরবিন্দ কেজরীওয়াল সরকার এক মাস আগে থেকেই আতশবাজি নিষিদ্ধ করেছে— কোনও রকম আতশবাজিই পোড়ানো চলবে না। ব্যবসায়ীরা বিপদে পড়েছেন। বিজেপি এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সমস্যার পাকাপাকি সমাধান না করে শুধু আতশবাজি বন্ধ করে কী হবে? ওতে আর কতটুকু দূষণ হয়? দিল্লির বাসিন্দাদের অবশ্য এতে কিছুই আসে যায় না। তাঁরা ধোঁয়াশায় সূর্যের মুখ দেখতে পান না। প্রাতর্ভ্রমণ বন্ধ। মাঝে মাঝেই কাশি। এ সব সত্ত্বেও দিল্লির মানুষ এখন থেকেই আতশবাজি পোড়ানো শুরু করে দিয়েছেন। দীপাবলির সময়ও আতশবাজি পোড়ানোর জন্য তাঁরা চোরাবাজার গিয়ে আতশবাজি কিনে আনছেন।
বিজেপির বাস্তুদোষ
শেষ বার বাস্তু পরিবর্তনের কাজ হয়েছিল ২০১১ সালে। মাঝে ঠিক বারো বছরের ব্যবধান। এই সময়ের মধ্যে দিল্লিতে তিনটি বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। ২০১৩, ২০১৫, ২০২০-তে। ক্ষমতা দখলে ব্যর্থ হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল। উপরন্তু, হাতছাড়া হয়েছে দিল্লি পুরসভা। তাই ফের বিজেপির দিল্লির রাজ্য কার্যালয়ের বাস্তু পরিবর্তনে মাঠে নামলেন স্থানীয় নেতৃত্ব। দলেরই এক শীর্ষ সদস্য বাস্তুবিশারদ। তাঁর পরামর্শে সংসদ-লাগোয়া পণ্ডিত পন্থ মার্গের রাজ্য দফতরের খোলনলচে আমূল পাল্টে ফেলা হচ্ছে। দলের রাজ্য সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব যে ঘরে বসেন, পাল্টে যাচ্ছে তারও নকশা। বদলে ফেলা হচ্ছে সদস্য ও দর্শনার্থীদের বসার ঘর। বাদ যাচ্ছে না ক্যান্টিন, এমনকি শৌচাগারও। প্রায় সব ক’টি ঘরেরই দিশা পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছেন বাস্তুবিদ, কিন্তু তাতে দিল্লি বিজেপির দশা কি আদৌ ফিরবে?
মধ্যমণি সঞ্জয় গান্ধী
দিল্লির কংগ্রেস দরবারে খুঁজেও কোথাও সঞ্জয় গান্ধীকে মিলবে না। নেই তাঁর কোনও ছবি, কাট আউট, নাম। তাঁকে ঘিরে কোনও আলোচনা, রাজনৈতিক ভাষ্যও আর কানে আসে না। কিন্তু বাকিরা ভুলে গেলেও তাঁকে এখনও হৃদ্মাঝারে রেখে দিয়েছেন তাঁর প্রিয় বন্ধু কমল নাথ। দু’জনে যৌবনে ছিলেন অভিন্নহৃদয়। আজও কমল নাথের বাড়ি তথা কার্যালয়ের একটি দেওয়াল বরাদ্দ রয়েছে গান্ধী পরিবারের ছবির জন্য। সনিয়া, রাহুল, রাজীব সবাই রয়েছেন ফ্রেমে চৌকো নকশায়। তার একেবারে মধ্যমণি করে সঞ্জয় গান্ধীকে রেখে দিয়েছেন কমল নাথ।
শান্তি: মণিপুরের জন্য প্রার্থনা, নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে। ৩ সেপটেম্বর, ২০২৩ ছবি: পিটিআই।
মণিপুরের কাঁটা
মণিপুরের আঁচ পড়ল কেরলে, বিজেপির শরিক শিবিরে। তিরুঅনন্তপুরমে ছোট শরিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রতি তা টের পেয়েছেন সভাপতি জে পি নড্ডা। মূলত খ্রিস্টান নেতারা তাঁকে বলেছেন, মণিপুরের ঘটনায় কেরলেও সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কেরলে পদচিহ্ন রাখতে হলে বিজেপিকে কিন্তু এই ভয় জয় করতে হবে সত্বর। নড্ডা বোঝানোর চেষ্টা করেন, মণিপুরে দু’টি জাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত ঘটেছে। কিন্তু তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। নড্ডাকে কথা দিতে হয়েছে, কেরলে সংখ্যালঘুদের আতঙ্ক দূর করতে দল পদক্ষেপ করবে।