Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: বিমানে বিশেষ অতিথি মিস্টার ব্যালট বক্স

দিল্লি থেকে টিকিট হবে চণ্ডীগড়, পটনা, ভুবনেশ্বর, রায়পুরের মতো ১৪টি রাজ্যের রাজধানী শহর ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায় এবং অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২২ ০৫:০৮
Share:

মিস্টার ব্যালট বক্সের নামে টিকিট চাই। দিল্লি থেকে টিকিট হবে চণ্ডীগড়, পটনা, ভুবনেশ্বর, রায়পুরের মতো ১৪টি রাজ্যের রাজধানী শহর ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে। দু’দিন আগে দিল্লির নির্বাচন ভবন থেকে বিমানসংস্থার দফতরে ওই ফোন এলে রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিলেন টিকিট সংরক্ষণ কর্মীরা। আসলে দেশের প্রথম নাগরিকের নির্বাচন বলে কথা! যে বাক্স পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করতে চলেছে তাকে বিশেষ খাতির করে দিল্লি থেকে কোনও একটি রাজ্যের রাজধানী ও সেখানে ভোটের পরে সমগুরুত্বে দিল্লি নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। সে কারণেই ব্যালট বাক্সের যাতায়াতের জন্য বিমানের টিকিট কাটা হয়। তাও একেবারে বিমানের প্রথম সারিতে। যেখানে বসলে অতিরিক্ত জায়গা পাওয়া যায় পা রাখার। গোটা রাস্তায় ওই বাক্স দেখভালের দায়িত্ব থাকবেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার। কিন্তু বাক্স কেন কেবল পুরুষ হবে— সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি কমিশন কর্তারা।

Advertisement

নিরাপত্তা: আগরতলা বিমানবন্দরে পৌঁছল ব্যালট বাক্স ও অন্যান্য কাগজপত্র

কোবিন্দের সংবর্ধনা

রাষ্ট্রপতির মেয়াদ ফুরোনোর আগে সাংসদদের তরফে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়। এ বারও ২৩ জুলাই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে সংসদের সেন্ট্রাল হলে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হবে। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বক্তৃতা করবেন। তার পরে বিদায়ী রাষ্ট্রপতির হাতে স্মারক ও ‘সিগনেচার বুক’ তুলে দেওয়া হবে। এই সিগনেচার বুক বা অটোগ্রাফের খাতায় সব সাংসদ সই করেন। ১৮ থেকে ২১ জুলাই সেন্ট্রাল হলে এই ‘সিগনেচার বুক’ সকলের সই সংগ্রহের জন্য রাখা হবে। রাষ্ট্রপতি ভবন ছেড়ে সাংসদদের অটোগ্রাফ দেওয়া খাতা নিয়ে, সনিয়া গান্ধীর বাড়ির পাশে ১২ নম্বর জনপথের নতুন বাংলোয় উঠবেন রামনাথ কোবিন্দ।

Advertisement

এ বার মন্ত্রগুপ্তি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের আগে এনডিএ এবং বিরোধী— উভয় পক্ষ থেকেই নাম সামনে চলে আসে। বিশেষ করে বিরোধী প্রার্থীর প্রস্তাবিত নাম এক-এক করে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে যায়। তার পরেই দেখা যায় যে, সেই নেতা প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছেন। সূত্রের খবর, এই খবর বেশির ভাগ প্রকাশিত হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস এবং কিছুটা বাম শিবির থেকে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাই এই তিন দল নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক মন্ত্রগুপ্তিতে! নিজেদের মধ্যে বৈঠক এবং নাম নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেটা কোনও ভাবেই যাতে প্রকাশ্যে না আসে, তার জন্য রীতিমতো বজ্র আঁটুনি। এ ব্যাপারে উদ্যোগ মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের। গত বারের অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী বাছাইয়ের সময়ের তিক্ত স্মৃতি ভোলেননি এই দলের নেতারা। মিডিয়ার এই বিস্ফোরণের যুগে এমন মন্ত্রগুপ্তি (তাও আবার সম্ভাব্য হারা ম্যাচ নিয়ে) সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি বলেই মনে করছে দিল্লি দরবার।

ফডণবীসের পরদেশি

দেবেন্দ্র ফডণবীস প্রথমে মহারাষ্ট্রের সরকারে যোগ দিতে চাননি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে একনাথ শিন্ডের উপমুখ্যমন্ত্রী হতে নির্দেশ দিয়ে আসলে বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব দেবেন্দ্রর ডানা ছাঁটল বলেই অনেকের বিশ্বাস। কারণ নাকি দেবেন্দ্র ফডণবীসের উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও মহারাষ্ট্রের বাইরেও গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে ওঠার চেষ্টা! এ নিয়ে গুঞ্জনের মধ্যেই আইএএস অফিসার শ্রীকর পরদেশিকে উপমুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সচিব হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। কে এই পরদেশি? নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রীর দফতরে তিনি পাঁচ বছর অধিকর্তা, যুগ্ম সচিব হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০১ ব্যাচের আইএএস অফিসারদের মধ্যে তাঁরই প্রথম যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি হয়েছিল। সবাই মনে করেন, কারণ একটাই। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। তা এ বার পরদেশিকে দেবেন্দ্র ফডণবীসের দফতরে কি ‘কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক’ করে পাঠানো হল? প্রশ্ন শুনে কেন্দ্রীয় সরকারের আমলা শুধুই ‘হা হা হা!’ করে হাসলেন। আর কিচ্ছুটি বললেন না।

প্রিয়পাত্র: নতুন দায়িত্বে শ্রীকর পরদেশি

দেড় মাস বিরক্ত করিনি!

সুপ্রিম কোর্টে কোনও মামলা দ্রুত শুনানির জন্য মৌখিক আবেদন জানানোকে বলা হয় ‘মেনশনিং’। গত সোমবার দেড় মাস গরমের ছুটির পরে সুপ্রিম কোর্ট খুলেছে। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা একের পর এক মামলা দ্রুত শুনানির জন্য ‘মেনশন’ করছেন। গোটা পাঁচেক হয়ে যাওয়ার পরে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা জানতে চাইলেন, আর কত ‘মেনশন’ হবে? মেহতা জবাব দিলেন, “দেড় মাস আপনাকে বিরক্ত করিনি, তাই…!” প্রধান বিচারপতি হেসে বললেন, “বেশ, ঠিক আছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement