বিচ্ছেদ: সংসদ ভবন ঢেকেছে ফাইবারের দেওয়ালে, তার ও-ধারে গাঁধী মূর্তি (ডান দিকে)
সংসদ ভবনের মূল ফটকের সামনেই অতি পরিচিত গাঁধী মূর্তি। সংসদ চলাকালীন যাবতীয় ধর্না, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ এই ১৬ ফুট উঁচু গাঁধী মূর্তির সামনেই হয়। পদ্মাসনে বসে থাকা জাতির জনক যেন সংসদের সকল ঘটনাবলির নীরব দর্শক। কিন্তু এখন সংসদ ভবন ও গাঁধী মূর্তির মাঝে দীর্ঘ ফাইবারের দেওয়াল। নতুন সংসদ ভবন তৈরির জন্য বর্তমান সংসদ ভবন ঢেকে ফেলা হচ্ছে। ঠিক হয়েছে, কাজ চলাকালীন এই গাঁধী মূর্তি সাময়িক ভাবে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে তা বসানো হবে নতুন সংসদ ভবনের মূল ফটকের সামনে। গুজরাতে সর্দার বল্লভভাই পটেলের ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’-র শিল্পী রাম ভনজি সুতারই সংসদ ভবনের এই সুবিখ্যাত গাঁধী মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন। ১৯৯৩-এ গাঁধী মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শঙ্করদয়াল শর্মা।
গালিবের হাভেলি
পুরনো দিল্লির বল্লিমরানে গলি কাসিমজানে ঢুঁ মারলে গালিবের হাভেলির দেখা মেলে। দিল্লিতে এই হাভেলিতেই থাকতেন গালিব। নিজামুদ্দিনে গালিবের সমাধিও রয়েছে। কিন্তু মির্জা আসাদউল্লা খান বেগ তথা মির্জা গালিবের জন্ম দিল্লিতে নয়। আগরার কালান মহলে, ১৭৯৭-তে। মুলায়ম সিংহ যাদব যখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে লখনউয়ের গদিতে, তখন ঠিক হয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার গালিবের জন্মস্থান অধিগ্রহণ করবে। সরকারি প্রস্তাব কোথায় ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে কেউ জানে না। এ বছর ২৭ ডিসেম্বর কবির ২২৩তম জন্মবার্ষিকীতে রাজধানীতে গালিব-ভক্তেরা হা-হুতাশ করলেন, গালিবের জন্মস্থান নিয়ে এখন আর কেউ কথা পর্যন্ত বলে না।
পুতুলঘরের ইতিকথা
সেখানে একই ছাদের তলায় দেখা মিলত নরেন্দ্র মোদী থেকে সলমন খান, মাইকেল জ্যাকসন থেকে মধুবালা, বিরাট কোহালি থেকে লেডি গাগা-র। লন্ডনের মাদাম তুসোর মোমের পুতুলের জাদুঘরের যে কোনও দেশের গ্যালারিতে গেলে, আন্তর্জাতিক চরিত্রই বেশি থাকে। শুধু দিল্লিতেই কিন্তু তার বেনিয়ম হয়েছিল। রাজধানীর এই জাদুঘরে মেরিলিন মনরো, নিকোল কিডম্যান, টম ক্রুজ়, ম্যাডোনা, জেনিফার লোপেজ়রা স্বমহিমায় থাকলেও সংখ্যাধিক্য ছিল অমিতাভ বচ্চন, রাজ কপূর, মিলখা সিংহ, সচিন তেন্ডুলকর, জ়াকির হুসেন, মেরি কম, সোনু নিগম, শ্রেয়া ঘোষাল প্রমুখ ভারতীয় চরিত্রের। ২০১৭-র শীতের সময় দিল্লিতে মাদাম তুসো দরজা খুলেছিল। কিন্তু লকডাউনের পরে লোকসান সামলাতে না পেরে কনট প্লেসের রিগাল সিনেমা ভবনে চালু হওয়া জাদুঘর এ বার পাট গোটাচ্ছে। ঘোষণা হয়েছিল, ১ কোটি ইউরো লগ্নি হবে। কিন্তু লোকসান সামলাতে না পেরে ১২০টি মোমের পুতুল এ বার বাক্সবন্দি হয়ে ভারত ছাড়ার অপেক্ষায়।
অ্যান্টনির পুত্রভাগ্য
করিতকর্মা: অনিল কে অ্যান্টনি
কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস ও তাঁর জন্মদিন পালিত হয় একই দিনে। ২৮ ডিসেম্বর কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে কংগ্রেস নেতা এ কে অ্যান্টনি আশিতে পা দিলেন। এ বার সনিয়া গাঁধীর অনুপস্থিতিতে তিনিই দলের পতাকা উত্তোলন করলেন। কেরলের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী, মনমোহন সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চিরকালই গাঁধী পরিবারের আস্থাভাজন বলে পরিচিত। এখনই রাহুল গাঁধী সভাপতি হতে রাজি না হলে কে সেই দায়িত্ব সামলাবেন, সেই জল্পনায় এ কে অ্যান্টনির নামও রয়েছে। তবে, নিন্দুকেরা বলেন, এখনও অ্যান্টনির প্রতি গাঁধী পরিবারের আস্থার কারণ হল অ্যান্টনি-পুত্র অনিল কে অ্যান্টনি। তিনি কংগ্রেসের ডিজিটাল মিডিয়া সেলে রয়েছেন। কেরলের ওয়েনাডের সাংসদ হিসেবে রাহুল গাঁধীর যে আলাদা টুইটার অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যেখানে রাহুলের বিবৃতি থেকে ওয়েনাডের কাজকর্ম মালয়ালমে ফলাও করে প্রচার হয়, ডিজিটাল-বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি-পুত্রই সেই টুইটার অ্যাকাউন্ট সামলান!
আদালত ও দুই বাঙালি
সুপ্রিম কোর্টের শীতকালীন ছুটি। অবকাশকালীন বেঞ্চে দুই বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনিরুদ্ধ বসু। শুনানি চলছে ভিডিয়ো কনফারেন্সে। তার মধ্যেই শোনা গেল, বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য জনকে বলছেন, “এ সব কী? ভেকেশন বেঞ্চ কেন? আমাদের কিছু করার নেই।” কলকাতার লোরেটো-প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীর কথা শুনে সেন্ট লরেন্স-সেন্ট জ়েভিয়ার্সের প্রাক্তনী বিচারপতি বসুর জবাব, ‘‘ঠিক।’’ সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে দুই বঙ্গসন্তানের বাংলায় কথাবার্তা শোনা গেল ভিডিয়ো কনফারেন্সের সুবাদেই। সামনেই মাইক্রোফোন রয়েছে বলে।