Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: নিজের ঘাড়েই সব দোষ নিচ্ছেন নেহরু?

সংসদে সংবিধানের ৭৫ বছরের যাত্রা নিয়ে আলোচনাতেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংবিধানে প্রথম সংশোধনের জন্য ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে দুষেছেন।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী, অনমিত্র সেনগুপ্ত, অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:১৯
Share:

কে না জানে, সব দোষই জওহরলাল নেহরুর। সংসদে সংবিধানের ৭৫ বছরের যাত্রা নিয়ে আলোচনাতেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংবিধানে প্রথম সংশোধনের জন্য ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে দুষেছেন। এত দিন নেহরু কিছুই বলেননি, কিন্তু এখন কৃত্রিম মেধার জোরে ‘প্রত্যাবর্তন’ ঘটেছে তাঁর। সমাজমাধ্যম ‘এক্স’-এ রসিকতা করে এক ‘প্রাক্তন’ বিজেপি সমর্থক নেহরুর নামে এক প্যারোডি অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। ‘নেহরু’ সেখানে মোদীর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগের দায় নিজেই মাথা পেতে নিজের উপর নিয়ে নিচ্ছেন। তা সে বুলেট ট্রেন চালু করতে না পারা হোক বা পপকর্নে তিন রকম হারে জিএসটি চাপানো। অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তিরও নিজের দিকে টেনেছেন ‘নেহরু’। জনপ্রিয়তায় মোদীর সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে নেহরুর ‘এআই’ অবতার।

Advertisement

কাল্পনিক:কৃত্রিম মেধা সৃষ্ট ছবিতে জওহরলাল নেহরু ও নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এক্স

চোখে জল কেন

গত শীতকালীন অধিবেশনের সবচেয়ে বিতর্কিত বিল ছিল এক দেশ এক ভোট। বিল পেশ বিতর্কে বলার কথা ছিল বিরোধী সাংসদদের। হঠাৎই বিলের পক্ষে বলতে শুরু করেন শিবসেনা নেতা শ্রীকান্ত শিন্দে। মহারাষ্ট্রের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্দের ছেলেকে বিলের পক্ষে বলতে দেখে তির্যক মন্তব্য করেন কয়েক হাত দূরে বসা তৃণমূলের সৌগত রায়। সে সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে তরজা চললেও, অধিবেশন মুলতুবি হলে দেখা যায় সৌগতের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলছেন শ্রীকান্ত। জানা যায়, সৌগতের তির্যক মন্তব্য শুনে রীতিমতো কেঁদে ফেলেছিলেন শ্রীকান্ত। তিনি সৌগতকে বলেন, “আপনাকে বাবার মতো দেখি। আপনার তির্যক মন্তব্য শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি।” তরুণ সাংসদের স্বীকারোক্তিতে অস্বস্তিতে সৌগতও। বুঝিয়ে বলেন, রাজনৈতিক জীবনে এমন অনেক আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়।

Advertisement

সোনার কেল্লায়

সোনার কেল্লা-খ্যাত জয়সলমেরে বসেছিল জিএসটি পরিষদের বৈঠক। কলকাতা থেকে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি অভিভূত, কারণ জয়সলমেরের কেল্লাকে সবাই বাঙালিদের মতো সোনার কেল্লা বলেই ডাকছেন। পর্যটন মানচিত্রে জয়সলমেরের ঠাঁই হওয়ার কৃতিত্বও সবাই সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লাকেই দেন। জিএসটি পরিষদে চন্দ্রিমা তাই সত্যজিৎকে শ্রদ্ধা জানিয়েই বক্তৃতা শুরু করেছিলেন। বৈঠকের পরে অর্থমন্ত্রীদের রাতের মরুভূমির বালিয়াড়ি দেখানোর ব্যবস্থাও ছিল। এই বৈঠক ডাকার পরিকল্পনা ছিল এত দিনের রাজস্ব সচিব সঞ্জয় মলহোত্রের। তিনি রাজস্থান ক্যাডারের আইএএস। কিন্তু জয়সলমেরের বৈঠক হওয়ার আগেই তাঁকে মুম্বই চলে যেতে হল। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নরের পদে।

চা ও টা

নতুন বছরের প্রথম দিনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে নতুন ঘোষণা করলেন মোদী সরকারের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানাতে প্রতি সপ্তাহেই সাংবাদিক সম্মেলন হয়। বলা হল, সম্মেলনের শেষে এক-এক দিন এক-এক রাজ্যের জলখাবার থাকবে। প্রথম দিন শুরু বিহারের লিট্টি-চোখায়। নিন্দুকেরা বলছেন, সবই বিজেপির সাংসদ কমে শরিক নির্ভর হয়ে পড়ার ফল। গত দশ বছরে মন্ত্রিসভার পরে সাংবাদিক বৈঠকে চা দূরস্থান, পানীয় জলও দূর অস্ত্ ছিল। এখন চায়ের সঙ্গে নিত্যনতুন জলখাবার। কালের নিয়মে কী না হয়!

ক্যান্টিনের আড্ডা

নরেন্দ্র মোদী মাঝে-মাঝে নতুন সংসদ ভবনের ক্যান্টিনে ঢুঁ মারেন। পুরনো ভবনের ক্যান্টিনেও গিয়েছেন। নতুন বছরের প্রথম দিনে সংসদের অ্যানেক্স ভবনের ক্যান্টিনে স্ত্রী, দুই পুত্রকে নিয়ে হাজির কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। দু’দশক আগে তিনি প্রায়ই ওই ক্যান্টিনে যেতেন। কার্তিকেয় ও কুণাল তখন ছোট। এ বার নাকি ছেলেরাই ক্যান্টিনে খেতে চেয়েছে। খেলেন, রাঁধুনি ও কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে ছবিও তুললেন।

ভোজ: সপরিবার শিবরাজ সিংহ চৌহান

মন্দিরে মন্দিরে

বর্ষবরণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ধুম লেগেছে মন্দির দর্শনের। গোটা বছরের মালিন্য ক্লেদ ধুয়ে বছর শুরুর এই প্রয়াস হিন্দুত্ববাদী দলের মন্ত্রীদের। কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান সপরিবার গিয়েছিলেন তিরুপতি বালাজি মন্দিরে। পশুকল্যাণ মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংহ যান বারাণসীতে, জৈব গ্যাস কারখানা পরিদর্শনে। কাজ সেরে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। তাঁরই প্রতিমন্ত্রী এসপি সিংহ বাঘেল গিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের শ্রী পীতাম্বরা পীঠ এবং ওরছার রামরাজা মন্দিরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement