রবীন্দ্র-নৃত্যনাট্য/ একটি নারীবাদী পাঠ
শেফালী মৈত্র
২৭৫.০০, এবং মুশায়েরা
বাঙালির জীবনে নাচের যে সে ভাবে কোনও জায়গা নেই, নাচ যে কখনওই বাঙালির জীবনে স্বাভাবিক অঙ্গ হয়ে ওঠেনি, তা রবীন্দ্রনাথ জানতেন বলেই তাঁর ভাবনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে নৃত্য। তাঁর সময়ে মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে স্ত্রী-পুরুষের মিলিত নৃত্য অভাবনীয় তো ছিলই, কোনও কারণে এও মনে করা হত যে, নাচের সঙ্গে চরিত্রস্খলনের সম্পর্ক আছে। অথচ ভারতের বহু প্রদেশেই বিবাহ, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বা যে কোনও আনন্দোৎসবে স্বতঃস্ফূর্ত নাচের প্রচলন আছে, সেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সের মানুষ কোনও তালিম ছাড়াই অংশগ্রহণ করেন। হয়তো সে জন্যেই শান্তিনিকেতনে নানা দেশের নাচ শেখানোর ব্যবস্থা করেছিলেন কবি, এক দিকে সেখানে যেমন নৃত্যশিক্ষক নিযুক্ত করে তাঁদের দেশবিদেশে পাঠাতেন নৃত্যবিদ্যা আয়ত্ত করার জন্যে, তেমনই অন্য দিকে পৃথিবীর বিখ্যাত নৃত্যশিল্পীদের শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসতেন নাচ শেখানোর জন্যে। তবু ‘‘শান্তিনিকেতনেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গানের সঙ্গে নাচকে স্থান দিতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে প্রবল বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। নৃত্যকলা যে একটি উচ্চাঙ্গের কলা সেকথা আশ্রমবাসীদের বারবার বোঝাতে হয়েছিল।... শান্তিনিকেতনের প্রথম দুই দশকের শিক্ষক-সমাজের অধিকাংশই নৃত্যকলাকে পাঠ্যক্রমে সম্মানজনক স্থান দিতে প্রস্তুত ছিলেন না।’’ জানিয়েছেন শেফালী মৈত্র তাঁর বইটির প্রথম অধ্যায় ‘নৃত্য’-তে। তিনি মনেই করেন ‘‘রবীন্দ্র-নৃত্যনাট্যে নারীচরিত্র বিষয়ে চর্চা করতে গেলে নাচ নিয়ে তাঁর যে বিশেষ ভাবনা, তার পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন।’’ সঙ্গে এও খেয়াল করিয়ে দিয়েছেন ‘‘মেয়েদের শালীন আঙ্গিকে মঞ্চে উপস্থিত করে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে তিনি যে মুক্তি ঘটালেন সেকথাও মনে রাখা প্রয়োজন।’’ বইটির বাকি চারটি অধ্যায় ক্রমান্বয়ে: শাপমোচন, চিত্রাঙ্গদা, চণ্ডালিকা, শ্যামা। জীবনের শেষ ক’বছরে নৃত্যনাট্যগুলির নারীচরিত্র নিয়ে কবি তাঁর বিশেষ ভাবনা দর্শককে উপলব্ধি করাতে চাইছিলেন— এই সূত্রেই লেখিকা জানিয়েছেন তাঁর গ্রন্থনির্মাণের অভিপ্রায়: ‘‘নৃত্যনাট্যগুলির মধ্যে একাধিক দার্শনিক প্রশ্ন, নৈতিক প্রশ্ন, সামাজিক প্রশ্ন ও অস্তিত্বের সংকটকে ঘিরে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। নাটকগুলিতে নারীর জীবনের সমস্যা প্রাধান্য পেয়েছে বলেই নারীবাদী পাঠের অধিকতর প্রয়োজন।’’ আসলে নারীর ইচ্ছা ও বাসনাকে উচিত-অনুচিতের বাঁধা সড়কে চালিত করার চেষ্টা করে পিতৃতন্ত্র, ‘‘এর বাইরে একটা কাঙ্ক্ষিত বিকল্প যে থাকতে পারে সে বোধ অনেক ক্ষেত্রে নারীর থাকে না। বিকল্প-বোধ যদি-বা থাকে তার মূল্যায়ন একটি কঠিন সমস্যা। আবার এমনও দেখা যায় বিকল্পটিকে রূপ দেওয়ার ভাষা বা সক্ষমতা নারীর নেই।’’ এ-মন্তব্যের অব্যবহিতেই এ-নিয়ে নিজের অভিমত স্পষ্ট করেছেন শেফালী মৈত্র: ‘‘সমস্যাটি ঘুরে-ফিরে নানা চেহারা নিয়ে নৃত্যনাট্যে নারী চরিত্রের সংলাপে প্রকাশ পেয়েছে। আবার কখনো তা অনুচ্চার থেকে গেছে। একমাত্র রচনার নিবিড় পাঠে সমস্যাটি ধরা পড়ে।’’
মেঘনা পারের দিনগুলি
রূপা সেনগুপ্ত
১৫০.০০, গাঙচিল
পূর্ববঙ্গ বা বাংলাদেশ থেকে আসা এক ছিন্নমূল পরিবারের মেয়ে রূপা এই স্মৃতি-আখ্যানের লেখিকা। আদি নিবাস ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ। জাতে বৈশ্য সাহা, সেই অর্থে বর্ণহিন্দু নন। যৌথ পরিবারে মানুষ মেয়েটির চোখে জাদুকরী হলেন তাঁর ঠাকুমা, যিনি বলতেন ‘‘মাইয়া হইল গিয়া বাপের লক্ষ্মী।’’ সেই জাদুকরী ঠাকুমার বাড়ি ছিল নারায়ণগঞ্জের বালাপুর গ্রামে। রূপার এ-বইয়ের একটি অধ্যায়ের নামই ‘বালাপুরের শরৎ’, লিখছেন ‘‘শরৎকাল এলেই যেমন শেফালী ফুলের গন্ধে চারিদিক ভরে যায়... আমি কি ওই চেনা গন্ধ এই পল্লীতেও খুঁজছি? আসলে মন সর্বদা মেঘনার পার ঘেঁষে বৈঠা বায়। বর্ষা এলেই কত শাপলা (শালুক) ফুটে থাকে চারদিকে। তখন তো সবখানেই জল, ধানের জমি, পাটের জমি, গ্রামটা যেন জলের উপর ভাসে, হাসে। শরৎকালে দীঘিতে লাল শাপলা ফুল ফুটত।’’ আরও একটি অধ্যায়েও লিখেছেন রূপা, ‘‘এখানেও আকাশে শরতের আলো, বাতাসে শেফালীর গন্ধ। কী একটা জানি গন্ধ ছিলো বালাপুরের গ্রামে সেটা কেন পাই না আমি, তাই ভেবেই কূল পাই না।’’ নিসর্গের পাশাপাশি উদ্বাস্তু জীবনের বেঁচে থাকার লড়াই আর খুঁটিনাটিও উঠে আসে আখ্যানটিতে, উঠে আসে এপার-ওপার দুই বাংলাই। রূপার এমন আরও একখানি স্মৃতিগ্রন্থ বেরিয়েছে একই প্রকাশনা থেকে: কাটাঘুড়ি ও জাদুকরী/ এক উদ্বাস্তু-পরিবারের গল্পকথা। সেখানে ঠাকুমা থেকে নিজের কথায় এসে পৌঁছেছেন লেখিকা। এক-একটি অধ্যায়ে টুকরো টুকরো আত্মকথন কিংবা স্মৃতি গেঁথে গোটা বইটি সাজিয়েছেন তিনি। পড়তে-পড়তে তাঁদের ও-বাংলা থেকে এ-বাংলায় বহমান জীবনযাপনের হদিশ পাওয়া যায়... পুকুর, কলোনির স্কুল, পুজোর গন্ধ, কলোনির মানুষ, রেডিয়ো ও বিনোদন, বাঙালবাড়ির ঠাকুরঘর, হারিয়ে যাওয়া জলের পাত্রগুলি, বিয়েবাড়ি, বড়দিন, পিকনিক, শীতকাল, খেজুররস, কলোনিপাড়ার বুড়োবুড়ি, পৌষসংক্রান্তি ও কাটাঘুড়ি ইত্যাদি। চিঠিপত্র, পোস্টকার্ড প্রসঙ্গে লিখেছেন যে, এ সবের ওপর ভরসা রেখেই ভিন্ন দু’টি বাংলায় বসে চালানো হত সংসার। আর প্রথম অধ্যায় ‘উদ্বাস্তু সমাচার’-এ রিফিউজি কলোনির মেয়েদের নিয়ে রূপা লিখছেন ‘‘তারা তো থামতে আসেনি। স্কুল ছেড়ে কলেজ, কলেজ ছেড়ে চাকরি। তাদের সামনে খোলা আকাশ... বিদ্যে আগে বিয়ে তো পরে/ কালি কলম আঁকড়ে ধরে,/ স্কুল কলেজে যাবই যাব/ নুন পান্তা না হয় খাব,/ হলদে তাঁতেই এই দ্যাখোনা পৌঁছে যাব অনেক দূরে।’’
নতুন প্রেমের কবিতা
সুবোধ সরকার
২৫০.০০, সিগনেট প্রেস
নতুন প্রেমের কবিতা সুবোধ সরকারের নবীন কাব্যগ্রন্থ। তবে কি কবি নতুন প্রেমে পড়েছেন? ‘প্রেমের নতুন কবিতা’— এমনও নামকরণ তিনি করতেই পারতেন। বইটা ভাগ করা হয়েছে তিন ভাগে। প্রত্যেকটির স্বতন্ত্র নাম। যেমন— ‘সোনা লাগে না, হিরে লাগে না, লাগে একটা দিল’। ‘তিমির ফেরেনি’। ‘আমার ভালবাসার কোনও তারিখ নেই।’। এই ‘ত্রয়ী’-তে কবিতায় সমাকীর্ণ এই বই।
‘তিমির ফেরেনি’— এই গুচ্ছের অংশটি যেন সত্তর দশকের কথা মনে করায়। সুবোধ তো সত্তরেরই কবি। এ অংশের কবিতাগুলো মূলত চার লাইনের। তিন লাইনের পরে শূন্যতা, পরে আর একটা লাইন। ৫০ এবং ৫১ পাতায় ‘ফেরা’ আর ‘মৃত’ যে কোনও কবিতার পাঠককে অস্বস্তিতে ফেলবে। সুবোধ লিখেছেন, ‘বিপ্লব যেখানে ছিল সেখানেই সে যে মৃত, রয়েছে দাঁড়িয়ে... আমরা পাঠক কিন্তু মৃতকেই বেশি ভালবাসি।’ অথবা, ‘ভালবাসা যদি পাপ হয় এসো আজ পাপ করি/ ভালবাসা যদি বিষ হয়/ এসো নীল আমার শরীরে’— এ যেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি-র গান। যখন তিনি ভোলা ময়রাকে জিজ্ঞেস করছেন সমুদ্র-মন্থন কালে বিষপানে যখন গোটা গলা জ্বলে যাচ্ছে তখন দুর্গাকেই ‘মা’ বলে ডেকে উদ্ধার পেতে চেয়েছিলেন। তাই কি! অবশ্য কবিতা সব সময় ‘আমার চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ চুনী উঠল রাঙা হয়ে’। অর্থাৎ, পাঠক যে ভাবে নেবেন তাঁর কাছে তাই। ৫২ পাতার কবিতাটা যেন প্রতিদিনকার খবরের কাগজের সংবাদ। বিষ্ণু দে যাকে বলেছিলেন ‘সংবাদ মূলত কাব্য’। ‘সাফল্যের গাড়ি থেকে নামল হতাশা/ হতাশার বয়েস উনিশ।/ সাফল্যের কুড়ি/ দীঘির দু’পারে ভিড়। কার লাশ জলে নেমে খুঁজছে ডুবুরি?’ কবিতার নাম ‘ডুবুরি’। প্রশ্ন হল এর পরে যখন সুবোধ প্রশ্ন তোলেন, ‘শেষ কথা’ কবিতায়— ‘তোমার পিঠ ধানের খেত/ সেটাই আজ ইন্টারনেট।’ কবি তো নিজে ইদানীং ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়া বিরোধী। কেন তিনি ধানের খেতের সঙ্গে ইন্টারনেটের মিল দেবেন! সে কি শুধু ছন্দমিলের জন্য? ৯০ পাতাতেই তিনি আবার জানাচ্ছেন— ‘সোনা দানা ছুরি কাঁচি এ সবই ব্যর্থ’। আসল হল— ‘ভালোবাসা ছাড়া আর সবকিছু ধুলো।’ এ অংশের নাম ‘আমার ভালবাসার কোনও তারিখ নেই।’ ‘সোনা লাগে না, হিরে লাগে না, লাগে একটা দিল’— এ অংশেই ১৬ নম্বর কবিতায় তিনি বলছেন (আসলে লিখছেন), ‘চোখে তোমার এতটা মদ, ঠোঁটেও এত গান/ পাত্র ভেঙে গেছে আমার কী করে করি পান?’— এ কি তবে ‘পাত্রখানা যায় যদি যাক ভেঙেচুরে’-র আধুনিক-প্রস্তাব! ৩৪ আর ৩৬ পাতায় সুবোধ বলছেন— কবিতা সংখ্যা ২২— ‘দিন ফুরোল রাত্রি হল/ এবার তুমি জানলা খোলো/ দাও। দু’মুঠো দাও।’ অন্য দিকে ‘খালি বাড়িতে কলঙ্ককে ডাকি/ দিনের বেলা দু’মুঠো আর রাত্রে দুটো রুটি।’
১৯৮০-তে প্রকাশিত ‘কবিতা ৭৮-৮০’ থেকে শুরু করে ‘নতুন প্রেমের কবিতা’-য় সর্বত্র সুবোধের কবিতার গায়ের অলঙ্কার খুলে ফেলার ডাক। তাঁর নতুন প্রেমের কবিতা-নতুন-কিন্তু ‘নরম’ নয়। শেষে বলতে হয় ‘ষাট বছরে যা পেলাম’ কবিতাটির কথা। যার শেষ ৪টি লাইন— ‘আর পেয়েছি গরম ভাত/ লঙ্কা পাশে নুন (শূন্যতা) আর কী লাগে বাঁচতে হলে/ আপনারাই বলুন?’— সামান্য আয়োজনের কবিতা। কিন্তু বেঁচে থাকার প্রয়োজনে ধরা দেয় অসামান্য ভাবে।
বুবুলটি উড়ে যাও
জয় গোস্বামী
১৫০.০০, সপ্তর্ষি প্রকাশন
বুবুলটি উড়ে যাও ৬৮ পৃষ্ঠার উপন্যাস। জয় জানাচ্ছেন, তা ২০০৭-এ কোনও একটি পুজোসংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এত দিন পরে সে উপন্যাসের গ্রন্থ-চেহারা দেখা দিল। বুবুলটি উড়ে যাও খানিকটা স্বগতোক্তি আর খানিকটা যাকে বলে ‘ডায়লগ’। এই-ই তো। টানা পাঠ করে যাওয়া যায়। কোথাও কোনও থামাথামি নেই। তবে উপন্যাসটি পড়তে পড়তে প্রশ্ন জাগে— এর পাতায় পাতায় এত বিচ্ছেদের কথা কেন? বারংবার এত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াই বা কেন! আর সম্পর্ক ভেঙে যাওয়াই বা কেন?— ‘সেই দিনটার জন্য আমি এখন বসে আছি। তুমি কবে ছেড়ে যাবে আমাকে। যে কোনও দিনই হতে পারে সেটা, যে কোনও বিকেলবেলা বলবে আর কখনও আসব না।’ ক্রমাগত ‘না’ বলে চলা এ ঔপন্যাসিক।
জাক কেরুয়াক গত শতকের ষাটের দশকের প্রথম দিকে আড্ডা মারতে মারতে এক বার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে বলেছিলেন, একেবারে ঘটনার মাঝখান থেকে কিংবা ঠিক গতকাল যে কোনও ঘটনার সময় থেকে তুমি উপন্যাস শুরু করতে পারো। এই প্রসঙ্গ টানার কারণ— উপরের যে চারটি লাইনের উল্লেখ করা হয়েছে, সেখান থেকেই এই উপন্যাসের শুরু। ধরতে গেলে এ যেন ঘটনার মাঝখান থেকেই শুরু ঘটনার ঘনঘটা।
‘...আমি ‘বুবুলটি উড়ে যাও’ বলে দু’হাতে তোমাকে ঘরে উড়িয়ে দিই আর তুমি কী যেন একটা বনের ভিতর দিয়ে দুপুর ভেদ করে উড়ে যেতে থাকো, সেদিন তোমার দু’ডানা হলুদ রঙে ছোপানো, একটার পর একটা গাছ পেরিয়ে উড়ে চলেছ তুমি, আর ভরদুপুরের গাছগাছালির ছায়ার ভিতর রোদের জাফরি তোমার ডানায় লাগছে,’— এই আশ্চর্য সুন্দর ‘শুরুয়াৎ’ এই উপন্যাসের। শুরুর চার নম্বর স্তবক থেকেই জানান পাওয়া যায় যে, এ উপন্যাস কী কথা বলবে। যেখানে বলা হচ্ছে— ‘নীরব প্রেম ও মুখ ফুটে বলতে না পারার দিন শেষ হয়ে গিয়েছে বহুকাল, আমি জানি।’ আর শেষটা এমনই হয়— ‘তোমার দু’ডানা ধরে— বুবুলটি উড়ে যাও বলে, আমি তো মনে মনে তোমাকে উড়িয়ে দিয়েইছি।’ এ যেন উপন্যাসের সমান্তরালে চলা এক কবিতা। প্রৌঢ়-সংসারী-খ্যাতিসম্পন্ন এক কবির বারংবার প্রেমে পড়া আর সে সব নিয়েই উপন্যাস। ঝাঁকুনিবিহীন।