—প্রতীকী চিত্র।
গত বছর শেষ হওয়ার সময় বাজারে মোটামুটি সবাই একমত ছিলেন যে চলতি বছরে নিফটি ৫০ সূচক ২১ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। বাজার নিরাশ করেনি। এই লেখা লেখার সময় নিফটি ২১ হাজার ছাড়িয়ে আরও উপরের দিকে উঠতে চাইছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী বছরের বিনিয়োগের ভাবনাটা কী রকম হওয়া উচিত?
চলতি বছরের মতো আগামী বছরে অবশ্য বাজারের বৃদ্ধির হারের সম্ভাবনা নিয়ে একটা সংশয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। গত বছর যেমন মোটামুটি সবাই ধরেই নিয়েছিলেন যে নিফটি ২১ হাজারের কাছাকাছি যাবেই। কিন্তু ২০২৪ সালের জন্য ভাবনাটা কিন্তু একটু অন্যরকম। নিফটির দৌড় থামবে বলে মনে করার জায়গা তৈরি না হলেও, বাজারের যে জোশ ২০২৩ দেখল, তা ২০২৪ সালেও দেখা যাবে বলে মনে হচ্ছে না।
চলতি বছরে নিফটি ১৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে। সেনসেক্স বেড়েছে ১৭ শতাংশের একটু বেশি। ২০২৪ সালে এই বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশের নীচে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আসলে নানান কারণেই ২০২৪ নিয়ে কোনও সংশয়হীন প্রক্ষেপ করতে বাজারের একটা বড় অংশই রাজি নয়। সোনার দামের বিষয়টাই ধরা যাক। বাজারে অনেকেই মনে করছেন বিশ্ববাজারে সোনার দাম ২০২৪ সালে পড়বে। ট্রয় আউন্স পিছু ২০০০ আমেরিকান ডলারে এখন ঘোরাফেরা করলেও সামনের বছর তা ১৬৫০ থেকে ১৮৫০ ডলারে নামবে। আবার অন্য দলের ধারণা, সোনার দামের চরিত্র এ রকমই থাকবে। প্রসঙ্গত এক ট্রয় আউন্স মানে ৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম।
যাঁরা বলছেন সোনার দামের চরিত্র এ রকই থাকবে, অর্থাৎ এই রকম ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নিয়েই আগামী বছর কাটবে তাঁরা মাথায় রাখছেন বিশ্ব জুড়ে বাড়তে থাকা হিংসাকে। তাঁদের ধারণা পশ্চিম এশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আরও সঙ্কটময় হয়ে উঠবে। আর এর প্রভাব বাজার এড়াতে পারবে না।
আর সেই যে বিশ্ব বাণিজ্যের রথের চাকা কোভিডে ঠেকে গিয়েছিল, তার পর থেকে সেই রথ আর দৌড়তেই চাইছে না। বিশ্বের গড় উৎপাদনের তুলনায় বাণিজ্যের অনুপাত যেন বৃদ্ধি করতেই চাইছে না। বিশ্ব বাণিজ্যে ভারতের অধিকার মাত্র দুই শতাংশ। তারও খুব একটা নড়চড় হচ্ছে না। তাই ভারতের বাজারই ভারতের অর্থনীতির মূল ভরসা। তবে এটাও ঠিক, ১৩০ কোটির উপর জনসংখ্যা যে বাজার তৈরি করে তার টানও কম নয়। আর সেই টান তীব্র বলেই কোভিডের পরে ঘুরে দাঁড়াতে অন্য অনেক দেশের নাভিশ্বাস উঠে গেলেও ভারতের পক্ষে কাজটা তুলনামূলক ভাবে অনেক সহজ হয়েছে।
বিশ্ব বাজারের অনিশ্চয়তার পরিপ্রক্ষিতে তাই মনে করা হচ্ছে যে, ভারতে অর্থনীতিকে নিজের বাজারের উপরই মূলত নির্ভরশীল থেকে ২০২৪ কাটাতে হবে।
আর তাই যদি হয়, তা হলে বিনিয়োগের জন্য এগোতে হবে একটু সাবধানে। বড় সংস্থাগুলোকেই তাই বিনিয়োগের প্রধান বাজি ধরে এগোতে হবে। লার্জ ক্যাপ এবং মিড ক্যাপই তাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের মূল স্তম্ভ করে তোলাই ভাল। আর তার পরেই বোধহয় স্মল ক্যাপে বাজি ধরা উচিত আগামী দিনের জন্য।