—প্রতীকী চিত্র।
বিজেপির ইস্তাহারে লেখা ছিল ২০ হাজার কোটি টাকার ‘সিড স্টার্ট-আপ ফান্ড’-এর কথা। যে তহবিল থেকে নতুন ব্যবসাকে প্রাথমিক পুঁজি জোগানো হয়। অথচ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গত জুলাইয়ের বাজেটে এ নিয়ে একটি শব্দও খরচ না-করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল দেশের স্টার্ট আপ মহল। ছ’মাস আগের সেই ক্ষতে প্রলেপ দিল ২০২০-২১ সালের বাজেট। নতুন উদ্যোগপতিদের জন্য নির্মলার একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিতে জায়গা পেল প্রাথমিক পুঁজির ওই বন্দোবস্ত। কর্মীদের জন্য বরাদ্দ শেয়ারের (ইসপ) উপর পাঁচ বছরের কর ছাড় এল। মকুব হল ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসায় ১০০% করও।
এই মুহূর্তে তলানিতে ঠেকা বৃদ্ধির হার নিয়ে নাস্তানাবুদ কেন্দ্র। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে কর্মসংস্থানের কঙ্কালসার চেহারাটা ফুটে উঠছে বারবার। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিজেপির বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতায় জিতে আসার জেল্লাকে ম্লান করেছে দেশের আর্থিক ছবিটা। এই পরিস্থিতিতে এ দিন বাজেট বক্তৃতায় নির্মলা স্টার্ট-আপগুলিকে ‘বৃদ্ধির ইঞ্জিন’ তকমা দিয়েছেন। বলেছেন,‘‘তাদের উৎসাহ দিতেই করের বোঝা ছাঁটার এই সিদ্ধান্ত।’’ বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। তাই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট আপ মহলের হাত ধরে চাকরির সুযোগ তৈরির পথে এই পদক্ষেপ না-করে উপায় ছিল না। কর্মসংস্থানের ঘাটতি অন্তত কিছুটা যদি মেটানো যায়। ইন্ডিয়ান এঞ্জেল নেটওয়ার্কের প্রধান সৌরভ শ্রীবাস্তবের দাবি, কর ছাড় ও পুঁজির সুবিধা উৎসাহ জোগাবে নতুন উদ্যোগপতিদের।
শুধু কর ছাড় নয়। এ দিন ব্যবসার গোড়াপত্তনের জন্যেও এক জানালা ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছেন নির্মলা। লগ্নির পথ মসৃণ করতে রাজ্য স্তরে তহবিলের টাকা ছাড়া থেকে শুরু করে জমি ব্যাঙ্কের তথ্য, নিয়মকানুনের খোঁজ দিতে তৈরি হচ্ছে ‘ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স সেল’। স্টার্ট-আপ সংস্থার কর্তা অভিষেক রুংতার দাবি, এ ধরনের কেন্দ্র বাস্তবায়িত হলে লালফিতের ফাঁসে অযথা সময় নষ্ট হবে না।
২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় প্রকল্প হিসেবে ঘোষিত হয় ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’। নতুন উদ্যোগ বা স্টার্ট-আপের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল আনা হয়। লক্ষ্য ছিল, ২০২০ সালের মধ্যে এই সব নতুন সংস্থায় ১৮ লক্ষ কর্মসংস্থান। সরকারি তথ্য বলছে, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রোমোশনের (ডিআইপিপি) নথিভুক্ত নতুন উদ্যোগের সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (সিডবি) থেকে এখনও পর্যন্ত টাকা পেয়েছে ২৬৪টি সংস্থা।