প্রতীকী ছবি।
গত বছর লকডাউনে কাজ হারিয়ে দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের রাজ্যে ফেরার ছবি দেখেছিল সারা দেশ। এক বছর পেরিয়ে যখন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখন সেই এপ্রিলেই ভারতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। দৈনিক সংক্রমণ চার লক্ষের কাছাকাছি। নতুন করে কড়াকড়ি চাপছে আর্থিক কর্মকাণ্ডে। ফলে আশঙ্কা বাড়ছে চাকরির বাজার নিয়েও। পরিস্থিতি ২০২০ সালের চেয়ে অনেকটা ভাল জানিয়েও উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা বলছে, এপ্রিলে বেকারত্বের হার পৌঁছে গিয়েছে চার মাসের সর্বোচ্চ অঙ্কে (৭.৯৭%)। শুধু তা-ই নয়, গত মাসে দেশে মার্চের তুলনায় কাজ হারিয়েছেন ৭৫ লক্ষ কর্মী।
সারা দেশেই যখন বিভিন্ন রাজ্যে আংশিক লকডাউন করতে হচ্ছে, সেখানে আগামী কয়েক মাসে বেকারত্বের ছবিটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। তাঁদের সঙ্গে একমত সিএমআইই-র এমডি-সিইও মহেশ ব্যাসও। শহরে ইতিমধ্যেই এপ্রিলে বেকারত্বের হার ছুঁয়েছে ৯.৭৮%। গ্রামে ৭.১৩%। ব্যাসের কথায়, এই অবস্থায় আগামী দিনগুলিতে চাকরির বাজার যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার সম্ভাবনা। এ ক্ষেত্রে এক দিকে যেমন বেকারত্ব মাথাচাড়া দিতে পারে, তেমনই অন্য দিকে কাজ খোঁজার জন্য চাকরির বাজারে আসতে পারেন আরও কম সংখ্যক মানুষ। অথবা ঘটতে পারে দুটোই। সেটাই সব চেয়ে বড় চিন্তার বলে জানাচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, লকডাউনের সময় বহু লোকের চাকরি যেমন গিয়েছিল, তেমনই অনেকে চাকরির আশা নেই বুঝে এবং সংক্রমণের ভয়ে নিজেই সেই বাজার থেকে সরে ঘরে বসেছিলেন। ফলে বেকারত্বের হার সেই সময়ে ২৪ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। এখন অবস্থা ততটা খারাপ নয় ঠিকই, কিন্তু আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধের প্রভাব যে চাকরির বাজারে পড়ছে তা বলা বাহুল্য বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
চিন্তা বাড়াচ্ছে উৎপাদন শিল্পের গতি শ্লথ হওয়াও। সোমবারই আইএইচএস মার্কিটের সমীক্ষা জানাচ্ছে, বরাত কম পাওয়া এবং চাহিদা কমার হাত ধরে এপ্রিলে এই শিল্প যেমন ধাক্কা খেয়েছে, তেমনই এই ক্ষেত্রে কাজও কমেছে টানা ১৩ মাস। সেই কমার হার অবশ্য গত মাসে কম, তবে সেটাও যে আগামী দিনে বাড়বে না, তা নিশ্চিত করে বলার অবস্থায় নেই কেউই। এই পরিস্থিতিতে নজর রেখে চলার পক্ষেই মত দিচ্ছেন তাঁরা।