—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এক দিকে খুচরো বাজারে বিক্রিবাটা ছন্দে ফেরার আশা। তার হাত ধরে নতুন বছরে ১০-১৩ শতাংশ ব্যবসা বৃদ্ধির সম্ভাবনা। অন্য দিকে চাহিদায় চড়া মূল্যবৃদ্ধি আর বেকারত্বের ধাক্কা লাগার আশঙ্কা। যা মানুষের পকেটে চাপ বাড়িয়ে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে কেনাকাটার রাস্তায়। উপদেষ্টা সংস্থার কর্তাদের দাবি, তাই দেশ ‘পরিবর্তনের পথে’ পা বাড়ালেও ২০২৪ রয়েছে এই দ্বন্দ্বের জাঁতাকলেই।
তাঁরা বলছেন, প্রথমে অতিমারি এবং তার পরে মূল্যবৃদ্ধি খুচরো ব্যবসাকে শ্লথ করেছিল। বহু মানুষের হাতে কাজকর্ম না থাকা পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে। এই অবস্থায় গত বছর মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা মাথা নামানোয় ফের বিক্রি বাড়ছে। অনলাইনেও ছড়াচ্ছে ব্যবসা। অপেক্ষাকৃত ছোট শহর বা মফস্সলে আকর্ষণ বাড়ছে তুলনায় দামি ব্র্যান্ডের পণ্যের। নেট মারফত চটজলদি পরিষেবায় খাবার-সহ নানা পণ্যের কেনাকাটার গতিও বাড়ছে। যা কার্যত ‘পরিবর্তন’। এমন পোক্ত ভিতে পা রেখে ২০২৪ ভাল কাটারই কথা খুচরো সংস্থাগুলির। আর্নস্ট ইয়ং-এর কর্তা অংশুমান ভট্টাচার্যের মতে, গোটা বিশ্বে ভারতের খুচরো ব্যবসা অন্যতম দ্রুত গতির বৃদ্ধি দেখবে। রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া-র সিইও কুমার রাজাগোপালের বক্তব্য, আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিতে আমজনতার হাতে নগদের জোগান বেড়ে যাওয়ার আশা। যা কেনাকাটা বাড়াতে পারে। কৃত্রিম মেধার মতো আধুনিক প্রযুক্তির বিপণন ও চাহিদা ইন্ধন জোগাবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। ইক্রার ভিপি সাক্ষী সুনেজার ধারণা, খুচরো বিক্রির ১৩% বার্ষিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা। যার পিছনে রয়েছে ২০২৩-এই চড়া মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা কাটিয়ে উৎসব ও বিয়ের মরসুমের বিক্রি।
কিন্তু এই সমস্ত আশার পথে চুপিসাড়ে আশঙ্কার হানা দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যে কারণে ডেলয়েট ইন্ডিয়ার পার্টনার রজত ওয়াহি জানিয়েছেন আশা-আশঙ্কা মিলিয়ে মিশ্র পরিবেশের কথা। সতর্ক করেছেন, মূল্যবৃদ্ধির ধারাবাহিক চাপ, জোগান-শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটা এবং ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় গ্রাহকের আস্থায় চিড় ধরার সমস্যা সম্পর্কে। এর প্রতিটিই বিক্রি কমিয়ে দিতে পারে। ধাক্কা খেতে পারে খরচের প্রবণতা। বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ আবার মনে করছেন, মূল্যবৃদ্ধির চড়ার মতো কাজ হারালে বা না পেলেও সংশ্লিষ্ট সকলের হাতে কেনাকাটা করার জন্য যথেষ্ট টাকাপয়সা থাকবে না। যা খুচরো ব্যবসায় বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
রোজকার জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মুদি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি বহাল থাকবে বলে মনে করছেন কেপিএমজি-র পার্টনার পুনীত মনসুখানি। তাই বিক্রেতাদের বিপণনে উদ্ভাবনী ভাবনার উপর জোর দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
সব মিলিয়ে নতুন বছরে পাল্লা কোন দিকে ঝোঁকে, সেটাই দেখার।