— ফাইল চিত্র
চলতি বছরের গোড়ায় লেগেছিল করোনার প্রথম ধাক্কা। তার দাপটে নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়ানোর আশাও মাটি হতে বসেছে। অন্য ব্যবসার চাকা ঘুরতে শুরু করলেও পর্যটন কার্যত সেই তিমিরেই।
বিদেশিদের ভারতে বা ভারতীয়দের বিদেশ সফর করায় যে সব পর্যটন সংস্থা, তাদের আশা ছিল নতুন বছরে ব্যবসার চাকা ঘুরবে। কিন্তু ব্রিটেনে করোনার নতুন ‘স্ট্রেন’-এর (প্রকারভেদ) আবির্ভাবে সে দেশের সঙ্গে ভারতের বিমান যোগাযোগ ফের বন্ধ হয়েছে। তার উপরে কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েও কার্যত কিছুই মেলেনি বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে তাই উল্টে আরও হতাশা ও আতঙ্ক চেপে বসছে এই শিল্পে।
দেশে প্রায় সব কিছু চালু হয়ে যাওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে বাজার ধরার জন্য কেন্দ্রের কাছে দ্রুত ই-ভিসা, টুরিস্ট ভিসা এবং আন্তর্জাতিক উড়ান চালুর দিনক্ষণ ঘোষণার আর্জি জানিয়েছিল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব টুর অপারেটর্স (আইএটিও)। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট প্রণব সরকার মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আশায় ছিলাম নতুন বছরে বিদেশ থেকে ব্যবসার খোঁজখবর ও বুকিং শুরু হবে।’’
ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশন্স ইন ইন্ডিয়ান টুরিজ়ম অ্যান্ড হসপিটালিটির (ফেথ) জেনারেল সেক্রেটারি সুভাষ গয়ালও বলেন, ‘‘ভারতীয়দের ঘরে ফেরাতে চুক্তির উড়ানের পাশাপাশি দেশে প্রায় ৭৫% বিমান চলছে। তাই আগের মতো আন্তর্জাতিক সূচি মেনে জানুয়ারি থেকে স্বাভাবিক উড়ান শুরুর আশায় ছিলাম।’’ ব্রিটেন-সহ ইউরোপের একাংশে ফের সংক্রমণের খবরে দু’জনেই শঙ্কিত, নতুন বছরেও কবে ব্যবসা শুরু করা যাবে? ইতিমধ্যেই অনেক সংস্থার আর্থিক দশা বেশ খারাপ। পর্যটন সংস্থার পাশাপাশি হোটেল ও রেস্তরাঁর ব্যবসাতেও ছড়িয়েছে তার প্রভাব। কাজ হারিয়েছেন বহু কর্মী।
সুভাষ জানান, সাধারণত অক্টোবর-মার্চে বিদেশি পর্যটকেরা ভারতে আসেন। মে-জুলাইয়ের ছুটিতে ভারতীয়রা বিদেশে ঘুরতে যান। ২০১৯ সালে ১.১ কোটি বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন। প্রায় ২.৫ কোটি ভারতীয় পাড়ি দেন ভিন্ দেশে। কিন্তু করোনার ধাক্কায় এ বার সবই বন্ধ ছিল। শুধু বিদেশে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে ব্রিটেন-সহ ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি মতো অল্প উড়ান চলেছে। কিন্তু আগের মতো পরিষেবা শুরু হয়নি। কোনও পর্যটককে ভিসাও দেওয়া হয়নি।
গোটা বছর হাত গুটিয়ে বসে থেকে বর্ষবরণের মুখে ফের বাড়ছে উদ্বেগ। বিধ্বস্ত পর্যটন শিল্পের এখন একটাই প্রার্থনা, দ্রুত সকলের নাগালে আসুক করোনা টিকা।