প্রতীকী ছবি।
এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে তিন রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি), হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসিএল) এবং ভারত পেট্রোলিয়ামের (বিপিসিএল) মোট ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ১৮,৪৮০ কোটি টাকা। বিনিয়ন্ত্রণের যুগে তো বটেই, তেলের দাম যখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল, সেই সময় ধরেও যা রেকর্ড। সংস্থাগুলির বক্তব্য, আলোচ্য সময়ে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বেশি থাকলেও পাম্পে পেট্রল-ডিজ়েলের খুচরো দাম স্থির থাকার জন্যই এই পরিস্থিতি। সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য ব্যাখ্যা, বাজারের হাতে তেলের দামকে ছাড়ার পরেও গুরুত্বপূর্ণ ভোটের সময়ে বারবার সেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটানো হয়েছে। তার ফল ভুগতে হচ্ছে সংস্থাগুলিকে।
তিন সংস্থাই জানিয়েছে, পেট্রল, ডিজ়েল এবং গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের বিপণন থেকে আয় এতটাই কমেছে যে, ক্ষতির মুখে পড়েছে তারা। দুই পরিবহণ জ্বালানির ক্ষেত্রে তা নেমেছে উৎপাদন খরচের নীচে। সংশ্লিষ্ট মহলের হিসাব, ইদানীং বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম মাথা নামালেও এপ্রিল-জুনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে তা যথেষ্ট উঁচুতে ছিল। একটা সময়ে সেই দর ব্যারেলে ১২০ ডলারে পৌঁছয়। অথচ গত ১২৩ দিন ধরে দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের মূল দাম স্থির রয়েছে। মাঝে পণ্য দু’টির উৎপাদন শুল্ক কমানো হলেও তেল সংস্থাগুলি তার সুবিধা পায়নি। সেই সময় ভারত যে বাস্কেট থেকে অশোধিত তেল আমদানি করেছে তা দাম ছিল ১০৯ ডলার। কিন্তু সংস্থাগুলিকে তা ৮৫-৮৬ ডলারের হিসাবে বিক্রি করতে হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্র বারবার বোঝাতে চেষ্টা করেছে তেলের খুচরো দাম চূড়ান্ত করার ব্যাপারে তাদের হাত নেই। বিশ্ব বাজারের দাম অনুযায়ী তা ঠিক করে সংস্থাই। অথচ ক্ষতির কারণ হিসেবে সংস্থাগুলি দাম স্থির থাকার কথা বললেও কেন তারা তা স্থির রেখেছিল সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি। তেলের দাম বিনিয়ন্ত্রণের পরে প্রায় প্রতি দিনই পেট্রল-ডিজ়েলের দাম ওঠানামা করতে দেখা যেত। কিন্তু তার ব্যতিক্রম ঘটে বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনের সময়। উত্তরপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ— ভোটের আগে দীর্ঘ দিন দাম স্থির ছিল। এখন অশোধিত তেল কমলেও মূল্যবৃদ্ধির জেরে জ্বালানির দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। অনেকে বলছেন, ভোটের সময়ে ‘তেলের রাজনীতি’ করা না হলে এখনও লাভ-ক্ষতি নাগালেই থাকত সংস্থাগুলির।