Pension

বর্ধিত পেনশন, যোগ্য কারা

একটা সময় পর্যন্ত পিএফ প্রকল্পে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেতনের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৫০০০ টাকা। পরে তা বেড়ে ৬৫০০ টাকা হয়। ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে তা বাড়িয়ে করা হয় ১৫,০০০ টাকা।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৩ ০৭:৫৩
Share:

‘পেনশনেবল স্যালারি’ হল অবসর বা চাকরি ছাড়ার আগের ৬০ মাসের গড় বেতন। প্রতীকী ছবি।

কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) সদস্যদের কিছু শ্রেণিকে বর্ধিত পেনশন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু কারা তা পাওয়ার যোগ্য, তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে অনেকের। সেই বিভ্রান্তি কাটাতে ব্যাখ্যা দিয়েছেন পিএফ কর্তৃপক্ষ। বর্ধিত পেনশন পেতে গেলে কী করতে হবে, জানিয়েছেন তা-ও।

Advertisement

একটা সময় পর্যন্ত পিএফ প্রকল্পে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেতনের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৫০০০ টাকা। পরে তা বেড়ে ৬৫০০ টাকা হয়। ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে তা বাড়িয়ে করা হয় ১৫,০০০ টাকা। পিএফের নিয়ম অনুযায়ী, ওই বেতনের ১২% পিএফ অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হয় কর্মীকে। নিয়োগকারীও দেন সমপরিমাণ টাকা। তবে সেই ১২ শতাংশের মধ্যে ৮.৩৩% পেনশন তহবিলে জমা পড়ে। বাকি ৩.৬৭% যায় পিএফ তহবিলেই। কিছু সংস্থার ক্ষেত্রে অবশ্য বেতনের ঊর্ধ্বসীমা প্রযোজ্য নয়। তাদের মূল বেতন ও মহার্ঘভাতার পুরোটার উপরেই কাটা হয় পিএফ। তবে নিয়োগকারীর তরফে ১৫,০০০ টাকার উপরেই ৮.৩৩% পেনশন তহবিলে জমা পড়ে। বাকিটা যায় পিএফে।

পেনশনের হিসাব অবশ্য কষা হয় ১৫,০০০ টাকা বেতন ধরে। সেই সমীকরণ হল— ‘পেনশনেবল সার্ভিস’ গুণ ‘পেনশনেবল স্যালারি’ ভাগ ৭০। কোনও সদস্য যত বছর পেনশন তহবিলে টাকা জমা দিয়েছেন, সেটাই ‘পেনশনেবল সার্ভিস’। ‘পেনশনেবল স্যালারি’ হল অবসর বা চাকরি ছাড়ার আগের ৬০ মাসের গড় বেতন। উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে পেনশন প্রকল্প (এমপ্লয়িজ় পেনশন স্কিম বা ইপিএস-৯৫) চালু হয়। ‘পেনশনেবল সার্ভিস’ হিসাব করা হয় সেই দিনটিকে ভিত্তি করেই। যাঁরা তার আগে থেকে চাকরি করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিছু থোক টাকা যোগ করে পেনশনের হিসাব কষা হয়।

Advertisement

তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সদস্যেরা নিজেরাই ১৫,০০০ টাকার বেশি বেতনের উপরে পিএফ খাতে টাকা জমা দিয়েছেন। পেনশন তহবিলেও টাকা কাটিয়েছেন বর্ধিত বেতনের উপরে। প্রধানত ওই সদস্যেরাই দাবি করেছিলেন, তাঁদের পেনশন দিতে হবে বর্ধিত বেতনের উপরে ভিত্তি করে। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের উপরে ভিত্তি করেই কারা বর্ধিত হারে পেনশন পাওয়ার যোগ্য, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন পিএফ কর্তৃপক্ষ। জানিয়েছেন, এর জন্য সংশ্লিষ্ট সদস্যদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।

কারা বর্ধিত পেনশনের যোগ্য এবং কারা নন?

২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর বা তার আগে থেকেই যাঁরা চাকরিতে ছিলেন এবং বেতন ১৫,০০০ টাকা (আগের নিয়মে ৬৫০০ টাকা কিংবা ৫০০০ টাকা) ছাড়ানোর দিন থেকেই বর্ধিত বেতনের উপরে পিএফ খাতে টাকা কাটিয়েছেন (‘অপশন’ দিয়েছিলেন), তাঁরা বর্ধিত পেনশনের দাবি করতে পারবেন। কিন্তু যাঁরা ২০১৪ সালের ৩১ অগস্ট পর্যন্ত বর্ধিত বেতনের উপরে পিএফ খাতে টাকা কাটানোর ‘অপশন’ দিয়েছিলেন কিন্তু সেই বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ৩১ অগস্টের মধ্যে ফের ‘অপশন’ দেননি, তাঁরা বর্ধিত পেনশন পাওয়ার আবেদনের যোগ্য নন।

যাঁদের ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর বা তার পরে ৫৮ বছর বয়স হয়েছে এবং ওই তারিখ পর্যন্ত ইপিএস-৯৫ প্রকল্পের সদস্য থাকার সঙ্গেই বর্ধিত বেতনের উপরে টাকা কাটিয়েছেন, তাঁরাও যোগ্য। যাঁরা ইপিএস-৯৫ প্রকল্পের সদস্য থাকার সময়ে ১.৯.২০১৪ তারিখে অথবা তার পরে অবসর নিয়েছেন বা চাকরি ছেড়েছেন এবং বর্ধিত বেতনের উপরে পিএফের টাকা কাটিয়েছেন, যোগ্য তাঁরাও।

যাঁরা বর্ধিত বেতনের উপরে পিএফ খাতে টাকা কাটানোর জন্য নিয়োগকারীর সঙ্গে যৌথ ভাবে আবেদন না করে ১.৯.২০১৪ তারিখে ৫৮ বছর বয়স পূর্ণ করেছেন অথবা তা ছাড়িয়ে গিয়েছেন, তাঁরা এই সুবিধার যোগ্য নন।

যাঁদের ১.৯.২০১৪ বা তার আগে ৫৮ বছর বয়স হয়েছে এবং যাঁরা পিএফ খাতে টাকা কাটানোর জন্য নিয়োগকারীর সঙ্গে যৌথ ভাবে আবেদন জানিয়েছিলেন কিন্তু পিএফ কর্তৃপক্ষ ওই আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন, তাঁরা বর্ধিত হারে পেনশন পাওয়ার যোগ্য এবং এখন আবেদন জানাতে পারবেন।

যাঁরা ১.৯.২০১৪-র পরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা বর্ধিত হারে পেনশন পাওয়ার জন্য আবেদন করার যোগ্য নন।

যাঁরা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন এবং পেনশন খাতে বর্ধিত বেতনের উপর টাকা কাটাননি, তাঁরা যদি অতিরিক্ত পেনশন দাবি করেন, তা হলে তাঁদের এখন ১৫,০০০ টাকার ঊর্ধ্বসীমার উপরে বর্ধিত বেতনের ভিত্তিতে পেনশন তহবিলে টাকা জমা দিতে হবে। তা দিতে হবে সুদ-সহ এবং ইপিএস-৯৫ চালুর সময় থেকেই (১৬.১১.১৯৯৫)। যাঁরা তার পরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের দিতে হবে চাকরিতে যোগদানের দিন থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement