কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) ২০% পর্যন্ত পুঁজি শেয়ার বাজারে ঢালার ব্যাপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতে পারে। এখন ওই খাতে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ১৫%। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত সঞ্চয় কি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে? সরকারের অবশ্য যুক্তি, ঋণপত্রের বাজারে টাকা খাটিয়ে ভাল রিটার্নের সম্ভাবনা দিন দিন কমছে। তহবিল বাড়াতে গেলে শেয়ার বাজারে আরও পা বাড়ানো ছাড়া গতি নেই।
ইপিএফের পুঁজি এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ইটিএফ) মাধ্যমে শেয়ার বাজারে খাটানো শুরু হয় ২০১৫ সালের অগস্টে। সেই সময় ঠিক হয় নতুন লগ্নিযোগ্য তহবিলের ৫% ওই খাতে ঢালা হবে। তার পরে কয়েক ধাপে সেই পরিমাণ বেড়েছে। এখন সর্বনিম্ন ৫% থেকে সর্বোচ্চ ১৫% ইটিএফের মাধ্যমে শেয়ারে বিনিয়োগ করা যায়। সূত্রের খবর, আগামী ২৯ এবং ৩০ জুলাই বৈঠকে বসতে চলেছে ইপিএফও-র কেন্দ্রীয় অছি পরিষদ। সেখানেই শেয়ারে খাটানো তহবিল আরও বাড়ানোর বিষয়টি আলোচনা হতে পারে। চূড়ান্ত হতে পারে সিদ্ধান্ত। এর আগের ধাপে ইপিএফও-র পরামর্শদানকারী বিভাগ ফিনান্স অডিট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিটি (এফএআইসি) এই সংক্রান্ত প্রস্তাব করেছিল। ওই সূত্রটির বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন প্রভিডেন্ট ফান্ডের কেন্দ্রীয় অছি পরিষদের বৈঠকে শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাব পাশ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নতুন তহবিলের ৫% থেকে ২০% শেয়ারে বিনিয়োগ করা যাবে। এখন তা ৫% থেকে ১৫%।’’ বস্তুত, সোমবার লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে এফএআইসের প্রস্তাবের বিষয়টি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি।
ইপিএফের তহবিল শেয়ারে খাটানোর ব্যাপারে ট্রেড ইউনিয়নগুলি বরাবরই আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তাদের বক্তব্য, এই লগ্নি সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত নয়। সাধারণ মানুষের অবসর জীবনের কার্যত শেষ সম্বলকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র। সরকারের অবশ্য যুক্তি, ঋণপত্রের মতো ধ্রুপদী ক্ষেত্রে পুঁজি ঢেলে ভাল রিটার্নের দিন ফুরিয়েছে। অবসরের পর গ্রাহকদের হাতে ভাল অঙ্কের টাকা তুলে দিতে হলে ইপিএফের তহবিলকেও যথেষ্ট শক্তিশালী করতে হবে। সে ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারে পুঁজি বাড়ানো ছাড়া গতি নেই। ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষে শেয়ারে ঢালা পুঁজি যথাক্রমে ১৪.৬৭% এবং ১৬.২৭% বেড়েছে। এই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, অতিমারির প্রভাবে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে শেয়ার বাজারে ঢালা ইপিএফের পুঁজি উল্টে ৮.২৯% সঙ্কুচিত হয়েছিল। সম্প্রতি সুদও ৮.৫% থেকে নেমেছে ৮.১ শতাংশে।