প্রতীকী ছবি।
ফের সুদিন ফেরার বার্তা দিল অর্থ মন্ত্রক। মঙ্গলবার প্রকাশিত মাসিক আর্থিক রিপোর্টে তাদের দাবি, করোনা টিকার ছাড়পত্র ও সরকারের দক্ষ হাতে অতিমারি মোকাবিলা অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় আরও বেশি শক্তি জোগাচ্ছে। তবে সেই আশার মুখে বেশ বড় মাপের এক প্রশ্ন চিহ্ন বসিয়ে উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআই জানিয়েছে, ডিসেম্বরে দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৯.০৬%। যা ছ’মাসের মধ্যে সব থেকে বেশি। চড়া মূল্যবৃদ্ধির জমানায় যা জল ঢালতে পারে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায়।
সিএমআইই-র হিসেব বলছে, গত মাসে দেশে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩.৮৭ কোটি, যেখানে নভেম্বরে ছিল ২.৭৪ কোটি। অর্থাৎ ১.১৩ কোটি বেশি। বস্তুত, গোটা ডিসেম্বর জুড়ে প্রতি সপ্তাহেই (শেষটি বাদে) ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা গিয়েছে তাঁদের সংখ্যা। বেকারত্বের এমন চড়া হার এর আগে দেখা গিয়েছিল জুনে, ১০.১৮%। লকডাউন তখন সবেমাত্র শিথিল হতে শুরু করেছে।
দেশ জুড়ে আর্থিক কর্মকাণ্ড সবেমাত্র খুলতে শুরু করেছে। এমন সময় কর্মসংস্থানের এই বিবর্ণ ছবি দেখে প্রমাদ গুনছেন উপদেষ্টা সংস্থাটির এমডি-সিইও মহেশ ব্যাস। তাঁর দাবি, ‘‘আরও বেশি দুশ্চিন্তার বিষয় হল, বেকারত্বের হার যখন ফের বাড়ছে, তখন চড়া মূল্যবৃদ্ধির হারও। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে প্রায় ৭ শতাংশের (খুচরো বাজারে) কাছাকাছি। এটা পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলছে। কর্মহীন মানুষের সংখ্যা এতটা বেড়ে যাওয়া (অর্থনীতির) ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া নিয়েই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।’’
কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, মেঘ কাটছে। উৎসব ও ছুটির মরসুম কাটিয়েও যে ভাবে সংক্রমণ কমছে এবং অর্থনীতি কোভিডকে পরাস্ত করে এগোচ্ছে, তাতে ঘুরে দাঁড়ানোর আশাই আরও পোক্ত হয়। তার উপরে লকডাউনের জেরে অর্থনীতি যে ভাবে খাদে গিয়ে ঠেকেছিল, লকডাউন উঠতে ঠিক তেমনই দ্রুত মাথা তুলেছে সে, ইংরেজি ‘ভি’-র মতো আর্থিক বৃদ্ধির রেখচিত্র নিয়ে। সঙ্গী হতে চলেছে করোনার টিকা। ফলে অর্থনীতিকে ঠেকায় কে!
আর এখানেই চিন্তা সিএমআইই-র সমীক্ষার। দাবি, করোনার কারণে বহু মানুষ কাজের বাজার থেকে সরে গিয়েছিলেন। কেউ ছাঁটাই হয়েছিলেন। কারও কারখানা, অফিস বন্ধ ছিল। কেউ কাজ খোঁজাই ছেড়ে দিয়েছিলেন। তাই বেকারত্বের হারও কমেছিল। কিন্তু অর্থনীতি মুখ তুলতে শুরু করলে তো কাজের বাজারে অংশগ্রহণ বাড়বেই। চাকরির সন্ধানও বাড়বে। কিন্তু এই মানুষগুলো কাজ না-পেলে চড়বে বেকারত্বও। আবার ডিসেম্বরে গ্রামে কৃষি ক্ষেত্রে কম লোক লাগে। সেটাও কর্মহীনতার জন্য দায়ী। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, করোনার নতুন স্ট্রেন এবং ব্রিটেনের পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তাই করোনা বিধির ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়াতেই হবে।