রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভারভ এবংবিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
কয়েকশো কোটি টাকা পড়ে রয়েছে রাশিয়ার কাছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিনিময়ের কাজে তা লাগছে না। সম্প্রতি গোয়ায় শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে যোগ দিতে এসে এই অভিযোগ করেছিলেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভারভ। তাঁর এই কথাতেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য টাকায় চালানোর জন্য নয়াদিল্লির দেওয়া প্রস্তাব খারিজের ‘বার্তা’ ছিল বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ।
২০২২-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পরে পশ্চিমী দুনিয়ার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে সস্তায় তেল ও কয়লার মতো পণ্য আনার সুবিধা পাচ্ছে ভারত। এই অবস্থায় আমদানিকারী সংস্থাগুলি তাকিয়েছিল দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য টাকায় চালানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ার দিকে। কারণ এই ব্যবস্থা মুদ্রায় রূপান্তরের খরচ কমাতে সাহায্য করবে। মজবুত হবে টাকা। কিন্তু তাতে যে রাশিয়ার সায় নেই সেই বার্তা মিলেছে ইতিমধ্যেই।
সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাশিয়া মনে করে ভারতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য চালু হলে বছরে উদ্বৃত্ত টাকার অঙ্ক ৪০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৩,২৭,১২০ কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যাবে। আর এই বিপুল টাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তাদের তোমন কোনও সুবিধা দেবে না। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বা রাশিয়ার সরকারি মহল অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করেনি। তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, টাকা পুরোপুরি সোনা বা অন্যান্য দেশের মুদ্রায় রূপান্তরযোগ্য নয়। তার উপর আন্তর্জাতিক রফতানি বাজারে ভারতের দখল মাত্র ২ শতাংশ। ফলে ভারতীয় মুদ্রা জমা রাখার প্রয়োজনীয়তা ও ইচ্ছে নেই ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের।
প্রসঙ্গত, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরেই ভারত টাকায় বাণিজ্যের ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে। কথাবার্তাও চলতে থাকে মস্কোর সঙ্গে। কিন্তু কোনও চুক্তি হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যুদ্ধ শুরুর পরে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের প্রথম ১১ মাসে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে দ্রুত গতিতে। ভারতে রাশিয়ার রফতানি কমেছে সাড়ে ১১ শতাংশেরও বেশি। টাকার অঙ্কে প্রায় ২২ হাজার ৯০০ কোটি!