প্রঃ কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের আওতায় পেনশন (ইপিএস) কী ভাবে হিসেব করব?
শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রথম কথা হল, মূল বেতন ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হলে, তবেই পিএফের আওতায় আসা যায় (কিছু শিল্প ব্যতিক্রম)। এ ক্ষেত্রে কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) খাতে নিয়োগকারী ও কর্মী মূল বেতনের ১২% করে দেন। সংস্থা যে টাকা দেয়, তার ৮.৩৩% যায় পেনশন খাতে। বাকি টাকা পিএফে। আর কর্মীর পুরোটাই যায় পিএফে। তবে মূল বেতন ১৫,০০০ টাকার বেশি হলেও পেনশন খাতে যাওয়া টাকার অঙ্ক সর্বাধিক ১২৫০ টাকা।
পেনশনের হিসেব—
পেনশনযোগ্য বেতন x চাকরির মেয়াদ / ৭০
সর্বোচ্চ বেতন ১৫,০০০ টাকা এবং চাকরির সর্বাধিক মেয়াদ ৩৫ বছর ধরে এই হিসেব হয়।
পেনশনযোগ্য বেতনের অর্থ, প্রকল্প ছাড়ার আগের শেষ ১২ মাসের গড় মাসিক বেতন।
প্রঃ আমার বেতন মাসে ১২,০০০ টাকা। শীঘ্রই পুরনো হলেও, একটা ফ্ল্যাট কিনতেই হবে। পরিবারে বাবা আর আমি। এ বছরেই মারা গিয়েছেন মা। কী ভাবে এ জন্য সঞ্চয় করা যায়? বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে লগ্নিই বা কী ভাবে করব?
সুগত কর্মকার
প্রথমেই বলব খরচ বাঁধুন। দেখবেন কোনও ভাবেই যেন বাজে খরচ না-হয়। মাসে কোথায় কত খরচ হয়, তার একটা তালিকা তৈরি করুন। তা হলেই বুঝতে পারবেন কোথায় তা কমাতে হবে। যে টাকা হাতে থাকবে, তা থেকে এ বার লগ্নি করতে হবে।
এ জন্য—
• দীর্ঘ মেয়াদের জন্য পিপিএফ করুন।
• ইন্ডেক্স ফান্ডে বেশি সময়ের জন্য এসআইপি খুলুন।
• আপৎকালের তহবিল গড়তে রেকারিং করুন।
আপনার ফ্ল্যাট কেনার জন্য ডাউনপেমেন্টের টাকা রয়েছে কি না বলেননি। যদি থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে দেখতে হবে তারা কত টাকা দিতে রাজি এবং সে ক্ষেত্রে মাসিক কিস্তি কত পড়বে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা নিতে হবে। তাতে সুদ বেশ কিছুটা কম পড়বে।
এটা ঠিক যে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সকলেই শরীরের সঙ্গেই আর্থিক সুরক্ষার দিকটা নিয়ে চিন্তিত। এ ক্ষেত্রে আপনাকে একটাই পরামর্শ দেব, এখন যে বেতন পাচ্ছেন, তা দিয়ে যতটা সম্ভব নিজের তহবিল বাড়ানোর চেষ্টা করুন। বিশেষ করে জোর দিতে হবে আপৎকালীন তহবিল গড়ার উপরে। সেই সঙ্গে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মন দিতে হবে। যাতে আগামী দিনে আরও ভাল চাকরি খুঁজে নেওয়ার পথ সহজ হয়।
পরামর্শদাতা: শৈবাল বিশ্বাস
প্রঃ বেসরকারি সংস্থার কর্মী ছিলাম। সম্প্রতি অবসর নিয়েছি। যা পেয়েছি তার একটি অংশ লগ্নি করতে চাই। কোন ব্যালান্সড ফান্ড আমার পক্ষে উপযুক্ত হবে?
পার্থ সান্যাল
এ ভাবে কোনও নির্দিষ্ট একটি ফান্ড সম্পর্কে সুপারিশ করা তো সম্ভব নয়। কারণ, কোন লক্ষ্যের জন্য আপনি কত টাকা রাখতে চান, আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা কতটা, তা স্পষ্ট করেননি। তার উপরে প্রতিটি ফান্ডই কোনও না কোনও সময় ভাল রিটার্ন দেয়। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই একই ফান্ডের রিটার্ন তেমন চড়া না-ও হতে পারে। নির্ভর করে বাজারের পরিস্থিতির উপরে। যেমন, কয়েক দিন আগে পর্যন্ত শেয়ার বাজার চিতার বেগে দৌড়চ্ছিল। বাজেটের আগে এখন আবার লগ্নিকারীরা পুঁজি সরাচ্ছেন। ফলে লগ্নির সময় এবং পরিমাণ বাজারের পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে।
তবে বলতে পারি, ব্যালান্সড ফান্ড শেয়ার ও ঋণপত্র উভয় ক্ষেত্রেই লগ্নি করে। ফলে ঝুঁকি এবং স্থিতিশীলতার একটা সামঞ্জস্য থাকে। অবসরপ্রাপ্ত হিসেবে আপনার উচিত ফান্ড বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক পদক্ষেপ করা। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে লগ্নি পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলা। সব দিক বিচার করে তবেই লগ্নি করুন।
পরামর্শদাতা: নীলাঞ্জন দে