২৪ ক্যারাটের ১০ গ্রাম পাকা সোনার দর এক দিনেই বেড়ে হল ৫০,৫৫০ টাকা। ফাইল চিত্র।
গত ১৬ নভেম্বর শেষ বার কলকাতায় ৫০ হাজার ছোঁয়ার পরে নেমে এসেছিল সোনার দাম। এর তিন মাসের মাথায় হলুদ ধাতুর দর ফের সেই ঘরে পা রাখল। ২৪ ক্যারাটের ১০ গ্রাম পাকা সোনার দর এক দিনেই ১০৫০ টাকা বেড়ে হল ৫০,৫৫০ টাকা। জিএসটি জুড়ে ৫২,০৬৬ টাকা। গয়না ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এই দাম আরও বাড়তে পারে।
সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের কারবারিদের বক্তব্য, ভারতে সোনার দামের ওঠা-পড়া প্রাথমিক ভাবে নির্ভর করে আন্তর্জাতিক কারণের উপরে। এই দফায় তা ঘোরাফেরা করছে রাশিয়া-ইউক্রেন অশান্তির পরিবেশকে কেন্দ্র করে। অনেকে মনে করছেন, ওই দুই দেশের সম্পর্কের অবনতির প্রভাব আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপরে পড়তে পারে। এই ধরনের অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে সব সময়েই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ লগ্নি ক্ষেত্র হিসাবে সোনায় পুঁজি ঢালা বাড়তে থাকে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামও চড়ে। এ বারেও তা-ই হয়েছে। গত তিন দিনে প্রতি আউন্স পাকা সোনার দাম ৩৬ ডলার বেড়ে হয়েছে ১৮৫৯.৭৫ ডলার। এর সঙ্গেই রয়েছে আমেরিকায় আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি। পণ্য লেনদেন বাজার বিশেষজ্ঞ অরিন্দম সাহা বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে ডলারের দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে ওই মুদ্রায় লগ্নি কমছে। সেই লগ্নি টানছে সোনা।’’
বিশেষজ্ঞেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, উঁচু মূল্যবৃদ্ধি এবং বাজারের অস্থিরতার কারণে করোনাকালে ভারতেও একাধিক বার সোনার দাম বেড়েছিল। তাঁদের বক্তব্য, অতিমারির উপর্যুপরি ঢেউয়ে বারবার বিয়ের মতে সামাজিক অনুষ্ঠান স্থগিত হয়েছে। এ বার সংক্রমণ কিছুটা কমায় তা শুরু হয়েছে আবার। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে সোনার চাহিদা বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে তার আমদানিও। যা ঠেলে তুলছে তার দামকে। ইন্ডিয়ান বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি অশোক বেঙ্গান বলেন, ‘‘২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ভারতে সোনার আমদানি বেড়েছে ২৪%। আমদানি হয়েছে ১০৫০ টন।’’
ভারতে এই দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা ছিল, ২০২২ সালে ধীরে ধীরে তা বাড়বে। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি সেই গতি বাড়িয়ে দিয়েছে।’’