প্রতীকী চিত্র।
বাজারে এখন ফ্লেক্সিক্যাপের বন্যা। মিউচুয়াল ফান্ডের সংস্থাগুলি বাজারে ঢেলে বিক্রি করছে ফ্লেক্সিক্যাপ। আর চড়া বাজারে আমরাও ঝুঁকছি এই জাতীয় ফান্ডে।
ফ্লেক্সিক্যাপ কাকে বলে? নামেই এর পরিচিতি অনেকটাই পরিষ্কার। এই জাতীয় ফান্ডের পরিচালনার নীতিটাই হল যেখানে টাকা বানানোর সুযোগ, টাকা সেখানেই ঢাল। সাধারণ ভাবে অন্য প্রায় সব মিউচুয়াল ফান্ডে বলা থাকে কী ধরনের শেয়ার বা ঋণপত্রে বিনিয়োগ করা হবে। ফ্লেক্সিক্যাপের ক্ষেত্রে এই সীমা প্রযোজ্য নয়। নীতি একটাই। ঝোপ বুঝে কোপ।
তবে বাজারে এখনও পর্যন্ত যে সব ফ্লেক্সিক্যাপ এসেছে, তার প্রায় সবকটিতেই লার্জ আর মিডক্যাপের দিকেই পাল্লা ভারি। স্মলক্যাপ থাকলেও তা বলার মতো নয়।
তা হলে প্রশ্ন উঠতেই পারে বাজারে যে সব ডাইভারসিফায়েড ফান্ড চলছে তার সঙ্গে ফ্লেক্সিক্যাপের ফারাক কোথায়? ডাইভারসিফায়েড ফান্ডই অন্য নামে বাজারে আনা হয়নি তো?
ফ্লেক্সিক্যাপে টাকা ঢালার আগে দেখে নিন আপনার টাকা কোথায় ঢালা হচ্ছে।
ডাইভারসিফায়েড ফান্ডের পরিচালকরা বিনিয়োগের টাকা শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঢেলে থাকেন। চেষ্টা থাকে নতুন সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র এবং সংস্থা খুঁজে তাতেও বিনিয়োগ করার। উদ্দেশ্য একটাই। যে সব সংস্থা বা ক্ষেত্র ইতিমধ্যেই লগ্নিকারীদের নজর কেড়েছে, সেই সব শেয়ারে তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধির হার কম। অথচ তুলনামূলক ভাবে নজরের বাইরে থাকা শেয়ারে টাকা ঢাললে বৃদ্ধির সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাই এই জাতীয় ফান্ডের নজরটা থাকে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রের দিকেই।
মাথায় রাখতে হবে যে কোনও সংস্থার মার্কেট ক্যাপের হিসাব হয় বাজারে সেই সংস্থার যত শেয়ার আছে তাকে তার বাজার দর দিয়ে গুণ করে। উদাহরণ হিসাবে ধরা যাক একটি সংস্থার ১০০টি শেয়ার বাজারে আছে। বাজারে তা হাত বদল হচ্ছে ২০ টাকা দরে। তা হলে সেই সংস্থার শেয়ারের মার্কেট ক্যাপ হবে ১০০X২০=২০০০। অর্থাৎ মার্কেট ক্যাপ থেকে কিন্তু আমরা সংস্থার গুণগত অবস্থান টের পাই না। বাজারে বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারের দিকে কতটা নজর তারই খানিকটা আন্দাজ পাই আমরা এর থেকে।
আপাত দৃষ্টিতে ফ্লেক্সিক্যাপের নজর যতটা না শেয়ারের গুণগত মানের দিকে, তার থেকেও বেশি জোর কিন্তু ওই ঝোপ বুঝে কোপ মারার উপরে। তাই ফ্লেক্সিক্যাপে টাকা ঢালার আগে দেখে নিন আপনার টাকা কোথায় ঢালা হচ্ছে। অনেক সময় চটজলদি লাভের হিসাবে দীর্ঘস্থায়ী লাভ বলি হয়ে যেতে পারে।
(মতামত লেখকের নিজস্ব)