Indian Economy

চাঙ্গা বাজার, চোখ বাজেটে

সেনসেক্স প্রথমবার ১০০০ পার করেছিল ১৯৯০-এর জুলাইয়ে। ৩৪ বছর পরে সেই জুলাইতেই তা ৮০ গুণ উপরে। গত পাঁচ বছরে বৃদ্ধির গতি অনেক বেশি। ২০১৯-এর মে মাসে সূচক ছিল ৪০ হাজার। দ্বিগুণ বেড়ে এখন প্রায় ৮০ হাজার।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৫৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ফের নতুন শিখরে শেয়ার বাজার। গত বৃহস্পতিবার সেনসেক্স প্রথমবার ৮০ হাজারের মাইলফলক টপকে থিতু হয়েছে ওই ঘরে। শুক্রবার সামান্য নেমে হয় ৭৯,৯৯৭। সেনসেক্স প্রথমবার ১০০০ পার করেছিল ১৯৯০-এর জুলাইয়ে। ৩৪ বছর পরে সেই জুলাইতেই তা ৮০ গুণ উপরে। গত পাঁচ বছরে বৃদ্ধির গতি অনেক বেশি। ২০১৯-এর মে মাসে সূচক ছিল ৪০ হাজার। দ্বিগুণ বেড়ে এখন প্রায় ৮০ হাজার। শেষ ১০ হাজার উঠেছে ১৯ মাসেরও কম সময়ে।

Advertisement

বাজার এত চাঙ্গা থাকার কারণ—

  • জিডিপি বৃদ্ধির নিরিখে ভারত (৮.২%) সমস্ত দেশকে ছাপিয়ে শীর্ষে।
  • গ্রীষ্মে প্রবল তাপপ্রবাহ চললেও, ভাল বর্ষার পূর্বাভাস রয়েছে।
  • দেরিতে বর্ষা এসেছে। তবে ইতিমধ্যেই ঘাটতি কিছুটা কমেছে।
  • বৃষ্টি ভাল হলে পণ্যের দাম কমার আশা। তাতে সুদ কমারও সম্ভাবনা।
  • সরকার স্থিতিশীল। সংস্কার বহাল রাখার আশ্বাসও দিচ্ছে।
  • মোটের উপরে ভাল হয়েছে গত অর্থবর্ষে বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক ফল।
  • রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে অনুৎপাদক সম্পদ অনেকটা কমেছে।
  • বাজারে শেয়ার ছেড়ে পুঁজি সংগ্রহের জোয়ার এসেছে।
  • দেশি এবং বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি শেয়ার কিনছে।
  • বাজারে ভিড় বাড়ছে লগ্নিকারীর। জুনেই খুলেছে ৪৩ লক্ষ ডিম্যাট।
  • তেজী বিশ্ব বাজার। গত সপ্তাহেই জাপানের সূচক নিক্কেই ৪০,৯১৪ অঙ্কে উঠে নজির গড়েছে।
  • উৎপাদন এবং পরিষেবা— পিএমআই সূচক অনুযায়ী দেশের এই দুই ক্ষেত্রই চাঙ্গা।
  • জুনে জিএসটি আদায় ৮% বেড়ে হয়েছে ১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা।
Advertisement

আগামী সপ্তাহে শুরু হবে সংস্থাগুলির এপ্রিল-জুনের আর্থিক ফল প্রকাশ। প্রবল তাপপ্রবাহ এবং দেশে নির্বাচন চলার কারণে কিছু ক্ষেত্রে ফল তেমন ভাল না-ও হতে পারে বলে আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহে বাজেট নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠবে। বিভিন্ন শিল্প-বণিকসভা এরই মধ্যে দাবি-দাওয়া পেশ করেছে অর্থ মন্ত্রকের কাছে। অনেকে জানিয়েছেন বাজেট থেকে প্রত্যাশা। মনে করা হচ্ছে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট তৈরির সময় মাথায় রাখবেন ভোটে বিজেপির আশানুরূপ ফল না করতে পারা এবং সামনে চারটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের কথা। তার উপরে জিনিসপত্র বিশেষত খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এখনও চড়া। বেকারত্বের হারও বেশ উপরের দিকে। তাই দেশবাসীকে বাজেট মারফত কতটা সুবিধা দেওয়া যায়, তা বিবেচনার মধ্যে থাকতে পারে বলে আশা।

২০১৯-এ দেশে কর্পোরেট কর ৩০% থেকে কমিয়ে ২২% করা হয়েছিল। তখন থেকেই দাবি, সাধারণের করের বোঝাও কমানো হোক। এ বার তা হয় কি না, দেখার। কর কমলে মানুষের হাতে বেশি টাকা থাকবে। পণ্যের চাহিদা বাড়বে।

সুদে কর ছাড়ের দাবি তুলেছে ব্যাঙ্কিং শিল্প। ডাকঘরে বেশি সুদ এবং শেয়ার-ফান্ডের লগ্নি বেশি লাভজনক হওয়ায় ব্যাঙ্ক থেকে মোটা টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে এই সব ক্ষেত্রে। ফলে ঋণের চাহিদা বাড়লেও আমানত বৃদ্ধি তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না। তাই মানুষকে ব্যাঙ্কে বেশি টাকা রাখায় উৎসাহ দিতে করের ক্ষেত্রে সুবিধার দাবি জানিয়েছে তারা।

বাস্তবে কতটা কী সুবিধা মিলছে, জানা যাবে ২৩ জুলাই। সে দিন সংসদে বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটের বড় প্রভাব থাকে শেয়ার বাজারে। তাই তার মুখে বহু লগ্নিকারী লেনদেন কমিয়ে অপেক্ষা করেন। বাজেট তাকে আরও তোলে নাকি ফেলে, তা-ই এখন দেখার।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement