—প্রতীকী চিত্র।
প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) প্রকল্পে সুবিধা বাড়ল নিয়োগকারীদের। নতুন নির্দেশ অনুসারে, এখন থেকে পিএফের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বাকি রাখলে আগের থেকে কম জরিমানা (ড্যামেজ) দিতে হবে তাঁদের। তবে এই ব্যবস্থায় পিএফের টাকা বাকি রাখার প্রবণতা বাড়তে পারে এবং পিএফের আয় কমতে পারে বলে মনে করছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
এত দিন টাকা বাকি রাখলে বকেয়ার উপরে ২ মাস পর্যন্ত বছরে ৫% হারে জরিমানা গুনতে হত নিয়োগকারীকে। ২ মাসের পর থেকে ৪ মাস পর্যন্ত ওই হার ছিল বছরে ১০%। ৪ মাসের বেশি থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ১৫% এবং ৬ মাসের বেশি হলে ২৫% হারে জরিমানা গুনতে হত। তবে জরিমানার অঙ্ক বকেয়ার থেকে বেশি হত না। অর্থাৎ বকেয়ার মোট অঙ্কই ছিল জরিমানার ঊর্ধ্বসীমা। এ ছাড়া বকেয়া টাকার উপরে ১২% হারে সুদও গুনতে হত নিয়োগকারীদের।
গত ১৪ জুন থেকে এই নিয়মই বদলানো হয়েছে। এ জন্য সংশোধন করা হয়েছে ১৯৫২ সালের পিএফ আইন। বলা হয়েছে, নতুন ব্যবস্থায় প্রতি মাসে ১% হারে জরিমানা দিলেই চলবে। বকেয়া মেয়াদের আর কোনও ভাগাভাগি থাকছে না। তা ছাড়া বকেয়া টাকার উপরে আগের মতোই ১২% হারে সুদ দিতে হবে। তবে পুরনো নিয়মের মতো জরিমানার কোনও ঊর্ধ্বসীমা নতুন ব্যবস্থায় রাখা হয়নি।
প্রসঙ্গত, সদ্য চালু হওয়া ব্যবস্থার আওতায় রয়েছে কর্মীদের পিএফ খাতে নিয়োগকারীর দেয় টাকা, পেনশন এবং বিমা বাবদ বকেয়া। পিএফ দফতর সূত্রে খবর, এত দিন চলে আসা নিয়মে জরিমানা আদায় করে পুরো বকেয়া টাকা তুলতে সময় লাগত প্রায় চার বছর। নতুন ব্যবস্থায় লাগবে তার দ্বিগুণ, আট বছর।
নতুন ব্যবস্থাটিকে স্বাগত জানিয়েছেন মালিকপক্ষ। মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নমিত বাজোরিয়া বলেন, ‘‘অনেক সময়েই সংস্থার মালিকেরা অনিচ্ছাকৃত ভাবে পিএফের বকেয়া রাখতে বাধ্য হন। নতুন ব্যবস্থা দেশে ইজ় অব ডুইং বিজ়নেস বা ব্যবসার পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে একটি ভাল পদক্ষেপ।’’
তবে জরিমানার হার পরিবর্তনের সমালোচনা করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, ‘‘নতুন ব্যবস্থাটি মালিকদের স্বার্থের কথা ভেবেই নেওয়া হয়েছে। তবে এতে বকেয়া রাখার প্রবণতা বাড়তে পারে। তা ছাড়া পিএফের আয়ও কমবে।’’ এআইইউটিইউসি-র অন্যতম নেতা এবং পিএফের অছি পরিষদের সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্যের তোপ, ‘‘কেন্দ্রে এনডিএ সরকার তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে প্রথমেই মালিকদের স্বার্থের কথা ভাবল। অথচ পিএফের ন্যূনতম পেনশন বৃদ্ধির দাবি মেটানো নিয়ে তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। দীর্ঘ দিন ধরে সেই দাবিকে তারা উপেক্ষা করে চলেছে।’’