—প্রতীকী চিত্র।
বছরে দু’কোটি কাজ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে কুর্সিতে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’দফায় দশ বছরের জমানা শেষে আরও একটি লোকসভা ভোটের মুখে সেই কাজই এখন তাঁর অন্যতম মাথাব্যথা। বিরোধীদের অভিযোগ, উল্টে বেকারত্ব বেড়েছে বিপুল। কিছু দিন আগে খোদ সরকারি সমীক্ষাতেই উঠে এসেছিল, ২০২২-এর জুলাই থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত দেশে প্রতি ১০০ জন স্নাতকের মধ্যে প্রায় ১৩ জন কর্মহীন। এই পরিস্থিতিতে একাংশের দাবি, কর্মসংস্থানের কোনও দিশা দেখাতে পারল না বৃহস্পতিবারের বাজেট। অন্য অংশ অবশ্য বলছে, অন্তর্বর্তী বাজেটে খুব চমকপ্রদ কিছু ঘোষণা যে থাকবে না, তা বলেইছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তবু যেটুকু করা হয়েছে, তার মধ্যে পরিকাঠামোর উন্নতিতে বিপুল আর্থিক বরাদ্দ থেকে শুরু করে যুব সম্প্রদায়কে ৫০ বছরের সুদহীন ঋণ দেওয়ার জন্য এক লক্ষ কোটি টাকার তহবিল তৈরি কিংবা সৌর বিদ্যুতে জোর, পর্যটনে উন্নতি — প্রায় সব কিছুই প্রচুর মানুষের রোজগারের ব্যবস্থা করে দেবে। বাজেট বক্তৃতায় সে কথা জানিয়েছেন নির্মলাও।
এই প্রেক্ষিতে বিরোধী শিবির-সহ সংশ্লিষ্ট মহল অবশ্য ফের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বাস্তবকে স্বীকার করতে না চাওয়ার অভিযোগই তুলেছেন। তাদের প্রশ্ন, আত্মনির্ভর ভারত, সমাজের সকলের জন্য উন্নয়ন এবং গরিব মানুষের কল্যাণের যে বার্তা এ দিনও দেওয়া হল, সকলের আয়ের লক্ষ্য পূরণ না হলে তা কি আদতে অর্থহীন নয়? কারণ উদ্যোগপতি তৈরি এবং কর্মসংস্থানের জন্য মোদী সরকারের পথ তৈরি করে দেওয়ার যে কথা অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তা বাস্তব ছবিকে তুলে ধরছে না। এ দিন নির্মলা বলেন, ‘‘আরও বেশি চাকরি এবং নতুন উদ্যোগের পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতি নতুন শক্তি পেয়েছে। উন্নতির ফল দেশের মানুষের কাছে পৌঁছতে শুরু করেছে।’’ কৃষি ক্ষেত্রেও ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিভিন্ন পক্ষের অনেকেই বলছেন, অন্তর্বর্তী বাজেটেও যে সরকার কার্যত আগামী পাঁচ বছরের জন্য উন্নয়নের বার্তা দিতে পারছে, তাদের পরিকল্পনায় ‘চাকরি’ সম্পর্কে নির্দিষ্ট রূপরেখা বাঞ্ছনীয় ছিল। বিশেষত বেকারত্ব যেখানে এখনও যথেষ্ট চড়া। উল্টে তার বদলে এসেছে কর্মসংস্থানে ১০ বছরের সাফল্যের খতিয়ান। অর্থ মন্ত্রকের বাজেট নথিতে দেওয়া ভারতীয় অর্থনীতির উন্নতির রেখচিত্রে দেখানো হয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১%। সেখান থেকে টানা নেমে গত অর্থবর্ষে তা হয়েছে ৩.২%। তবে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের গত বছরের জুলাই থেকে এ বছর জুন পর্যন্ত করা সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৩.৪%। যা তার আগের বছরের ওই সময়ের প্রায় ১৫% (১৪.৯%) থেকে কিছুটা কম।