প্রতীকী ছবি।
এক বছর আগে আজকের দিনে রাত পেরোলেই দেশ জুড়ে লকডাউন। যে দিন থেকে স্তব্ধ হবে ব্যবসা-বাণিজ্য, কাজ-কারবার। শুনশান হবে পথঘাট। বাজার থেকে উধাও হবে চাহিদা। এক বছর পেরিয়ে সব কিছুই ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে। শুধু চিন্তায় রাখছে কর্মসংস্থান। এটা ঠিক যে, অতিমারি হানা দেওয়ার পরে বেকারত্ব যে ভাবে মাথা তুলেছিল, তার তুলনায় পরিস্থিতি এখন অনেকখানি শুধরেছে। কিন্তু অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যতটা আশা করা হয়েছিল, তত দ্রুত বাড়েনি কর্মসংস্থান। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারিতেও বেকারত্বের হার ৬.৯%। গত বছরের এই সময়ের ৭.৮ শতাংশের তুলনায় সামান্য কম। সে বার মার্চে তা ছুঁয়েছিল ৮.৭৫%। আর তার পরে গোটা দেশে কাজ বন্ধ থাকার মাসুল গুনে আরও চড়তে থাকে। কিন্তু এখন কাজ ফের শুরু হলেও নিয়োগে ধারাবাহিক উন্নতি ফেরেনি।
একাংশের মতে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ফের দেশের আর্থিক কর্মকাণ্ডে তালা ঝুলিয়ে না-দিলে এবং প্রতিষেধক প্রয়োগের মাধ্যমে তাকে শুরুতেই শক্ত হাতে থামানো গেলে ভয় কাটবে। অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো আরও নিশ্চিত হলে, উৎপাদন বাড়াতে, পরিষেবা দিতে আরও মানুষকে কাজে নেওয়া হবে। এর আগে গত এপ্রিলে বেকারত্বের হার হয়েছিল ২৩.৫%। মে মাসেও ছিল ২১.৭%। জুনে কিছুটা নেমে দাঁড়ায় ১০.২ শতাংশে। জুলাইতে ৭.৪%, অগস্টে একটু বেড়ে ৮.৩%। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, তার পর থেকেই ধীরে ধীরে অতিমারিজনিত বাধানিষেধ কাটতে থাকে। বিক্রিবাটা শুরু হয়। একে জমে থাকা চাহিদা, তার উপরে আসন্ন উৎসবের মরসুমে ভর করে কেনাকাটা কিছুটা ছন্দে ফিরতে শুরু করে। তবে সিএমআইই বলছে, বেকারত্বের হার ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই w৬.৫% থেকে ৭ শতাংশের মধ্যেই। ডিসেম্বর অবশ্য ছুঁয়েছিল ৯.১%।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, লকডাউনে বহু লোকের চাকরি যেমন গিয়েছিল, তেমনই অনেকে চাকরির আশা নেই বুঝে ও সংক্রমণের ভয়ে নিজেই সেই বাজার থেকে সরেছিলেন। তবে এখন আস্তে আস্তে ফিরে আসছেন। তাই বেকারত্ব চোখে পড়ার মতো কমছে না। সিএমআইই-র হিসেবেও কাজের বাজারে উন্নতির ইঙ্গিত রয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, অর্থনীতির উন্নতির জন্য নিয়োগে যে ধারাবাহিকতা জরুরি, তা আসবে কল-কারখানায় পুরোদমে উৎপাদন শুরু এবং পরিষেবা ক্ষেত্রের ব্যবসার ছবিটা আরও উজ্জ্বল হওয়ার পরে। তখন শহর ও শিল্পাঞ্চলে আরও বেশি মানুষের চাকরি পাওয়ার পথ চওড়া হবে, যেটা এখন কার্যত থমকে আছে।