ছবি পিটিআই।
নোট বাতিল কিংবা তড়িঘড়ি জিএসটি চালু অথবা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ, বিভিন্ন সময়ে এমন নানা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। করোনাকালে তেলের বিপুল শুল্ক বাড়িয়ে জ্বালানির দরের দৌড়ে ইন্ধন জোগানো বা সরাসরি মানুষের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার বদলে ঋণ নির্ভর ত্রাণ প্রকল্পের ঘোষণাও নানা মহলের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কিন্তু মহাকাশ ক্ষেত্রে পা রাখা বেসরকারি সংস্থাগুলির সংগঠন ইন্ডিয়ান স্পেস অ্যাসোসিয়েশনের (ইসপা) উদ্বোধনী মঞ্চে সোমবার প্রধানমন্ত্রী কার্যত সেই সব অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করলেন, এতটা দৃঢ় ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, এমন সরকার দেশে আগে কখনও ছিল না। দাবির সমর্থনে উদাহরণ হিসেবে টানলেন সদ্য এয়ার ইন্ডিয়া-র বিলগ্নিকরণের। তবে মোদী সরকারের সংস্কারমুখী ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েও এ দিন শিল্প-কর্তাদের মতে, এখনও বহু অনুমোদন পেতে অনেক সময় লাগে। তা নিয়ে মোদীকে ব্যক্তিগত ভাবে নজর দেওয়ার আর্জিও জানালেন তাঁরা।
গত বছরে মহাকাশ এবং এ সংক্রান্ত ক্ষেত্রের বিস্তারের লক্ষ্যে আরও বেশি করে সেটিকে বেসরকারি শিল্পের কাছে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদী সরকার। তখনই এই ক্ষেত্রে যুক্ত বেসরকারি শিল্প মহলকে একটি সংগঠন গড়ার প্রস্তাবও দেন মোদী। এ দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই সংগঠনেরই আত্মপ্রকাশ ঘটল। ইসপা-র অনলাইন সভায় ভারতী এয়ারটেলের কর্ণধার সুনীল মিত্তল জানান, তাঁদের শাখা সংস্থা ওয়ান ওয়েব ভারতের মাটি থেকে ইসরোর মাধ্যমে প্রথম বেসরকারি সংস্থা হিসেবে উপগ্রহ পাঠাবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সেটির মারফত এ দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা দিতেও শুরু করবে তারা।
টেলিকম প্রযুক্তি অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছতে না-পারলেও উপগ্রহ নির্ভর প্রযুক্তি সেই বাধা দূর করতে পারে। এ দিন মোদীর দাবি, গত সাত বছরে অপচয় রুখে দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তে নানা পরিষেবা এ ভাবে দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এত এই মহাকাশ ক্ষেত্রে মূলত সরকারি গণ্ডিতেই আটকে ছিল। আর পাঁচটা ক্ষেত্রের মতোই সেই দরজাও বেসরকারি শিল্প মহলের কাছে খুলে দিতে চান তাঁরা। মহাকাশ ক্ষেত্রে সংস্কার সেটারই অঙ্গ দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘ভারতে এমন নির্ণায়ক সরকার কখনও ছিল না।’’ কারণ আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ক্ষেত্রে তাঁদের ভাবনা স্বচ্ছ।
সেই সঙ্গে মহাকাশ প্রযুক্তি দ্রুত জোগান ব্যবস্থা গড়া কিংবা উন্নত সুরক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের উন্নত পূর্বাভাস দিতে সাহায্য করবে বলেও বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। আর সে জন্য জোর দেন, ডেটার মতোই সকলের কাছে সেই প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছনোর উপরে। মহাকাশ ক্ষেত্রে মহিলাদের ভূমিকা আগামী দিনে আরও বাড়বে বলেও তাঁর আশা।
এ দিন সভায় এয়ারটেল, টাটা গোষ্ঠীর নেলকো-সহ ১৫টি সংস্থা এবং স্টার্ট-আপের প্রতিনিধিরা মহাকাশ-টেলিকম নীতি প্রণয়ন, দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নির কৌশল স্থির করতে লাইসেন্স বিধির স্বচ্ছতা, দ্রুত অনুমোদন, ভর্তুকি বা উৎপাদন ভিত্তিক আর্থিক সুবিধা নীতি (পিএলআই) ইত্যাদির পক্ষে সওয়াল করেন।