লকডাউনে দেশের অর্থনীতি বেহাল হলেও ক্রমশই ফুলেফেঁপে উঠেছে মুকেশ অম্বানীর কোষাগার। —ফাইল চিত্র।
এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তির মুকুটে এ বার নয়া পালক। বিশ্বের সেরা দশ ধনীর তালিকায় জায়গা করে নিলেন রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ অম্বানী। ওর্যাকল কর্পোরেশনের ল্যারি এলিসন বা ফ্রান্সের ফ্রাসোয়াঁ বেটেনকোর্ট মায়ার্সকে টপকে এই মুহূর্তে বিশ্বের ন’নম্বর ধনী ব্যক্তি মুকেশ। এবং এই প্রথম বার। এমনটাই জানিয়েছে ব্লুমবার্গ বিলিয়োনেয়ার্স ইনডেক্স। এই বিলিয়োনেয়ার্স ক্লাবে মুকেশের সঙ্গী হিসাবে রয়েছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, বিল গেটস বা ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের মতো ধনকুবেররা।
লকডাউনে দেশের অর্থনীতি বেহাল হলেও ক্রমশই ফুলেফেঁপে উঠেছে মুকেশ অম্বানীর কোষাগার। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধারের সংস্থায় মাত্র ছ’সপ্তাহেই এসেছে সাত-সাতটি আকর্ষণীয় চুক্তি। যার ফলে আগামী মার্চের আগে, অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সময়সীমার বহু আগেই মিটিয়ে ফেলেছে সংস্থার যাবতীয় ঋণ। নিট ফল, এশিয়া থেকে একমাত্র ভারতীয় হিসাবে বিশ্বের সেরা দশ জন ধনীর মধ্যে ঢুকে পড়েলেন মুকেশ অম্বানী।
শুধুমাত্র সংখ্যার হিসাবেও চোখ কপালে তোলার মতো সম্পদ রয়েছে সম্পদ রয়েছে মুকেশের সংস্থা রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের কোষাগারে। সংস্থার নিট সম্পদ এই মুহূর্তে ৬ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার। যার জেরে এশিয়া থেকে একমাত্র ভারতীয় হিসাবে বিশ্বের সেরা দশ ধনীর তালিকায় ঢুকে পড়েছেন মুকেশ।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের নির্দেশে পোয়াবারো অসাধু করদাতাদের
আরও পড়ুন: ভাড়া জটে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির ছ্যাঁকা উধাও বাস, দুর্ভোগ বাড়ছে যাত্রীদের
রিলায়্যান্স-এ ৪২ শতাংশ শেয়ারের মালিক মুকেশ অম্বানী গত দু’মাসে একের পর এক চুক্তি সেরেছেন বিশ্বের তাবড় সংস্থার সঙ্গে। এর সবক’টি হয়েছে তাঁর মালিকানাধীন জিয়ো প্ল্যাটফর্মের ডিজিটাল ব্যবসার হাত ধরে। লকডাউনের ফলে দেশীয় অর্থনীতির বেহাল দশার প্রভাব পড়েছে তাঁর ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যেও। করোনা-সঙ্কটের জেরে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা কমেছে, বিক্রিবাটা তলানিতে ঠেকেছে। তার ধাক্কা লেগেছে রিলায়্যান্সের তেল ব্যবসাতেও। তবে তেল-ব্যবসায় লোকসান হলেও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের দাহিদাকে কাজে লাগিয়েছেন মুকেশ। গত দু’মাসে মূলত জিয়োর মাধ্যমেই মুনাফা কামিয়েছেন ৬৩ বছরের মুকেশ। জিয়োকে হাতিয়ার করেই বাজিমাত করেছেন তিনি। লকডাউনের মধ্যেই একে একে ফেসবুক, কেকেআর, ভিস্তা, সিলভার লেক-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি ও লগ্নিকারী সংস্থার বিপুল লগ্নি এসেছে তাঁর সংস্থায়। জিয়ো প্ল্যাটফর্মের প্রায় ২৫ শতাংশ অংশীদারি বিক্রি করে মাত্র দু’মাসেই ১.১৫ লক্ষ কোটি ঘরে তুলেছেন মুকেশ। জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইকনমিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিং-এর প্রধান জয়তী ঘোষ বলেন, “কোভিড-১৯ ঠেকাতে লকডাউনের জেরে যখন ভারতের অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসের মুখে চলে গিয়েছে, সে সময় অম্বানীর সংস্থাগুলি বিশেষ করে টেলিকম জায়ান্ট জিয়ো সমৃদ্ধ হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদেও যথেষ্ট বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।”