আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পরের অর্থবর্ষের (২০২৩-২৪) বাজেট পেশ করবেন। প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব বাজারে ভারতকে পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্র হিসাবে তুলে ধরতে চায় মোদী সরকার। কিন্তু শুক্রবার কেন্দ্রের পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) দেওয়া প্রাথমিক পূর্বাভাসে দেখা গেল, চলতি অর্থবর্ষে সেই উৎপাদন শিল্পই বেকায়দায়। গত বছর ৯.৯% বৃদ্ধি দেখলেও, এ বার তার হার হতে পারে ১.৬%। বৃদ্ধির হার কমতে পারে নির্মাণ ও খনন শিল্পেও। এনএসও-র অনুমান, এ বার জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৭%। যা গত অর্থবর্ষের (২০২১-২২) ৮.৭% বৃদ্ধির তুলনায় কম তো বটেই। কেন্দ্রের আগের ৮%-৮.৫% অনুমানের থেকেও নীচে।
সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, চাহিদার ঝিমিয়ে থাকা এবং কল-কারখানার উৎপাদনে ধাক্কার ফলেই বৃদ্ধির গতি শ্লথ হবে বলে আশঙ্কা। সত্যিই তা ৭ শতাংশে আটকে গেলে সৌদি আরবের কাছে দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি হওয়ার তকমা হারাতে পারে ভারত। কারণ পশ্চিম এশিয়ার ওই দেশটির জিডিপি ৭.৬% হারে বাড়তে পারে বলে আশা। এর আগে জুলাই-সেপ্টেম্বরেও তারা ৮.৭% বৃদ্ধি দেখেছে, যেখানে ভারতে জিডিপি বেড়েছিল ৬.৩% হারে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, লাগাতার চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জোগান সঙ্কট, চড়া মূল্যবৃদ্ধি, সুদের হার বৃদ্ধি এবং শ্লথ চাহিদা বিশ্ব অর্থনীতিতে তীব্র অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। ভারতীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে বলে কেন্দ্র বারবার দাবি করলেও, বিশ্ব বাজারের কারণে আশঙ্কা বহাল থাকার কথা মেনেছে তারাও। ৭% আর্থিক বৃদ্ধির প্রাথমিক পূর্বাভাসও তারই প্রমাণ। অনিশ্চয়তার কারণে এর আগে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছেঁটে ৭.৮% থেকে ৬.৮ শতাংশে নামিয়েছে। কেন্দ্রের এই হার অবশ্য তার থেকে বেশি। বিভিন্ন মূল্যায়ন ও আর্থিক সংস্থাও তা কমিয়েছে। যা ৭ শতাংশের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পরের অর্থবর্ষের (২০২৩-২৪) বাজেট পেশ করবেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বরাদ্দ এবং পূর্বাভাসের হিসাব কষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এনএসও-র প্রাথমিক পূর্বাভাসে দেওয়া পরিসংখ্যানগুলি।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, বেকারত্বও ঝুঁকির মুখে ফেলেছে অর্থনীতিকে। পণ্যের দাম যখন চড়া, তখন হাতে কাজ না থাকলে কেনাকাটা বাড়ার প্রশ্ন নেই। অথচ চাহিদা ঢিমে থাকলে সংস্থাগুলিও নিয়োগ বাড়াতে পারবে না। সম্প্রতি বিভিন্ন বণিকমহল তাদের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছে আয়কর কমানোর। তাদেরও যুক্তি ছিল, কর না কমলে মানুষের হাতে খরচ করার বাড়তি টাকা থাকবে না। ফলে বাড়বে না চাহিদা।