সম্ভাব্য ওষুধের খরচ এবং তার দাম বৃদ্ধির অঙ্কটা ধরা হয় না। প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে নব্বই বছরের মা। নিজেরও বয়স মধ্য ষাটে। স্ত্রীর অবসর দরজায় কড়া নাড়ছে এবং সরকারি পেনশনের সুযোগ কারও নেই। সন্তান প্রবাসী। আর্থিক সাহায্যের জন্য সন্তানের উপর নির্ভর করতে নারাজ তাঁরা। মাসের প্রথমে তিনি দুশ্চিন্তায় থাকেন মাসিক বাজারের হিসাব নিয়ে। খাবার বা প্রাত্যহিক প্রয়োজনের খরচ মেটানোর যথেষ্ট সংস্থান তাঁর এখনও আছে। যথেষ্ট বলতে এমন নয় যে তিনি ফেলে ছড়িয়ে খরচ করতে পারেন। কিন্তু তাঁদের যা আয় তাতে কুলিয়ে যায়।
তাই যদি হয় তা হলে দুশ্চিন্তা কী নিয়ে? এই প্রশ্নটা স্বাভাবিক। তাঁর দুশ্চিন্তার জায়গাটা হল চিকিৎসার খরচ নিয়ে। কোভিডের ঠিক আগে গোটা পরিবারের ওষুধের খরচ ছিল সাড়ে নয় হাজারের মতো। আর এখন সেই একই ওষুধের খরচ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৪ হাজারে। একই দোকান থেকে কেনা। তাই উনি রাত দিন এক করে অনলাইন ওষুধের দাম তুলনা করে চলেছেন।
ভাবতেই পারেন উনি হয়তো হিসাব করে সঞ্চয় করেননি। কিন্তু তার থেকেও বড় ব্যাপার হল সঞ্চয়ের হিসাবে মেডিক্যাল ইন্সিওর্যান্সের প্রিমিয়াম ধরা। যা ধরা হয় না তা হলে সম্ভাব্য ওষুধের খরচ এবং তার দাম বৃদ্ধির অঙ্কটা। ভেবে দেখুন গত পাঁচ বছর ধরে চিকিৎসা ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতির হার হল ১৪ শতাংশ! আমরা কিন্তু এই অঙ্কটা কখনওই করে দেখি না। অনেকেই বলবেন ওষুধ বাবদ খরচ হিসাব করা খুব মুশকিল কারণ অসুস্থতার হিসাব করা মুশকিল।
তবে আজকাল প্রেশার, সুগার আর কোলেস্টেরলের ওষুধ তো ঘরে ঘরে। মাস গেলে দু’জনের ওষুধের খরচ আজকে দাঁড়িয়ে বেশির ভাগ বাড়িতেই হাজার পাঁচেক ছুঁয়ে যায়। তাই আজকের পাঁচ হাজার আগামীতে কত হব তা কিন্তু হিসাব করতে হবে ১৪ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি ধরেই। কথায় আছে সাবধানের মার নেই। তাই অঙ্কটা এখনই করে ফেলুন।