নতুন বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল (২০২২) দেশের বৈচিত্রের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে বলে অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহলে। প্রতীকী ছবি।
নতুন বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল (২০২২) দেশের বৈচিত্রের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে বলে অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহলে। বিদ্যুৎ যুগ্ম তালিকায় থাকলেও, এটি পাশ হলে রাজ্যগুলির ক্ষমতা খর্ব করে মোদী সরকারের হাতেই তা কেন্দ্রীভূত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে— এই দাবি করে শনিবার বিষয়টি নিয়ে জনমত গড়ে তোলার পক্ষে সওয়াল করলেন বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ ও সাংসদেরা।
কেন্দ্রের দাবি, এই নতুন বিলের হাত ধরে রক্ষা হবে গ্রাহক স্বার্থ, বাড়বে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা। কিন্তু তাতে শুরু থেকেই দলমত নির্বিশেষে তীব্র আপত্তি উঠেছে। প্রতিবাদের পথে হেঁটেছেন এই শিল্পের কর্মী, এঞ্জিনিয়ারেরাও। এ দিন ফোরাম অব সায়েন্টিস্টস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টস এবং মনোরঞ্জন রায় এনার্জি এডুকেশন সেন্টার আয়োজিত সভায় রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ গুহ, অর্থনীতিবিদ রতন খাসনবীশ এই বিলের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের বক্তব্য, এতে কেন্দ্র ও ব্যক্তিগত পুঁজিপতিদের হাতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ হবে। তা ছাড়া লাভজনক জায়গা বাদে বেসরকারি সংস্থা আদৌ প্রান্তিক এলাকায় বিদ্যুৎ বণ্টনে আদৌ আগ্রহী হবে না। ফলে বিদ্যুতের সাধারণ ও প্রান্তিক গ্রাহকের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিকাশবাবুর দাবি, সংবিধানে দেশের যে বৈচিত্রময় কাঠামোকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল, এই বিলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে তা খর্ব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চাষের ক্ষেত্রে কম খরচে এর জোগান নিয়েও আশঙ্কা থাকছে। কেন্দ্রের প্রস্তাব মতো বিদ্যুতের খরচ কমানোর দাবি আদৌ কতটা বাস্তবোচিত, তা নিয়ে সন্দিহান অনির্বাণবাবুও। এই বিলের সংশয়ের দিকগুলি তুলে ধরতে নিয়ে জনমত গড়ার আহ্বান জানান তিনি। তাঁরআশঙ্কা, এতে রাজ্যগুলির নিয়ন্ত্রণ কমিশনের বদলে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের হাতেই রাশ চলে যেতে পারে। যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির কথা বিলে বলা হচ্ছে, চালু আইনেই তার সুযোগ রয়েছে বলেও দাবি তাঁর।
আর রতনবাবুর প্রশ্ন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ হ্রাসে জোর না-দিলে শুধুমাত্র বণ্টন ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে কী ভাবে মাসুল কমানো সম্ভব।তাঁর দাবি, এই বিলের মতো প্রায় একই ধরনের পদক্ষেপ করে ব্রিটেনের গ্রাহকদের সুরাহার বদলে ক্ষতি হয়েছে। তেমন বহির্বিশ্বের চাপ সত্ত্বেও এই ধরনের উদ্যোগকে রুখেছে ফ্রান্স।