—প্রতীকী চিত্র।
সাধারণ মানুষের জন্য বাড়ি কেনা সহজ করে দিয়েছে গৃহঋণ। বিশেষ করে বড় শহরের মানুষ গৃহঋণ নিয়ে সহজেই ফ্ল্যাট কেনেন। ছোট শহরগুলিতেও এখন ফ্ল্যাটের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে চাকরিজীবীরা সহজেই গৃহঋণ পান।
তবে অনেক সময়ই গ্রাহকরা বাড়ির ইএমআই সময়মতো পরিশোধ করতে পারেন না। এখন প্রশ্ন হল, গৃহঋণেরর কিস্তি পরিশোধ না করলে কী হয়? প্রকৃতপক্ষে, গৃহঋণকে সুরক্ষিত ঋণের বিভাগে রাখা হয়। তাই এর পরিবর্তে গ্রাহককে গ্যারান্টি হিসাবে ব্যাঙ্কের কাছে কোনও সম্পদ বন্ধক রাখতে হবে।
পর পর তিনটি কিস্তি না দিতে পারলে কী হয়?
কোনও গ্রাহক প্রথম কিস্তি পরিশোধ না করলে ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তেমন গুরুত্ব দেয় না। ব্যাঙ্ক মনে করে যে, কোনও কারণে একটি কিস্তি দিতে দেরি হচ্ছে। কিন্তু যখন গ্রাহক পর পর দু’টি কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন, তখন ব্যাঙ্ক প্রথমে একটি নোটিস পাঠায়। এর পরেও যদি গ্রাহক তৃতীয় কিস্তি দিতে ব্যর্থ হন, তখন ব্যাঙ্ক আবার ঋণ পরিশোধের জন্য আইনি নোটিস পাঠায়।
একই ভাবে তৃতীয় কিস্তি না দিলে, আইনি নোটিস দেওয়ার পরেও ঋণ পরিশোধ না হলে ব্যাঙ্ক গ্রাহককে ডিফল্টার ঘোষণা করে। এ ছাড়াও, ওই ঋণ অ্যাকাউন্টটিকে ব্যাঙ্ক অনুৎপাদক সম্পদ হিসাবে বিবেচনা করে। অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই সীমা ১২০ দিন। এই সময়সীমার পরে ব্যাঙ্ক ঋণ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু করে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নির্দেশিকা কী?
একটি সম্পত্তি সর্বদা সুরক্ষিত ঋণে বন্ধক রাখা হয়। যাতে ঋণ পরিশোধ না করার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক সেই সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ পুনরুদ্ধার করতে পারে। এটাই ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে সর্বশেষ বিকল্প। আরবিআয়ের নির্দেশিকা অনুযায়ী, গ্রাহককে ঋণ পরিশোধের জন্য অনেক সময় দেওয়া হয়। আইনি ভাবে ব্যাঙ্কের টাকা ফেরত পাওয়ার শেষ বিকল্প হল নিলাম। নিলাম থেকে প্রাপ্ত পরিমাণ ঋণের পরিমাণ অফসেট করে ব্যবহৃত হয়।
তিন মাস গৃহঋণ না দেওয়ার পর ব্যাঙ্ক গ্রাহককে আরও দু’মাস সময় দেয়। এতেও গ্রাহক টাকা না দিলে ব্যাঙ্ক গ্রাহককে সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য-সহ একটি নিলাম নোটিস পাঠায়। যদি গ্রাহক নিলামের তারিখের আগে অর্থাৎ নিলাম বিজ্ঞপ্তিরতারিখ থেকে এক মাস পরেও কিস্তি পরিশোধ না করেন, তা হলে ব্যাঙ্ক নিলামের আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে এগিয়ে যায়।
ছ’মাসের এই প্রক্রিয়া চলাকালীন গ্রাহক যে কোনও সময় ব্যাঙ্কের কাছে গিয়ে বকেয়া টাকা পরিশোধ করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারেন। ব্যাঙ্ক একবার গ্রাহককে ডিফল্টার ঘোষণা করলে তার প্রভাব পরে সরাসরি গ্রাহকের সিবিল বা ক্রেডিট স্কোরের ওপর। খারাপ সিবিল স্কোর বা ক্রেডিট স্কোরের কারণে ভবিষ্যতে ঋণ পেতে সমস্যা হতে পারে।