—প্রতীকী চিত্র।
আজকাল বেশির ভাগ মানুষ নানান ক্ষেত্রে ঋণের দ্বারস্থ হন। ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়, বিয়ে বা পড়াশোনা— ঋণের মাধ্যমে অনেকাংশেই অর্থনৈতিক দিক থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। তবে ঋণ নিয়ে তার কিস্তি না দিতে পারলে বিপদ। কেন?
যদি কোনও ব্যক্তি ৯০ দিনের বেশি মানে তিন মাসের বেশি সময় ধরে ঋণের কিস্তি না শোধ করেন, সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই ব্যাক্তিকে সর্বপ্রথম ইএমআই না দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করে। এর পর ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওই ব্যাক্তির দেওয়া কারণ যাচাই করে দেখে। পরে ওই ব্যক্তি ঋণ শোধে একান্ত অক্ষম হলে তাকে লোন সেটলমেন্ট বা নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে এতেও ক্ষতি হতে পারে আপনার।
বহু মানুষই নানা ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে বা ব্যবসার উন্নতির ক্ষেত্রে অনেকেই ঋণ নিয়ে থাকেন। তবে চাকরি হারানো, ব্যবসায় ক্ষতি বা অসুস্থতার মতো পরিস্থিতির কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধে সমস্যা দেখা দেয়।
এই অবস্থায় ঋণের কিস্তি বা ইএমআই পরিশোধ না করতে পারলে ঋণগ্রহীতার ওপর সুদ ও জরিমানা বৃদ্ধি পায়। এই ক্ষেত্রে মানুষ লোন সেটলমেন্টের পথে হাঁটেন। এতে সেই সময়ের জন্য স্বস্তি পাওয়া গেলেও পরে এর ফল খারাপ হয়।
সম্প্রতি পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলিকে ২০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে ঋণখেলাপিদের সঙ্গে পারস্পরিক চুক্তির মাধ্যমে এককালীন নিষ্পত্তি বা লোন সেটলমেন্টের নির্দেশ দিয়েছে। যাতে ছোট বকেয়া ঋণ নিষ্পত্তি করা যায়। ব্যাঙ্কগুলি অনেক ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতাকে ঋণ নিষ্পত্তির বিকল্প পথও বলে দেয়।
অনেক সময় ঋণগ্রহীতারাই ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং নিষ্পত্তির মাধ্যমে ঋণ মিটিয়ে নিতে চান। এককালীন ঋণ নিষ্পত্তিতে একবার টাকা ও মূল পরিমাণ জমা দিয়ে অ্যাকাউন্ট নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক সুদ, জরিমানা বা আইনি খরচ মকুব করে। ঋণগ্রহীতার টাকা পরিশোধের ক্ষমতা ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিষ্পত্তির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। নিষ্পত্তির পরিমাণ পরিশোধ করার পর ব্যাঙ্ক মোট বকেয়া পরিমাণ এবং নিষ্পত্তির পরিমাণের মধ্যে পার্থক্য লিখে ঋণ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এর ফলস্বরূপ তাৎক্ষণিক স্বস্তি পাওয়া গেলেও দীর্ঘমেয়াদে এর খুব একটা ভাল ফল পাওয়া যায় না। কারণ লোন অ্যাকাউন্ট স্ট্যাটাস ‘ক্লোজড’ এর বদলে ‘সেটেল়’ দেখায়।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এই তথ্য ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিতে যায়। এই ক্ষেত্রে, ক্রেডিট স্কোর একটি খারাপ প্রভাব ফেলে এবং পরবর্তী কয়েক বছর ধরে আপনি ঋণ বা ক্রেডিট কার্ড পেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।