ইনিংসের শুরুতে বর্ষা এ বার বেশ মন্থর। স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ১৫ দিন দেরিতে পৌঁছেছে মুম্বই ও দক্ষিণবঙ্গে। খরার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের বহু জায়গায়। অন্য দিকে অতিবৃষ্টিতে ভাসছে উত্তর-পূর্ব ভারত এবং উত্তরবঙ্গ। এর কোনওটাই অর্থনীতির জন্য ভাল নয়। ফলে লগ্নিকারীদের উদ্বেগ বাড়ছে। তার উপরে আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে বাজেট। দুরু দুরু বুকে শেয়ার বাজার এখন অপেক্ষা করে আছে যে মুহূর্তটির জন্য। দেশ-বিদেশের লগ্নিকারীরা জানতে উদগ্রীব, সংস্কারের হাত ধরে সেখানে অর্থনীতির এগিয়ে চলার কোনও দিশা দেখানো হয় কিনা। যে কারণে আগামী কয়েক দিন বাজার দুলবে মূলত বাজেটকে কেন্দ্র করেই।
এর পরে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের ফল প্রকাশ শুরু হবে। অর্থাৎ বাজারের অভিমুখ যে দিকেই থাকুক, উত্তেজনা থাকবে টানটান।
সেনসেক্স এখন ৩৯,০০০-এর উপরে থাকলেও তাতে দুর্বলতার লক্ষণ স্পষ্ট। গত শুক্রবার সূচকটি নেমেছে ১৯২ পয়েন্ট। নিফ্টিও ৫৩ পয়েন্ট নেমে থেমেছে ১১,৭৮৯ অঙ্কে।
এ দিকে, যা ভাবা হয়েছিল, সেটাই হল। কমল স্বল্প সঞ্চয়ের সুদ। তবে যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, ততটা নয়। আজ থেকেই ১০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমছে বিভিন্ন প্রকল্পে। টানা তিন বার ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে রেপো রেট (বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যে সুদে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ধার নেয়) কমা এবং ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ড ইল্ড ৭ শতাংশের নীচে চলে আসায় আশঙ্কা ছিল, এই দফায় ৩০ থেকে ৪০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানো হতে পারে সেগুলিতে। ছাঁটাই ততটা না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে লগ্নিকারীরা।
ব্যাঙ্কগুলির অভিযোগ, স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ বেশি থাকায় আমানত পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছিল। যদিও ১০ বেসিস পয়েন্ট সুদ ছাঁটাইয়ে ব্যাঙ্কগুলি খুশি হবে না। কারণ, এর পরেও স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদ ব্যাঙ্কের মেয়াদি আমানতের তুলনায় অনেকটাই বেশি থাকবে। যেমন, স্টেট ব্যাঙ্কের ৩ থেকে ৫ বছরের কম মেয়াদি জমায় সুদ যখন ৬.৮%, তখন ৫ বছর মেয়াদি জাতীয় সঞ্চয়পত্র এবং মেয়াদি জমায় সুদ যথাক্রমে ৭.৯% ও ৭.৭%। পিপিএফ এবং সিনিয়র সিটিজেন্স সেভিংস স্কিমে সুদ কমলেও তা যথাক্রমে ৭.৯% ও ৮.৬%।
অনেকে মনে করছেন, বিপুল জনাদেশ নিয়ে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পরেই মোদী সরকার হয়তো এক ধাক্কায় বেশি সুদ কমাতে চায়নি। ফলে তা কমতে পারে ধাপে ধাপে। শুক্রবার সরকারি ঋণপত্রের (১০ বছর মেয়াদি) ইল্ড কমে হয়েছে ৬.৮৭%।
সম্প্রতি একটি ভাল খবর পেয়েছে বাজার। গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে চলতি খাতে ঘাটতি কমে হয়েছে ৪৬০ কোটি ডলার। জিডিপির ০.৭%। দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাই যার কারণ বলে দাবি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের।
(মতামত ব্যক্তিগত)