বাজারে চলতি পাট বীজের মান নিয়ে কৃষক-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ বহু দিনের। তাতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশে কাঁচা পাটের ফলন তো কম হয়ই। খারাপ হয় তার মানও। বাড়ে খরচ। সমস্যা মেটাতে এই প্রথম সরকারি ভাবে পরীক্ষিত উন্নত মানের বীজ বাণিজ্যিক ভাবে বাজারে বেচবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পাট নিগম (জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া)। সামনের বছর চাষের মরসুম শুরুর আগেই সব রাজ্যে বিক্রির প্রক্রিয়া চালু করতে বলেছে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক।
সূত্রের খবর, নিগম ১০০০ টন পরীক্ষিত বীজ বিক্রি করবে। রাজ্যগুলির চাহিদার তুলনায় তা অনেক কম। তবে নিগমের দাবি, ধাপে ধাপে পরিমাণ বাড়বে। পাট উৎপাদনে প্রথম সারির রাজ্য হিসেবে বীজের সিংহভাগই অবশ্য কেনার সুযোগ পাবে এ রাজ্যের চাষিরা। কৃষি মন্ত্রকের অধীন জাতীয় বীজ নিগমই এই বীজ তৈরি করবে। সম্প্রতি এ ব্যাপারে চুক্তিও হয়েছে কৃষি ও বস্ত্র মন্ত্রকের।
বীজ নিগমের তৈরি যে উন্নত ও পরীক্ষিত বীজ পাট নিগম বণ্টন করে, তা এত দিন শুধু ভর্তুকিতে পেতেন বস্ত্র মন্ত্রকের অধীনে বিভিন্ন রাজ্যে চলা ‘জুট আই-কেয়ার’ প্রকল্পে নথিভুক্ত চাষিরা। রাজ্যে কৃষি দফতরের কর্তাদের দাবি, খরচ বেশি বলে এমনিতে এ রাজ্যে তেমন পাটের বীজ তৈরি হয় না। কিছু সরকারি কৃষি খামার প্রতি বছর বড়জোড় ৪-৫ টন করে উন্নত বীজ উৎপাদন করে।
চাষির লাভ
এত দিন সরকারি বীজ বিক্রি হত না বাজারে। যেগুলি হত, সেগুলির মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
পশ্চিমবঙ্গের বীজের চাহিদা প্রায় ৩৫০০ টন। ফলে বহু চাষিই বাধ্য হতেন নিম্নমানের পাট বীজ কিনতে।
এ বার যে কেউ চাইলে পাট নিগমের থেকে কিনতে পারবে সরকারি ভাবে পরীক্ষিত উন্নতমানের বীজ।
পাটের ফলন ও মান
ভাল হবে।
চাষের খরচ কমবে।
হেক্টর পিছু পাট উৎপাদন বেড়ে হতে পারে কমপক্ষে ৩০-৩২ কুইন্টাল।
এ বার পাট নিগমের থেকে সরকারি ভাবে পরীক্ষিত বীজ বাজার থেকে কিনতে পারবেন যে কেউ। বিধানচন্দ্র রায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কৌশিক ব্রহ্মচারীর দাবি, এতে পাট গাছের বৃদ্ধি, পাটের উৎপাদন ও আঁশের মান ভাল হবে। চাষের খরচও কমবে। নিগমের নিজস্ব ব্যবস্থাগুলি ছাড়াও কৃষকদের নিয়ে গঠিত বিভিন্ন সংস্থা, কৃষি সমবায় সমিতিগুলির মাধ্যমেও এই বীজ বিক্রি হবে।