Jute Mills

কম কর্মী দিয়ে কাজ, সমস্যার মুখে চটশিল্প

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন কাঁচা পাটের অভাব ও তার চড়া দামের কারণে বন্ধ হয়েছে বেশ কিছু চটকল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২১ ০৫:৩৫
Share:

ফাইল চিত্র।

তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যে বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণ রুখতে একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই কড়াকড়ির মধ্যে রয়েছে চটকলগুলিতে প্রতিটি শিফ্‌টে ৩০% কর্মীকে দিয়ে উৎপাদন চালু রাখার নির্দেশ। সংশ্লিষ্ট শিল্পের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্তের ফলে ধাক্কা খাবে চটের বস্তা উৎপাদন ও সরবরাহ। পরিস্থিতি এতটাই কঠিন হতে পারে যে, সাময়িক ভাবে সংশোধন করতে হতে পারে খাদ্যশস্য ভরতে বাধ্যতামূলক ভাবে চটের বস্তা ব্যবহার সংক্রান্ত আইনটিও। যা হলে আগামী দিনে আরও ক্ষতির মুখে পড়বে এই শিল্প।

Advertisement

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন কাঁচা পাটের অভাব ও তার চড়া দামের কারণে বন্ধ হয়েছে বেশ কিছু চটকল। কাজ হারিয়েছেন বহু শ্রমিক। এই অবস্থায় এ বার কম কর্মী দিয়ে কাজের নির্দেশ মানতে গেলে তাঁদের কী কী সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে, তা জানিয়ে রাজ্যকে চিঠি দিতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন চটকল মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (আইজেএমএ) চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত।

দেশে পাট শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বাধ্যতামূলক ভাবে খাদ্যশস্য ভরতে চটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৭ সালে ম্যান্ডেটরি জুট প্যাকেজিং অর্ডার আইন চালু করেছিল কেন্দ্র। যার আওতায় ১০০% খাদ্যশস্য এবং ২০% চিনি মোড়কের জন্য চটের বস্তা ব্যবহার করতেই হয়। কেন্দ্র এ জন্য চটকলগুলির থেকে বছরে ১০-১২ লক্ষ টন চটের বস্তা কেনে। যার অধিকাংশই জোগায় পশ্চিমবঙ্গের চটকলগুলি।

Advertisement

একাধিক চটকল মালিক জানিয়েছেন, রাজ্যে চালু থাকা ৬০টির মতো চটকলে দিনে ৪০০০ বেল বস্তা (১ বেল= ৫০০টি বস্তা) তৈরি হচ্ছে। আশঙ্কা, কর্মী সংখ্যা কমিয়ে চটকল চালু রাখতে হলে উৎপাদন প্রায় ৭০% কমতে পারে। এক চটকল মালিক বলেন, ‘‘এমনিতেই কাঁচা পাটের আকালে উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে। তার উপরে কর্মী সংখ্যা কমানোয় তা আরও বাড়তে চলেছে।’’ হিসেব বলছে, কাঁচা পাটের অভাবে বস্তা তৈরি ব্যাহত হওয়ায় ২ লক্ষ টন বস্তার বরাত সরবরাহ করা যায়নি। রাজ্যের সিদ্ধান্তে সেই বকেয়া আরও বাড়বে।

তা ছাড়া, সরকার চাষিদের কাছ থেকে যে খাদ্যশস্য কেনে, তা চটজলদি বস্তা বন্দি করতে হয়। আর সে জন্য যে বস্তা দরকার, তার বাজার দখলের জন্য চট ও প্লাস্টিকের বস্তা প্রস্তুতকারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে। আইজেএমএ-র আশঙ্কা, চাহিদা মতো বস্তা সরবরাহে চটকলগুলি ব্যর্থ হলে, ঘাটতি পূরণের জন্য প্লাস্টিকের বস্তার চাহিদা বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারের আইনি ব্যবস্থা পাকা করার জন্য সংশোধন করা হতে পারে বাধ্যতামূলক ভাবে চটের বস্তা ব্যবহার সংক্রান্ত আইনটি। আর তা হলে বিরূপ প্রভাব পড়বে পাট চাষি-সহ রাজ্যের পাট শিল্পের উপর।

রাঘবেন্দ্রবাবু জানান, তাদের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েই রাজ্যকে চিঠি দেবেন তাঁরা। আগামী কাল, সোমবার শিল্প প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজ্য যে বৈঠক ডেকেছে, তাতেও যোগ দেবে আইজেএমএ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement