Investing in Bonds

লগ্নিকারীর মুনাফা বৃদ্ধির ইঙ্গিত ঋণপত্রের বাজারে

গত বছর সেনসেক্স ৬১ হাজার থেকে পৌঁছেছিল ৭২ হাজারে। বৃদ্ধি ১৮%। মাঝারি এবং ছোট শেয়ারের সূচক বেড়েছিল আরও বেশি। তুলনায় ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের দাম বেড়েছে কম।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৪ ০৬:৫৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

শেয়ার এবং শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডে লগ্নিকারীদের ভাল কেটেছে ২০২৩। তুলনায় নিষ্প্রভ ছিল বন্ড অর্থাৎ ঋণপত্রের বাজার। চলতি বছরে শেয়ার বাজার যখন কিছুটা অনিশ্চয়তার কবলে, তখন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বন্ড বা ঋণপত্রের বাজারে।

Advertisement

গত বছর সেনসেক্স ৬১ হাজার থেকে পৌঁছেছিল ৭২ হাজারে। বৃদ্ধি ১৮%। মাঝারি এবং ছোট শেয়ারের সূচক বেড়েছিল আরও বেশি। তুলনায় ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের দাম বেড়েছে কম। বন্ডের দাম বাড়লে ইল্ড বা বন্ডের প্রকৃত আয় কমে। ইল্ড ৭.৩১% থেকে শুরু করে বছর শেষে হয় ৭.১৭%। অর্থাৎ বন্ডের দাম তেমন বাড়েনি। তার উপর বাজেটে খাঁটি বন্ড ফান্ড থেকে দীর্ঘকালীন মূলধনী কর সংক্রান্ত সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে ২০২৩ বন্ড এবং বন্ড ফান্ডের লগ্নিকারীদের হতাশই করেছে। ২০২৪-এ ছবিটা বদলাচ্ছে। বন্ডের দাম চড়ায় ইল্ড নেমেছে ৭.০৮ শতাংশে।

ধরা যাক, ৭.৫% সুদে ১০০ টাকা মূল দামের (ফেসভ্যালু) বন্ড বাজারে ছাড়া হল। সুদ ভাল দেখে বন্ডের চাহিদা বাড়ল। দাম বেড়ে হল ১১০ টাকা। কেউ ১১০ টাকায় তা কিনলে সুদ মিলবে ১০০ টাকার উপরেই (৭.৫০ টাকা)। ইল্ড ৬.৮২%। বন্ডের দাম কমে ৯০ টাকা হলে ইল্ড বেড়ে হবে ৮.৩৩%। অর্থাৎ ইল্ড কমা লগ্নিকারীদের জন্যে ভাল।

Advertisement

কেন আশা জাগাচ্ছে ২০২৪ সাল? কারণ— এক: খুচরো মূল্যবৃদ্ধি কমছে (৫.০৯%)। তা ৪ শতাংশের কাছে নামলেই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাতে পারে। তখন ঋণের পাশাপাশি সুদ কমবে আমানতেও। এতে বন্ডে ইল্ড নামবে। বাড়বে দাম। দুই: সরকারের লক্ষ্য রাজকোষ ঘাটতিকে চলতি অর্থবর্ষের ৫.৮% থেকে আগামী অর্থবর্ষে জিডিপির ৫.১% এবং তার পরের অর্থবর্ষে (২০২৫-২৬) ৪.৫ শতাংশে নামানো। ঘাটতি কমলে সরকারকে বন্ড ছেড়ে বাজার থেকে কম ধার করতে হবে। বন্ডের জোগান কমলে দাম বাড়বে। পড়বে ইল্ড। তিন: জেপি মর্গ্যান এবং ব্লুমবার্গ তাদের এমার্জিং মার্কেট সূচকে ভারত সরকারের বন্ডকে স্থান দেওয়ার কথা জানিয়েছে। অনুমান, বিষয়টি কার্যকর হলে মোট ৩০০০ কোটি ডলার (প্রায় ২,৪৯,০০০ কোটি টাকা) পর্যন্ত লগ্নি ঢুকতে পারে দেশের বন্ড বাজারে। জেপি মর্গ্যানের কারণে প্রায় ২৫০০ কোটি ডলার এবং ব্লুমবার্গের জন্য ৫০০ কোটি। এই দুই পথে সরকারি বন্ডের চাহিদা বাড়লে তার দাম বাড়বে বলে আশা। তখন দাম বাড়বে বেসরকারি বন্ডেরও। চাঙ্গা হবে ঋণপত্রের বাজার। চার: বন্ডের দাম বাড়লে এবং ইল্ড নামলে বন্ডের সুদ খাতে সরকারের খরচ কমবে। ব্যাঙ্ক এবং বিমা সংস্থাগুলি-সহ ছোট-বড় সব বন্ডে লগ্নিকারীদের বিনিয়োগমূল্য ফুলেফেঁপে উঠবে। এর সদর্থক প্রভাব পড়বে শেয়ার বাজারেও।

এখন প্রশ্ন হল, খুচরো লগ্নিকারীরা কেন বন্ডে লগ্নি করবেন? এক: ব্যাঙ্কের তুলনায় বেশি রিটার্ন চাইলে এবং শেয়ারের ঝুঁকি নিতে না চাইলে। দুই: উঁচু হারে করদাতারা কম করের সুবিধা নিতে চাইলে। ৩১.২% বা তারও বেশি করের আওতায় পড়লে ব্যাঙ্ক থেকে ৭.৫% সুদ পাওয়ার অর্থ, কর চুকিয়ে মাত্র ৫.১৬% রিটার্ন। তিন: এমন বন্ড ফান্ডে লগ্নি করা সম্ভব, যেখানে তহবিলের ৩৫ থেকে ৬৫ শতাংশ শেয়ারে খাটে। একে বলে ব্যালান্সড/মাল্টি অ্যাসেট হাইব্রিড ফান্ড। দীর্ঘকালীন মূলধনী লাভে পাওয়া যায় মূল্যবৃদ্ধি সূচক প্রয়োগের সুবিধা। তার পরে কর ধার্য হয় ২০%।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement