গত শুক্রবার বাজেট ঘোষণার পরেই শেয়ার বাজার পড়েছিল। আর সোমবার তা রীতি মতো ঝাঁকুনি দিল লগ্নিকারীদের।
এ বার বাজেটে অতি ধনী, অবিভক্ত হিন্দু পরিবার এবং ট্রাস্ট-সহ ব্যক্তি সমষ্টির সংগঠনের (অ্যাসোসিয়েশন অব পার্সনস) ক্ষেত্রে আয়করে সারচার্জের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ভারতের বাজারে লগ্নি করা বিদেশি ট্রাস্ট, পেনশন ফান্ডও এর আওতায় পড়ছে। বাজার সূত্রের খবর, এই সবেরই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সূচকের উপরে। এ দিন একটা সময়ে সেনসেক্স ৯০৭ পয়েন্ট পড়ে যায়। বাজার বন্ধের সময়ে তা হয় ৩৮,৭২০.৫৭ অঙ্ক। পতনের বহর ৭৯২.৮২ পয়েন্ট। এ দিনের পতনে বাজার থেকে মুছে গিয়েছে লগ্নিকারীদের ৩.৩৯ লক্ষ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, উঁচু আয়ের করদাতাদের সারচার্জ বাড়ার ফলে তাদের কর কার্যত বাড়বে ৭% পর্যন্ত। ২ কোটি থেকে ৫ কোটি পর্যন্ত তা বেড়েছে ৩%। ৫ কোটির বেশি আয়ের ক্ষেত্রে ৭%। যার ফলে মূল কর, সারচার্জ এবং শিক্ষা সেস মিলে করের সর্বোচ্চ হার দাঁড়াচ্ছে ৪২.৬৪%। যার প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে।
দিনভর
• সেনসেক্স পড়ল ৭৯২.৮২ পয়েন্ট। থামল ৩৮,৭২০.৫৭ অঙ্কে।
• দিনের এক সময়ে সেনসেক্স নেমেছিল ৯০৭ পয়েন্ট।
• ২৫২.৫৫ পয়েন্ট পড়ে নিফ্টি ১১,৫৫৮.৬০ অঙ্ক।
• এ বছরে এটাই বৃহত্তম পতন।
• এক দিনেই মুছে গেল লগ্নিকারীদের ৩.৩৯ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ।
• ডলারের সাপেক্ষে পড়ল টাকা। প্রতি ডলার ২৪ পয়সা বেড়ে ৬৮.৬৬ টাকা।
এডেলওয়েজ় অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সিইও রাধিকা গুপ্ত বলেন, ‘‘ট্রাস্টগুলিকে ওই সারচার্জ দিতে হবে মূলধনী লাভকরের উপরে। এতে তাদের করের বোঝা অনেকটাই বেড়ে যাবে।’’ এ দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে অর্থমন্ত্রকের বাজেট পরবর্তী বৈঠকের শেষে সারচার্জ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন উঠলে সেখানেই জবাব দেব। তবে বিশেষ ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’’ এ দিন অবশ্য আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারও পড়েছে। তবে তার কারণ আমেরিকায় কর্মসংস্থান বাড়ার ফলে সুদের হার কমার সম্ভাবনা কমা।
পতনের কারণ
• বাজেটে বছরে ২ কোটি টাকা বা তার বেশি আয়ে করে সারচার্জের প্রস্তাব। এতে ট্রাস্ট হিসেবে কাজ করা বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার কর বাড়ার আশঙ্কা।
• শেয়ার ফেরানোয় কর।
• বাধ্যতামূলক ভাবে নথিভুক্ত সংস্থার ন্যূনতম ৩৫% শেয়ার ছাড়ার প্রস্তাব।
• বৃদ্ধির গতি ফেরাতে স্পষ্ট দিশা বাজেটে না-থাকায়।
• গাড়ি শিল্পকে ত্রাণ না-দেওয়া।
• পেট্রল-ডিজেলে শুল্ক বাড়ানো ও বাড়তি সেস
বসানোর প্রস্তাব।
• এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে সংস্থার আর্থিক ফল তেমন ভাল না-হওয়ার আশঙ্কা।
• আমেরিকায় বেকারত্ব কমায় ফেডারেল রিজার্ভ ততটা বেশি হারে সুদ না-কমানোর আশঙ্কা। যার জেরে বিশ্ব জুড়ে সূচকে পতন।
• পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে নতুন ঋণ জালিয়াতি।