ফাইল চিত্র।
গত মাসে দু’টি বেনামী চিঠিতে বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছিল ইনফোসিসের সিইও সলিল পারেখ এবং সিএফও নীলাঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের সত্যাসত্য খতিয়ে দেখতে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। এরই মধ্যে আরও এক হুইসলব্লোয়ারের চিঠি বিদ্ধ করল সংস্থাটিকে। এ দফাতেও অভিযোগের তির পারেখের দিকেই। পর্ষদকে লেখা নাম ও তারিখহীন চিঠির মালিকের দাবি, তিনি সংস্থারই অর্থ দফতরের কর্মী এবং শেয়ারহোল্ডার। চিঠিতে বলা হয়েছে, সিইও নির্বাচনের সময়ে বেঙ্গালুরুতে থেকে সংস্থা পরিচালনার কথা থাকলেও সিইও বেশিরভাগ সময় মুম্বইয়ে থাকেন। সেখানে বেশ কয়েকটি সংস্থায় তাঁর লগ্নি রয়েছে। সেগুলি সামলানোর উদ্দেশ্যেই সেখানে থাকেন তিনি। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সংস্থার তরফে এই চিঠির ব্যাপারে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
চিঠিতে ওই হুইসলব্লোয়ারের দাবি, কর্মী তথা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে তিনি মনে করেন বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত। ইনফোসিসের অসংখ্য কর্মী ও শেয়ারহোল্ডারদের সংস্থার উপরে অগাধ বিশ্বাস রয়েছে। তাকে মর্যাদা দিতে কর্তৃপক্ষের উচিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। কারণ, সিইওর কিছু কাজকর্ম সংস্থার নীতি ও মূল্যবোধকে নষ্ট করছে। যেমন, সিইও মাসে অন্তত দু’বার মুম্বই থেকে বেঙ্গালুরু যাতায়াত করেন। অথচ, বেঙ্গালুরুতে সংস্থার প্রধান দফতরে সময় দেন খুবই কম। এর জন্য বিমানের বিজনেস ক্লাসের টিকিট এবং গাড়ির খরচ মিলিয়ে সংস্থার ২২ লক্ষ টাকা খরচ হয়। অভিযোগকারীর আরও দাবি, সিইও বেঙ্গালুরুতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সেটিও সংস্থাকে ভুল বোঝানোর জন্য। নিজের গ্রিন কার্ডের স্বীকৃতি বজায় রাখার জন্য তিনি প্রত্যেক মাসে আমেরিকায় যান। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণে বিভিন্ন সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তিনি।
সম্প্রতি অজ্ঞাতনামা এক গোষ্ঠী নিজেদের ইনফোসিসের কর্মী পরিচয় দিয়ে সংস্থার হিসেবে গরমিল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে। বলা হয়, স্বল্প মেয়াদে আয় ও মুনাফা বাড়াতে নীতিবিরুদ্ধ কাজে মদত জুগিয়েছেন সলিল পারেখ এবং নীলাঞ্জন রায়। এই ব্যাপারে ইনফোসিসের কাছে তথ্য তলব করে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তথ্য চেয়েছে আমেরিকার বাজার নিয়ন্ত্রকও। তবে ইনফোসিস স্টক এক্সচেঞ্জ এনএসই-কে জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রাথমিক ভাবে ওই অভিযোগের কোনও প্রমাণ তারা পায়নি। চেয়ারম্যান নন্দন নিলেকানি দাবি করেছেন, সংস্থার হিসেবের খাতা এতটাই পোক্ত যে, ঈশ্বরের পক্ষেও তা বদলানো সম্ভব নয়।