প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন রাজ্যে বিধিনিষেধ অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আশঙ্কা বাড়িয়েছে। এই অবস্থায় বুধবার সরকারি পরিসংখ্যান জানাল, মার্চে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শিল্পোৎপাদন বেড়েছে রেকর্ড ২২.৪%। অন্য দিকে, এপ্রিলে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার কমে হয়েছে ৪.২৯%। তিন মাসে সর্বনিম্ন। আপাতদৃষ্টিতে এই হিসেব খুশি হওয়ার মতোই। কিন্তু একে স্বস্তির ছবি বলতে নারাজ বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, গত বছর মার্চের শেষে শুরু হয়েছিল লকডাউন। ফলে শিল্পে উৎপাদন সঙ্কুচিত হয়েছিল ১৮.৭%। সেই নিচু ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে এই মার্চে শিল্প বৃদ্ধির হার যে দৈত্যের মতো দেখাবে, সেটা জানাই ছিল। তবে এতে বাড়তি উচ্ছ্বাসের কারণ নেই। মূল্যবৃদ্ধির মাথা নামানোর কারণকেও করোনার দ্বিতীয় কামড়ে চাহিদার ধাক্কা খাওয়া হিসেবে দেখছেন তাঁরা। দাম কমার স্বস্তি নয়।
কেন্দ্রের হিসেব বলছে, ২০২০-র মার্চে কল-কারখানায় উৎপাদন কমেছিল ২২.৮%। এ বার বেড়েছে ২৫.৮%। আগের বছর দীর্ঘ মেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন সঙ্কুচিত হয় যথাক্রমে ৩৬.৮% এবং ২২.৩%। বিভিন্ন শিল্পের উৎপাদনে কাজে লাগে এবং যার চাহিদা দেখে বাজারে সার্বিক বিক্রিবাটার ইঙ্গিত মেলে, সেই মূলধনী পণ্য উৎপাদনও কমেছিল ৩৮.৩%। এ বার মূলধনী পণ্য, দীর্ঘ মেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে তা বেড়েছে যথাক্রমে ৪১.৯%, ৫৪.৯% এবং ২৭.৫%। বৃদ্ধির পথে খনন (৬.১%) ও বিদ্যুৎ শিল্পও (২২.৫%)। তবে সব মিলিয়ে গত অর্থবর্ষে শিল্পোৎপাদন সঙ্কুচিত ৮.৬%।
এখানেই আশঙ্কার ছবি লুকিয়ে, মত সংশ্লিষ্ট মহলের। তারা বলছে, এ বারের বৃদ্ধি আগের বারের সঙ্কটের দান। সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে বিভিন্ন রাজ্য যে ভাবে বিধিনিষেধ এনে মানুষকে ঘরবন্দি রাখছে, তাতে শিল্প ফের ধাক্কা খেতে শুরু করেছে। ফলে অস্বস্তি রয়েই যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকের অবশ্য বার্তা, লকডাউনের মাসগুলির সঙ্গে তার পরের মাসগুলির তুলনা অনুচিত।
আনাজ এবং ডালের দাম কমায় খুচরো মূল্যবৃদ্ধিও মার্চের ৫.৫২% থেকে নেমেছে এপ্রিলে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটা সম্ভবত অতিমারির আবহে চাহিদার কমে যাওয়া। যেটা অর্থনীতির পক্ষে সুখবর নয়। চড়া তেলের দাম আগামী দিনে পণ্যের দাম বাড়িয়ে মানুষকে আরও চাপে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা একাংশের।