প্রতীকী ছবি।
ডলারের সাপেক্ষে আরও তলিয়ে গেল টাকার দাম। হুড়মুড়িয়ে পড়ল শেয়ার বাজার। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বহু লগ্নিকারী চড়া সুদের জমানায় ভারতের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে ভরসা রাখতে না পেরে শেয়ার বেচে মুনাফা তুলছেন। অনেকে নিরাপদ মনে করে আমেরিকান ডলারে পুঁজি ঢালছেন। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও ভারতে লাগাতার শেয়ার বেচছে। বুধবার যার অঙ্ক ছিল ২৯২০.৬১ কোটি টাকা। ফলে এই দিন এক দিকে সেনসেক্স ৭১০ পয়েন্ট পড়ে ৫১ হাজারের ঘরে নেমেছে। অন্য দিকে ডলারের চাহিদা বাড়ায় আরও চড়েছে তার দাম। রেকর্ড নীচে পিছলে গিয়েছে টাকা। ডলার ১৯ পয়সা বেড়ে এই প্রথম ৭৮.৩২ টাকা।
অনেক দিন ধরেই ভারতের শেয়ার বাজার অস্থির। মাঝে-মধ্যে উঠলেও নামছে বেশি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চলতি অর্থবর্ষে তার হাল ফেরার সম্ভাবনা কম। কারণ, এক দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কমার লক্ষণ নেই। অন্য দিকে দেশকে কোভিড শূন্য করতে চিনে চলছে লাগাতার লকডাউন। ফলে চড়া জ্বালানির পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের কাঁচামালের সরবরাহে টান পড়ায় বেড়েছে সেগুলির দরও। তার উপরে মূল্যবৃদ্ধিকে সামলাতে সুদ বাড়িয়ে চাহিদা কমানোর পথে হাঁটতে গিয়ে মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে আমেরিকায়। ভারতেও বাড়ছে সুদের হার। যা আর্থিক বৃদ্ধির পথে পাঁচিল তুলবে মনে করেই নড়বড়ে বাজার।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, “যে সব কারণ মূলধনী বাজারকে সমস্যায় ফেলেছে সেগুলির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সূচকের ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। অন্তত ছ’মাসের মধ্যে আমেরিকা বা ভারতে চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানা কিংবা বিশ্ব বাজারে কাঁচামালের জোগান বাড়ানো যাবে বলে মনে হয় না।’’ বাজার মহলের বক্তব্য, সুদ বাড়ছে বিশ্ব জুড়ে। কিন্তু তাতে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিই বেশি চোট খাবে বলে ধারণা বিদেশি লগ্নিকারীদের। তাই এ দেশে শেয়ার বিক্রিতে অটল তারা। জিওজিৎ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের চিফ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট ভি কে বিজয়কুমার বলেন, “ডলারের দাম বাড়ায় তা আকর্ষণীয় হচ্ছে। সুদ বাড়ায় লাভজনক হচ্ছে আমেরিকার বন্ড বাজার। ফলে ভারতের শেয়ার বাজার থেকে লগ্নি সরছে।’’ আশিসবাবুর দাবি, ভারতেও সুদ বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু আমেরিকা আর্থিক ভাবে অনেক বেশি উন্নত বলেই বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির গন্তব্য সে দেশেরবন্ড বাজার।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।