প্রতীকী চিত্র।
ভারতীয় রেলে দোতলা ট্রেন নতুন কিছু নয়। এখন বেশ কয়েকটি ডাবল ডেকার ট্রেন চলে। তবে সেগুলি সবই শুধুই যাত্রিবাহী ট্রেন। এ বার ভারতীয় রেলের যা পরিকল্পনা তাতে এমন ডাবল ডেকার ট্রেন আসবে যার উপরের তলায় থাকবে যাত্রী আর নীচে পণ্য। ইতিমধ্যেই ভারতীয় রেল এমন বগি বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। রেল নিয়ে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে এক নতুন দিনের সূচনা হবে। একই সঙ্গে সে ভাবে জনপ্রিয় না হওয়া ডাবল ডেকার ট্রেন পরিষেবা নতুন রূপ পাবে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশে প্রথম বার একই সঙ্গে পণ্য ও যাত্রী পরিবহণের জন্য ডাবল ডেকার ট্রেনের জন্য প্রাথমিক ভাবে ১৬০ কোটি টাকা খরচ করে ২০টি বগি তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। রেলর একটি কোচ ফ্যাক্টরিতেই তৈরি হচ্ছে বগিগুলি। ঠিক হয়েছে শুরুতে এমন দু’টি ট্রেন চালু করা হবে। যেটা ঠিক হয়েছে তাতে এই ট্রেন দু’টি কোনও নির্দিষ্ট পথে নিয়মিত চলবে। যাত্রীদের পাশাপাশি পণ্যও নিয়মিত এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হবে। সেই হিসাবে এটাই হবে প্রথম টাইমটেবল মেনে পণ্য পরিবহণ। রেল মনে করছে, এর ফলে পণ্য পরিবহণের পরিমাণও বাড়বে। করোনাকালে যাত্রী সংখ্যা কম হলেও রেল পণ্য পরিবহণে জোর দেয়। তার ফলও পাওয়া যায়। এখন পণ্য পরিবহণে আরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা সদ্য পেশ হওয়া বাজেট প্রস্তাবে জানিয়েছে কেন্দ্র। তারই অঙ্গ হিসেবে আসতে চলেছে এই নতুন ধরনের ডাবল ডেকার ট্রেন।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন ধরনের এই কামরার উপরতলায় ৭২ জন যাত্রী সফর করতে পারবেন। আর নীচের তলায় চার থেকে পাঁচ টন পণ্য পরিবহণ করা যাবে। পূর্ব রেলের প্রাক্তন মুখ্য জনসংযোগ আধিকারীক সমীর গোস্বামী রেলের এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, ‘‘পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে সব সময়ে রেলকে লাইন ফাঁকা পাওয়ার সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ, যাত্রিবাহী ট্রেন চালানোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এমন ট্রেন যদি চালু হয় যেখানে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ একসঙ্গে হবে তা হলে সেই সমস্যা আর থাকবে না।’’
এখন দেশে ছয় জোড়া ডাবল ডেকার ট্রেন চলে। তবে যাত্রী না হওয়ায় অতীতে চালু হওয়া বেশ কয়েকটি ট্রেন এখন আর চালায় না রেল। হাওড়া থেকে ধানবাদ যাতায়াতের একটি ডাবল ডেকার ট্রেন ছিল। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকেই সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, ট্রেনটি সে ভাবে জনপ্রিয় না হওয়াতেই রেল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রসঙ্গে সমীর বলেন, ‘‘ডাবল ডেকার যাত্রিবাহী ট্রেনে একটা সমস্যা রয়েছে। যাত্রীরা নীচের তলায় সফর করতে পছন্দ করেন না। কারণ, সেই তলটি প্লাটফর্মের কাছাকাছি হওয়ায় ধুলোর সমস্যা হয়। তবে নীচের তলায় এখন যদি পণ্য পরিবহণ চালু হয় তবে সেই সমস্যা থাকবে না। রেলের এই উদ্যোগ লাভজনক এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে।’’