শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।
এক ব্যক্তির দখল নেওয়া জমি আদালতের নির্দেশে মালিককে ফেরতের তোড়জোড় চলছিল প্রশাসনের তরফে। পুলিশ, ভূমি দফতরের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে জমি দখলে অভিযুক্ত ব্যক্তি আঙুল তুলে শাসানি দিলেন। বললেন, ‘‘সন্দেশখালিতে কোনও আইন চলবে না, এখানে শেখ শাহজাহান আর তাঁর অনুগামীদের নির্দেশ মতোই চলতে হবে।’’ বাধার মুখে পড়ে ফিরে এসেছে পুলিশ-প্রশাসন। ক্ষুব্ধ জমির ‘প্রকৃত মালিক।’
আগামিকাল, সোমবার সন্দেশখালি সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জমি দখল, মহিলাদের উপরে অত্যাচার-সহ একাধিক অভিযোগে এক সময়ে উত্তাল হয়েছিল সন্দেশখালি। সেই ক্ষোভ প্রশমনে চেষ্টা শুরু হয় প্রশাসনিক স্তরে।
ধৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান আর তার দলবলের ‘দখল নেওয়া’ বহু জমি গত কয়েক মাসে ফিরে পেয়েছেন মালিকেরা। আন্দোলনের মূল পর্বে উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে আসেননি মমতা। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হওয়া সেই উত্তেজনা কমার পরে ৩০ ডিসেম্বর আসছেন তিনি। তার আগে, শনিবার পুলিশ-প্রশাসনের সামনে শাহজাহানের কাকা শেখ জব্বারের ‘হম্বিতম্বি’র জেরে অস্বস্তিতে পড়েছেন স্থানীয়
তৃণমূল নেতৃত্ব।
জব্বারের বিরুদ্ধে অহেদ আকুঞ্জি নামে এক ব্যক্তি ১০ বিঘা জমি দখলের অভিযোগ করেছিলেন। হাই কোর্টের নির্দেশে এ দিন সকাল থেকে মাপজোক হয়। সীমানা-খুঁটি পোঁতার সময়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা জব্বার লোকজন এনে হুমকি দিয়ে সকলকে এলাকা ছাড়া করেন বলে অভিযোগ।
এ নিয়ে পরে মন্তব্য করেননি জব্বার। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘সকলের উচিত আদালতের নির্দেশের মান্যতা দেওয়া। যারা তা করবে না, আদালত তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’ অহেদ বলেন, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশ মতো জমি আমাকে ফেরত দেওয়ার কথা। সে জন্য সকাল থেকে জমি মাপা হয়েছিল। পরে সীমানায় খুঁটি বসাতে গেলে জব্বার বাধা দেন। পুলিশের সামনেই প্রাণে মারার
হুমকি দিয়েছেন।’’
সন্দেশখালি ১ ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের পক্ষে জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশ পালন করতে দেওয়া হয়নি। কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট আদালতকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
বিজেপি নেতা পলাশ সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শেখ শাহজাহানদের তৃণমূল কতটা ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে, এ থেকেই বোঝা যায়!’’ সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা বার বার বলেছিলাম, শেখ শাহজাহান আর তার দলবল পুলিশ-প্রশাসন, আইন-আদালত কিছুই
মানে না।’’