অপেক্ষা: লকডাউনে দোকান বন্ধ। খাবারের অপেক্ষায় চা বিক্রেতা। কলকাতায়। এএফপি
এক দিকে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা। অন্য দিকে দুশ্চিন্তা আয়ে। এই দুইয়ে ভুগছে দেশের অর্থনীতি। শিল্প-বাণিজ্য কার্যত পুরো বন্ধ থাকায় ধুঁকছে বহু সংস্থা। আয় বন্ধ অসংখ্য মানুষের। সংগঠিত ক্ষেত্রেও বাড়ছে কাজ হারানোর আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে আজ থেকে কিছু শিল্পে শর্তসাপেক্ষে কাজ শুরুর অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য।
শুধু ভারত নয়। আর্থিক কর্মকাণ্ড চালুর চিন্তাভাবনা চলছে বিশ্ব জুড়ে। তবে সকলে মানছেন যে, আগামী বেশ ক’মাস করোনা সমস্যা নিয়েই ঘর করতে হবে। তত দিন আর্থিক কর্মকাণ্ড থেমে থাকতে পারে না। এরই মধ্যে যা ক্ষতি হয়েছে ও আগামী দিনে যা ভুগতে হবে, তা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ) বিভিন্ন দেশের বৃদ্ধির পূর্বাভাস পাল্টেছে। আইএমএফের মতে, ভারত ও চিন-সহ হাতে গোনা কয়েকটি দেশে ২০২০ সালের বৃদ্ধির হার শূন্যের উপরে থাকবে। ভারতের বৃদ্ধির হার হতে পারে ১.৯%। যা বড় অর্থনীতিগুলির মধ্যে দ্রুততম।
ভারতের জাতীয় উৎপাদনের বড় অংশ আসে কৃষি থেকে। আশা, চলতি বছরে এই ক্ষেত্রে উৎপাদন ভাল হবে। ২০২০ সালে বর্ষা স্বাভাবিক থাকার পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আইএমএফের অনুমান, ২০২১ সালে ভারতের বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৭.৪%। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতিতে এতটা আশাবাদী হওয়া ঠিক হবে না বলেই মত অর্থনীতিবিদদের অনেকের। বরং তাঁদের মতে, লগ্নির সিদ্ধান্ত নিতে হবে বুঝেশুনে। নিয়মিত আয়ের কথা মাথায় রেখে নজর দিতে হবে সঞ্চয়ে।
ছোট ও মাঝারি শিল্পে প্রাণ ফেরাতে গত সপ্তাহে একগুচ্ছ ত্রাণ ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তা সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে। সেই সঙ্গে কিছু আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু হলে মানুষের হাতে টাকা আসবে বলে ধারণা। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই নিজের রাজ্যে ফিরেছেন। এই অবস্থায় কাজ শুরু সহজ হবে না।
এ দিকে, গত সপ্তাহে চতুর্থ ত্রৈমাসিকের ফল প্রকাশ করেছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, উইপ্রো এবং টিসিএস। ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা ১৭.৭% বেড়ে পৌঁছেছে ৬৯২৮ কোটি টাকায়।
তবে খারাপ খবর দিয়েছে রফতানি শিল্প। মার্চে তা সরাসরি কমেছে ৩৪.৫৭%। করোনা আবহে আগামী দিনে তা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ত্রাণ ঘোষণা করায় শুক্রবার সেনসেক্স ওঠে ৯৮৬ পয়েন্ট। নিফ্টি ২৭৪ পয়েন্ট। অবস্থা অনুযায়ী বাজার মন্দের ভাল। আগামী দিনে ভারত সত্যিই অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকলে লগ্নির জায়গা হিসেবে প্রাধান্য পাবে। তবে অনেক কিছু নির্ভর করবে করোনা মোকাবিলার উপরে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)