ফাইল চিত্র।
অভূতপূর্ব ভাবে বদলে গেল ছবিটা। গত সোমবার কর সংক্রান্ত এক মামলায় নির্দেশ দিতে গিয়ে টাটা সন্স থেকে বিতাড়িত চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রির উদ্দেশে বলা যাবতীয় কটু মন্তব্য স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে প্রত্যাহার করে নিল আয়কর আপিল ট্রাইবুনাল। প্রকাশ করল ভ্রম সংশোধন। শুধু তাই নয়, সকলকে কিছুটা অবাক করেই জানাল, ওই সব কথা নাকি আসলে কিছু বানানের ভুল। যা অনিচ্ছাকৃত। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এমন ঘটনা এর আগে কখনও ঘটতে দেখা যায়নি। এতে কার্যত নৈতিক ভাবে জিতে গেলেন মিস্ত্রি। ট্রাইবুনালের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে সাইরাসের পরিবারও। তবে একই সঙ্গে ট্রাইবুনাল বলেছে, টাটাদের তিনটি ট্রাস্টের করছাড় পাওয়ার যোগ্যতা বহাল রাখার আবেদন এবং সেই ছাড় বহাল থাকছে বলে তাদের দেওয়া নির্দেশ একই রাখা হচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে টাটার ট্রাস্টগুলির করছাড় পাওয়া নিয়ে নির্দেশ দেওয়ার সময় সাইরাস মিস্ত্রিকে ভর্ৎসনা করেছিল ট্রাইবুনালের মুম্বই বেঞ্চ। সরাসরি তোপ দেগে বলেছিল, টাটারা তাঁকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর পরেই আয়কর দফতরে করের নথি জমা দিয়েছিলেন তিনি। এমন আচরণ কর্পোরেট দুনিয়াসুলভ তো নয়ই, এমনকি নৈতিকও বলা যাবে না। বরং যথেষ্ট সন্দেহজনক। ওই নথির ভিত্তিতেই আয়কর দফতর ট্রাস্ট তিনটির কর রেহাইয়ের যোগ্যতা বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। যা সোমবার অনৈতিক তকমা দিয়ে খারিজ করে ট্রাইবুনাল।
মিস্ত্রি সম্পর্কে এমন নেতিবাচক মন্তব্যগুলিই নজিরবিহীন ভাবে ফিরিয়ে নিয়েছে ট্রাইবুনালের মুম্বই বেঞ্চ। ২৮ ডিসেম্বরের নির্দেশটির উপর একটি ভ্রম সংশোধন প্রকাশ করে বলেছে, ‘‘সমালোচনামূলক মন্তব্যটি বানান ভুলের কারণে হয়েছে।’’ ট্রাইবুনালের প্রেসিডেন্ট পি পি ভট্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রমোদ কুমার একে অনিচ্ছাকৃত বলেও ব্যাখ্যা করেছেন। বলেছেন, ভুলবশত তাঁরা দেখতেই পাননি আয়কর আধিকারিকের নোটিস পাওয়ার কারণেই মিস্ত্রি কর সংক্রান্ত নথিপত্রগুলি জমা দিয়েছিলেন। নিজে থেকে নয়।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর আচমকা টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া মিস্ত্রির পক্ষে এই ঘটনাটি বিরাট এক নৈতিক জয়। মিস্ত্রি পরিবারের বার্তা, অবিলম্বে মিস্ত্রির বিরুদ্ধে তোলা হিংস্র অভিযোগ শুধরে নেওয়ার পদক্ষপ সত্য আর ন্যায়কেই প্রতিষ্ঠা করে।
ট্রাইবুনাল এ দিন দু’পাতার ভ্রম সংশোধন প্রকাশ করেছে। কোথায় কোন ভুল কী ভাবে হয়েছে, তা প্যারা ধরে ধরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।