Finance commission

রাজ্যের সেস বঞ্চনা মানছে অর্থ কমিশনও

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন একাধিক পণ্যে আমদানি শুল্ক ও উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে তার বদলে কৃষি পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস বসিয়েছেন।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৩
Share:

— ছবি সংগৃহীত

কেন্দ্রীয় বাজেটের পরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীরা যে অভিযোগ তুলেছিলেন, এ বার তার প্রতিফলন পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের রিপোর্টেও।

Advertisement

কমিশনের বক্তব্য, আয় বাড়াতে আগের থেকে অনেক বেশি সেস, সারচার্জ বসাচ্ছে কেন্দ্র। এতে তাদের ভাঁড়ার ভরছে ঠিকই, কিন্তু বঞ্চিত হতে হচ্ছে রাজ্যগুলিকে। কারণ, সেস, সারচার্জ বাবদ আয় রাজ্যের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয় না। এর দরুন কেন্দ্রীয় রাজস্বের ভাগ হিসেবে রাজ্যগুলির প্রাপ্য প্রতি বছরই কমছে।

১ ফেব্রুয়ারি ঘোষিত বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন একাধিক পণ্যে আমদানি শুল্ক ও উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে তার বদলে কৃষি পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস বসিয়েছেন। এই সেস বাবদ আয়ের পুরো টাকাই কেন্দ্রের কাছে থাকবে। অথচ আমদানি ও উৎপাদন শুল্ক বাবদ আয়ের টাকা রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ করে নিতে হত। সেই কারণে একে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী বাজেটের তকমা দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র-সহ বিরোধী নেতারা। এর আগে তেলের উপরে উৎপাদন শুল্কের বদলে সেস চাপানোর সময়েও এই একই অভিযোগ উঠেছিল।

Advertisement

কমিশনও ঠিক এ দিকেই আঙুল তুলেছে। বক্তব্য, ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৮-১৯ সালের মধ্যে কেন্দ্রের প্রতি ১০০ টাকা আয়ে সেস-সারচার্জ থেকে আসত ১৩ টাকা। অর্থাৎ, ৮৭ টাকাই রাজ্যগুলির সঙ্গে ভাগ করে নিত হত। কিন্তু ২০২১-২২ থেকে ২০২৫-২৬ সালে ১০০ টাকার মধ্যে সেস-সারচার্জ বাবদ আয় পৌঁছবে ১৮.৪ টাকায়।

কমিশনের হিসেব, ২০২০-২১ সালের বাজেটে কেন্দ্র রাজ্যগুলির মধ্যে ৭.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা বণ্টন করবে বলেছিল। সংশোধিত হিসেবে তা ৫.৫০ লক্ষ কোটিতে নেমেছে। ২০১৯-২০ সালেও রাজ্যগুলির ভাগ ৮ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ৬.৫০ লক্ষ কোটিতে নেমে আসে।

বাজেটের আগে সীতারামনকে চিঠি লিখে অমিত জানিয়েছিলেন, ২০১৯-২০ সালে কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ ১১ হাজার কোটি টাকা কম পেয়েছে। চলতি অর্থবর্ষেও ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা কম মিলেছে। তা ছাড়া, এই করের ভাগ আগে মাসের পয়লা তারিখে মিলত। এখন তা ২০ তারিখে আসছে। ফলে, বেতন-পেনশন দিতে গিয়ে অসুবিধার মুখে পড়ছে রাজ্য।

কেন্দ্রীয় ব্যয় সচিব টি ভি সোমনাথনের যুক্তি, ‘‘কোভিড, অর্থনীতির ঝিমুনির জন্য কেন্দ্রের আয় কম হচ্ছে। ফলে তার থেকে রাজ্যের ভাগও কমে যাচ্ছে। সব রাজ্যেরই এক সমস্যা।’’ মাসের ২০ তারিখে রাজ্যের প্রাপ্য মেটানোর বিষয়ে তাঁর যুক্তি, জিএসটি চালু হওয়ার পরে এখন মাসের ২০ তারিখের আগেই কেন্দ্রের সিংহভাগ আয় রাজকোষে আসছে।

কমিশনের বক্তব্য, সেস-সারচার্জ বসিয়ে নিজেদের কোষাগার যথাসম্ভব সামাল দিচ্ছে কেন্দ্র। চলতি বছরে কোভিডের ধাক্কায় কেন্দ্রের আয় ১০.৬ শতাংশ কম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেস ও সারচার্জ বসিয়ে কেন্দ্র তা ৬.৭ শতাংশে আটকে রেখেছে। অর্থাৎ, অতিমারিতে বঞ্চনার শিকার রাজ্যই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement