—প্রতীকী চিত্র।
গত বারের তুলনায় অনেক কম দরে বিক্রি হচ্ছে চা পাতা। পুজোর আগে এ নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে বহু চা বাগান কর্তৃপক্ষের। গত ১২ অগস্ট শিলিগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রে এক কেজি ‘সিটিসি’ পাতা বিক্রি হয়েছে ১৬২ টাকা কেজি দরে। আগের বছর একই সময়ে সেখানে চা পাতার গড়পড়তা দাম ছিল ১৮৮ টাকার কাছাকাছি। কলকাতা নিলাম কেন্দ্রে গত বছরের তুলনায় কেজিতে প্রায় ২০-২৩ টাকা কম মিলছে বলে দাবি। বাগান পরিচালকদের বক্তব্য, দ্বিতীয় ফ্লাশের (সেকেন্ড ফ্লাশ) চায়ের এমন সস্তা হওয়া ‘অস্বাভাবিক’। তার উপর পাতার চাহিদাও কমে গিয়েছে।
তরাইয়ের একটি বাগান থেকে অগস্ট শুরুর নিলামে প্রায় ৩১ হাজার কেজি চা পাতা পাঠানো হয়েছিল শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে। সেই সপ্তাহ বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪০০০ কেজি। বিপুল উদ্বৃত্ত থেকে গিয়েছে। সেই উদ্বৃত্তের পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। চা শিল্পের সংগঠন ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র উত্তরবঙ্গের সচিব সুমিত ঘোষের কথায়, “যে সব সংস্থার একাধিক বাগান রয়েছে, তারা একটি বাগানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে ভাল মানের চা পাতা তৈরি করা বাগানের থেকে। কিন্তু যাদের একটি বাগান, সেখানে পরিস্থিতি উদ্বেগের।”
চা মহল্লার ধারণা, মূলত দু’টি কারণে এই পরিস্থিতি। প্রথমত, এ বছর চা পাতার মান খারাপ হওয়া। দ্বিতীয়ত, ঘরোয়া বাজারের সম্প্রসারণ না হওয়া। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রথম এবং দ্বিতীয় ফ্লাশের উৎপাদন কম। কিন্তু অসমান বৃষ্টিতে প্রথম এবং দ্বিতীয় ফ্লাশের গুণগত মান নেমেছে। মিলছে না দাম।
ছোট চা বাগান থেকে রাজ্যের আধিকাংশ চায়ের জোগান আসে। ওই বাগানগুলি কাঁচা পাতা বিক্রি করে বটলিফ কারখানাকে। প্রতি বছর এই সময়ে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে কাঁচা চা পাতা বিক্রি হয়। এ বার সেই পাতা কখনও ১০ টাকা, কখনও ১২ টাকায় বিকোচ্ছে। ছোট চা বাগানের তরফে বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “কেজি প্রতি চায়ের খরচও উঠছে না। বহু বটলিফ কারখানায় তালা ঝুলেছে।” ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পান্ডে বলেন, “চায়ের দাম না পেলে অনেক বাগানের স্বাভাবিক কাজকর্ম চলাই মুশকিল হবে।’’