প্রতীকী ছবি।
ব্যক্তিগত হোক বা গণপরিবহণ, দূষণ কমাতে এবং তেলের দরের ঝাঁঝ এড়াতে বিকল্প হিসেবে বৈদ্যুতিক ও সিএনজি (প্রাকৃতিক গ্যাস চালিত) গাড়ির ব্যবহার বাড়ানো নিয়ে চর্চা চলছে বহুদিন। পেট্রল-ডিজ়েলের দাম রেকর্ড উচ্চতা ছোঁয়ায় সেগুলির খোঁজ আরও বাড়ে। তাতে ইন্ধন জুগিয়েছে অশোধিত তেলের ১০০ ডলার পেরনো। তবে বাস্তবে এই সব গাড়ির বিক্রি এখনও নগণ্য। তাই বাজেটে রাজ্য বৈদ্যুতিক এবং সিএনজি গাড়ি কিনলে দু’বছর রেজিস্ট্রেশন ফি এবং পথকর মকুবের সুবিধা ঘোষণায় খুশি গাড়ি শিল্প। তাদের ধারণা, চাহিদা বাড়ানোর এই দাওয়াইয়ে কিছুটা কাজ হবে। তবে নেট-ক্যাব সংস্থাগুলির ইঙ্গিত, বিক্রি বাড়ানোর পথে কাঁটা জ্বালানির জোগান, তার পরিকাঠামোর ঘাটতি। বাস মালিকদের সংগঠনের একাংশ আঙুল তুলেছে সিএনজি বাসের চড়া দামের দিকে। অতিমারিতে বিপর্যস্ত পরিবহণ শিল্পের পক্ষে এই বাস কেনার সামর্থ্য নিয়ে সংশয়ী তারা।
সূত্রের দাবি, বৈদ্যুতিক এবং সিএনজি গাড়ির চাহিদা বাড়াতে নানা ছাড় দিচ্ছে বিভিন্ন রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গেও বাণিজ্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক গাড়ির পারমিট ফি-তে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে লম্বা সময় ধরে আর্থিক সুবিধা এই প্রথম। রাজ্যে গাড়ি ডিলারদের সংগঠন ফাডা-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ ভাণ্ডারি ও আঞ্চলিক ডিরেক্টর (বৈদ্যুতিক গাড়ি) রোহিত চৌধুরীর দাবি, তেলের চড়া দামের প্রেক্ষিতে এই ছাড় অনেককেই বিকল্প জ্বালানির গাড়িতে আগ্রহী করবে। বিক্রিতেও গতি আসবে। তবে সিটি সাবার্বান সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটো সাহা বলেন, ‘‘করোনায় পরিবহণ শিল্প রুগ্ণ। বিপুল খরচে এমন বাস কিনে কী ভাবে চালাবে স্পষ্ট নয়।’’ অনলাইন ক্যাব অপারেটরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘শহরে আরও সিএনজি পাম্প জরুরি। গ্যাসের জোগান নিশ্চিত করতে হবে।’’
সিএনজি পাম্প কিংবা বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন, গোটা দেশেই অপ্রতুল। রোহিতের অবশ্য দাবি, বিভিন্ন ডিলারের শো-রুম, জাতীয় সড়ক কিংবা মন্দারমণির মতো পর্যটন কেন্দ্রে চার্জিং স্টেশন হয়েছে। একবার পুরো চার্জে যাত্রিবাহী গাড়ি প্রায় ২০০ কিলোমিটার যায়। সিদ্ধার্থের বক্তব্য, বিক্রি বাড়লে পাম্প বা চার্জি স্টেশন তৈরিতেও গতি আসবে।
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলায় তিনটি সংস্থার ২৭টি সিএনজি পাম্প রয়েছে। এ মাসেই বেড়ে হবে ৬০টি। কলকাতা-রাজারহাটে দৈনিক ৮০০-১০০০ কেজি সিএনজি গাড়িতে বিক্রি হচ্ছে, দাবি গেল এবং গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাইয়ের যৌথ সংস্থা বেঙ্গল গ্যাসের। উত্তরপ্রদেশ থেকে দুর্গাপুরের পরে গেলের প্রাকৃতিক গ্যাস পাইলাইন সম্প্রসারিত হলে সিএনজি জোগানও বাড়বে। এই ছাড়ে রাজ্যে গাড়ি বিক্রি বাড়লে সিএনজি-ও বিকোবে, আশায় সংস্থাগুলি।