—প্রতীকী চিত্র।
বহু দেশ আর্থিক বৃদ্ধির কক্ষপথে ফিরেছে বটে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অর্থনীতির ধারাবাহিক উন্নতি দেখা যায়নি। সব থেকে আশঙ্কার বিষয়, সেই বৃদ্ধিতে শামিল হচ্ছেন না সমাজের সব অংশের মানুষও। অর্থাৎ মূলত নিম্নবিত্তরা রয়ে যাচ্ছেন উন্নতির রাস্তার বাইরে— গোটা বিশ্বের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে এই আশঙ্কাই উঠে এল ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) রিপোর্টে। দাভোসে চলছে তাদের বার্ষিক সম্মেলন। ভারত-সহ নানা দেশ যোগ দিয়েছে। সেই মঞ্চ থেকেই ওই রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে শুধু উন্নতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারা নয়, উদ্ভাবনের পথে এগোনোর অক্ষমতা এবং বিশ্ব অর্থনীতির অংশ হয়ে উঠতে না পারা নিয়েও বহু ক্ষেত্রে চিন্তা রয়ে যাচ্ছে। যে কারণে, বেশির ভাগ দেশেই বৃদ্ধির হার ধরে রাখা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। যা বিশ্ব অর্থনীতির পরবর্তী সঙ্কট মোকাবিলার পথে বাধা তৈরি করবে।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর পথে হাঁটছে ভারতও। কিন্তু সকলের আর্থিক অবস্থার যে উন্নতি হচ্ছে না, তা বারবার মনে করাচ্ছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। তাঁদের মতে,
এই বৃদ্ধির পথ অনেকটা ইংরাজি ‘কে’ (K) অক্ষরের মতো। অর্থাৎ এক শ্রেণি বৃদ্ধিতে শামিল হচ্ছে এবং তার সুফল পাচ্ছে। অন্য অংশ তলিয়ে যাচ্ছেন আরও দারিদ্রের অন্ধকারে। যে কারণে সমাজে আর্থিক বৈষম্য বেড়েছে বলে মনে করছে অর্থনীতিবিদদের অনেকে। যদিও মোদী সরকারের দাবি, উন্নত দেশ হয়ে ওঠার পথে হাঁটছে ভারত। এখনও মাথায় দ্রুততম অর্থনীতির শিরোপা। আজ আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও মোদী সরকারের প্রশংসা করে বলেছেন, কেন্দ্রের সংস্কার ও নানা প্রকল্প দেশের মানুষের উন্নয়নে সহায়ক হয়েছে।
রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে ১০৭টি দেশকে নিয়ে করা সমীক্ষার ভিত্তিতে। বিষয়বস্তু দেশগুলির আর্থিক বৃদ্ধির ভবিষ্যৎ। যা বলছে, চারটি মাপকাঠিতে কোনও দেশই ৮০-র বেশি নম্বর পায়নি। বেশি আয়ের দেশগুলি যেখানে উদ্ভাবন ও সকলের উন্নয়নের দিক দিয়ে ভাল ফল করেছে, সেখানে কম আয়ের দেশগুলি বৃদ্ধি ধরে রেখেছে। মধ্য ও নিচু আয়ের দেশগুলির মধ্যে ভারত ও কেনিয়া ধারাবাহিকতায় এগিয়ে। জর্ডন উদ্ভাবনে, ভিয়েতনাম সকলের কাছে উন্নয়ন পৌঁছে দেওয়ায় ও ফিলিপিন্স সঙ্কট মোকাবিলায়।
যদিও ২০৩০-এর মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির গতি তিন দশকে সবচেয়ে নীচে নামতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রিপোর্টটি। আর এই কারণেই শুধু বৃদ্ধি যথেষ্ট নয় বলে জানাচ্ছেন ডব্লিউইএফের এমডি সাদিয়া জ়াহিদি। তাঁর মতে, সে জন্য অর্থনীতির উন্নতি ও তা মাপার নতুন পথ খোঁজা দরকার। যাতে সকলকে সঙ্গে নিয়ে এগোনো সম্ভব হবে উন্নয়নের পথে।