—প্রতীকী চিত্র।
আর্থিক বৃদ্ধি, উৎপাদনমুখী শিল্পে গতি আনা, রফতানি বাড়ানো এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প। কিন্তু অর্থনীতির দোলাচলে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাদেরই। লোকসভা ভোটের মুখে আগামিকাল অন্তর্বর্তী বাজেটে তাই কেন্দ্রের কাছে একগুচ্ছ আর্জি জানিয়েছে ছোট শিল্প। যাদের মধ্যে অন্যতম ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় বিভিন্ন ধরনের চার্জ-কাঠামোয় সংস্কার, অভিযোগ জানানোর ওম্বুডসমান ব্যবস্থা জোরদার করা, বন্ধ হওয়া নানা আর্থিক সুবিধা প্রকল্প ফের চালু ইত্যাদি।
অতিমারিতে ঝাঁপ বন্ধ হয়েছিল একের পর এক ছোট সংস্থার। কাজ গিয়েছিল হাজার হাজার মানুষের। সরকার নানা উদ্যোগের দাবি করলেও, কেন্দ্রের পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট হয়েছিল সেই ছবি। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও, আগামী দিনের পথ আরও মসৃণ করতে সরকারের কাছে নানা সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে এই শিল্পের বিভিন্ন সংগঠন। তাদের একাংশের অভিযোগ, পুঁজির জোগান ছোট সংস্থার জন্য অনেক বেশি জরুরি বিষয় হলেও তাদের কাছে আর্থিক পরিষেবার পথ ততটা মসৃণ নয়।
ছোট শিল্পের সংগঠন ফিসমে-র বক্তব্য, মূলধন জোগাড়ের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিপত্য থাকায় বাজারে প্রতিযোগিতা কম। কিন্তু অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা প্রায় নিষ্ক্রিয় ও দুর্বল। যা নিয়ে ছোট সংস্থার অভিজ্ঞতা ভাল নয়। যেমন, কোনও সংস্থা ঋণ নেওয়ার পরে খারাপ পরিষেবার জন্য ব্যাঙ্ক বদলাতে চাইলে খানিকটা জোর করেই ২%-৪% চার্জ নেওয়া হয়। সংগঠনের দাবি, এটি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নীতির পরিপন্থী। তাই তা বন্ধ করা হোক।
পাশাপাশি, ‘অসহায়’ এমএসএমই-কে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কিং ওম্বুডসমান পথ দেখাতে পারে না বলেও দাবি ফিসমের। অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রেই তারা ব্যাঙ্কের পক্ষ নেয়। সেই সঙ্গে বড় সংস্থার তুলনায় ছোটগুলির ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বেশি বলে জানিয়ে সংগঠনের প্রস্তাব, বিমা সংস্থাগুলির মাধ্যমে ওই ব্যবস্থা চালু করা হোক। যারা কোনও বন্ধক বা খরচের একাংশ (মার্জিন মানি) জমা রাখতে বলে না। শুধু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চার্জ নেয়। বর্তমানে যে ব্যবস্থা শুধু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাজের বরাতের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয়।
রাজ্যে ছোট শিল্পের অপর সংগঠন ফসমির আর্জি, ২০২০ সালের মার্চে বন্ধ হওয়া যন্ত্রাংশ কেনার ঋণে ভর্তুকি সুবিধা প্রকল্পটি ফের চালু করে তার ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হোক। ফের চালু হোক বন্ধ হওয়া প্রযুক্তি উন্নয়নের সহায়তা প্রকল্পও। এ ছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করেও সুবিধার আর্জি জানিয়েছে তারা।
ভারতীয় যুব শক্তি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ট্রাস্টি লক্ষ্মী বেঙ্কটরামন বেঙ্কটেশন আবার চিনের বিকল্প হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ছোট শিল্পের সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছেন। তাঁর বার্তা, তাই বিশেষত গ্রামের ছোট শিল্পে নজর দেওয়া হোক। ব্যবসা দাঁড় করানো থেকে কর সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণে এগিয়ে আসুক সরকার। দেওয়া হোক সুদ-সহ অন্যান্য ভর্তুকি।