প্রতীকী ছবি।
কাঁচামালের দাম বাড়ায় ও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ গ্রামীণ অর্থনীতিতে ধাক্কা দেওয়ায় মূল্যবৃদ্ধি আরও মাথা তুলতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিল। সেই সঙ্গে তাদের হুঁশিয়ারি, আরও চড়তে পারে খাদ্যপণ্যের দাম। এমনকি তেল বা খাদ্যপণ্যের (যে সব পণ্যের দাম বিভিন্ন মরসুমে বদলায় বা অস্থির থাকে) দাম বাদ দিয়েও গ্রামীণ বাজারে বাকি জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির হার মাথা তোলার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রের পরিসংখ্যান জানিয়েছে, এপ্রিলে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে ৪.২৯% হয়েছে। কিন্তু তার পরেই স্টেট ব্যাঙ্কের এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, এই হার বিভ্রান্তিমূলক। জিনিসপত্রের দামের ঠিক ছবিটা উঠে আসেনি ওই সংখ্যায়। আসলে পেট্রল-ডিজেল, চিকিৎসা, অনলাইন পণ্য কেনার খরচ বিপুল বেড়েছে। যা এই হার দেখে বোঝা যাচ্ছে না। এগুলোই আগামী দিনে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে উপরে তুলবে। ওই সমীক্ষা বলে, জ্বালানি, চিকিৎসার মতো অত্যাবশ্যক পণ্যের খরচ এতটাই বাড়ছে যে, অত্যাবশ্যক নয় এমন জিনিসপত্রে খরচ বাঁচাচ্ছেন মানুষ।
বুধবার রিপোর্টে ক্রিসিলের দাবি, গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে সারা দেশে লকডাউন চলছিল। ফলে যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা যায়নি। তাই ওই সময়ের ভিত্তিতে এ বার মূল্যবৃদ্ধি হিসেব করলে তা দামের ঠিক ছবি তুলে ধরবে না। যে কারণে ধারাবাহিক ভাবে মরসুম অনুযায়ী তার গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখেছে তারা। আর সেই নিরিখেই এটা পরিষ্কার, এপ্রিলে খুচরো ও পাইকারি, দুই বাজারেই মূল্য সূচক আগের থেকে উঁচুতে মাথা তুলেছে।
এর কারণ হিসেবে সংস্থার দাবি, প্রথমত, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল, ভোজ্য তেল, ধাতুর মতো কিছু পণ্যের দাম বাড়ায় দেশে কাঁচামালের খরচ বৃদ্ধি। যা উৎপাদনের খরচকে ঠেলে তুলে জিনিসপত্রের দামে চাপ ফেলছে। তার উপরে পরিবহণের জন্য গুনতে হচ্ছে বেশি টাকা। যে কারণে পাইকারি বাজারের মূল্য সূচক এপ্রিলে ১০ শতাংশের গণ্ডি পার করেছে। দ্বিতীয়ত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গ্রামাঞ্চলেও সংক্রমণ ছড়ানোয় জোগানে ধাক্কা লাগা। ফলে ঝুঁকি বাড়ছেই।
ক্রিসিলের আশঙ্কা, এই মুহূর্তে চাহিদা তলানিতে থাকায় বহু সংস্থা উৎপাদনের বর্ধিত খরচ নিজেরাই বহন করছে। কিন্তু অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পরে চাহিদা বাড়লে ওই বোঝা তারা ক্রেতাদের ঘাড়ে চাপাবে।