মাথায় হাত।—ছবি এএফপি।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউনের ফলে আতঙ্কিত শেয়ার বাজারে পতনের রেকর্ড গড়ল সূচক। সোমবার সেনসেক্স পড়েছে ৩,৯৩৪.৭২ পয়েন্ট। এর আগে এক দিনে কখনও এতটা পড়েনি সূচক। এর জেরে লগ্নিকারীরা হারিয়েছেন ১৪.২২ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ। পাশাপাশি, পতনের নতুন নজির তৈরি করেছে টাকা। ১০০ পয়সা বেড়ে প্রতি ডলারের দাম হয়েছে ৭৬.২০ টাকা। পতনের তল দেখতে না-পেলেও বিশেষজ্ঞদের অনেকের বক্তব্য, পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার ভাল সুযোগ তৈরি হয়েছে।
এ দিন লেনদেনের শুরু থেকেই পতনের বহর এতটাই বেশি ছিল যে, আধ ঘন্টার মধ্যেই ১০ শতাংশের সার্কিট ছাপিয়ে যায় সেনসেক্স। ফলে নিয়ম অনুযায়ী বন্ধ হয় লেনদেন। বেলা ১০.৪৫ নাগাদ তা ফের শুরুর পরেও পতনে লাগাম পরানো যায়নি। দিনের শেষে সেনসেক্স শেষ হয় ২৫,৯৮১.২৪ অঙ্কে। আর ১,১৩৫.২০ পয়েন্ট পড়ে নিফ্টি থামে ৭,৬১০.২৫ অঙ্কে।
শুধু ভারত নয়। গত কয়েক দিনের মতো সোমবারও বাজার পড়েছে বিশ্ব জুড়েই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনার মোকাবিলায় ১ লক্ষ কোটি ডলারের ত্রাণ চালু করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে সেনেটে ঐকমত্য না-হওয়া হতাশা তৈরি করেছে লগ্নিকারীদের মধ্যে। তার উপরে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক নানা পদক্ষেপ করলেও, করোনাভাইরাসের জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেবে বলে আতঙ্ক বাড়ছে। ফলে হাতের শেয়ার বেচছেন লগ্নিকারীরা।
বাজার আরও কতটা পড়বে, তা বলতে পারছেন না কোনও বিশেষজ্ঞই। তবে স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ বলেন, ‘‘এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, কম দামে ভাল শেয়ার কেনার সুযোগ এসেছে। যাঁরা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত, তাঁরা এই সুযোগ নিলে পরে লাভবান হতে পারেন। তবে লগ্নি করতে হবে দীর্ঘ মেয়াদে।’’ শেয়ারের দাম যেখানে নেমেছে, তাতে আর কত দিন এ ভাবে সূচক পড়বে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে কমলবাবুর মতো বাজার বিশেষজ্ঞের।
এ দিকে কলকাতায় লকডাউন থেকে শেয়ার ব্রোকিং সংস্থার কর্মীদের ছাড় না-দেওয়ায় শেয়ার লেনদেনে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্রোকারদের অনেকেই। দেকো সিকিউরিটিজ়ের কর্ণধার অজিত দে-র বক্তব্য, বিএসই এবং এনএসই কর্তৃপক্ষ বাড়িতে টার্মিনাল নিয়ে গিয়ে শেয়ার লেনদেনের অনুমতি দিয়েছেন। এতে শেয়ার কেনাবেচা করা যাবে ঠিকই। কিন্তু সার্ভার চালু না-করলে সমস্যা হবে দাম মেটানো ও শেয়ার হস্তান্তরের (সেটেলমেন্ট) ক্ষেত্রে। দফতরে না-এসে সেটেলমেন্ট কার্যকর করা সম্ভব নয়। ব্রোকার তা কার্যকর করতে না-পারলে তাঁর পক্ষে লেনদেন চালানো সম্ভব হবে না। তাই রাজ্যের কাছে তাঁদের আর্জি, ব্রোকিং সংস্থার কর্মীদের লকডাউন থেকে যেন ছাড় দেওয়া হয়। যেমন মহারাষ্ট্র করেছে।