—ফাইল চিত্র।
বিশ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজে সরকারি খরচ খুব বেশি না-হওয়ায় শিল্প মহলের অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। আজ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার পরে প্রথমবার তাদের মুখোমুখি হয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আশ্বাস দিলেন, পরিকাঠামোয় সরকারি খরচ বাড়াতে ‘ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার পাইপলাইন’-এ জোর দেওয়া হবে।
করোনা ও লকডাউনের ধাক্কা থেকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মোদী সরকার আর্থিক প্যাকেজে মূলত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নগদ জোগান ও ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণের উপরে জোর দিয়েছে। শিল্পপতিদের প্রশ্ন ছিল, এতে বাজারে চাহিদা বাড়বে কী করে? আজ বণিকসভা সিআইআইয়ের কর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে নির্মলা আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছরে পরিকাঠামোয় ১০০ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করতে সরকার প্রকল্পের যে তালিকা তৈরি করেছে, তার মধ্যে বড় প্রকল্পগুলির কাজ আগেই শুরু করে দেওয়া হবে। নির্মলার দাবি, এর ফলে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। বাজারে চাহিদা বাড়বে। তার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে।
আর্থিক প্যাকেজে বড় শিল্পের জন্য কিছু নেই বলেও শিল্প মহলের ক্ষোভ রয়েছে। আজ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে শিল্পকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, বড় শিল্পও সমস্যার মুখে রয়েছে। বিশেষত পর্যটন, গাড়ি ও বিমান পরিবহণের ব্যবসা লাটে ওঠায় অনেকের পক্ষে টিকে থাকাই কঠিন।
সিআইআই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্মীদের চাকরি রক্ষা করতে, চাহিদা বাড়াতে ও বড় মাপের শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। অর্থমন্ত্রী আজ শিল্পপতিদের সামনে যুক্তি দিয়েছেন, সরকার তাঁদের পুরোপুরি বিশ্বাস করে। এ বার কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রে শিল্প মহলকে উদাহরণ তৈরি করতে হবে। প্রশিক্ষণহীন কর্মীদের ক্ষেত্রে পেশাদারি মনোভাব নিতে হবে। সব কর্মীদের সব স্তরে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
আজ এপ্রিলের সার্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতির রিপোর্টে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে, সরকার আর্থিক কর্মকাণ্ডে লকডাউনের প্রভাব সম্পর্কে অবহিত। করোনার হানা কতদিন বহাল থাকবে, আরও কতখানি ছড়াবে, তা নিয়ে চিন্তিত। উদ্বেগ রয়েছে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের আর্থিক বৃদ্ধি নিয়েও। তবে একই সঙ্গে সেখানে দাবি, বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার খাদে ঝুলে থাকার প্রভাবও গভীর ভাবে পড়ছে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারে। তবে আর্থিক প্যাকেজে যে সরকারি খরচ ও নগদ জোগান বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা যথেষ্ট।
অর্থ মন্ত্রকের মতে, লকডাউনের ফলে মূল্যবৃদ্ধির হার কমই থাকবে। বিদেশি মুদ্রার লেনদেনে বিশেষ চিন্তা নেই। বরং বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের জেরে টাকার দরও এপ্রিলে পায়ের তলায় জমি খুঁজে পেয়েছে কিছুটা। বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারেও সমস্যা নেই।