প্রতীকী ছবি
করোনার শুরুতে মুরগির মাংস নিয়ে গুজব, তার পরে লকডাউন এবং সম্প্রতি আমপান— এই ত্র্যহস্পর্শে বড় ধাক্কা খেয়েছে রাজ্যের পোলট্রি শিল্প। এখন যা মুরগি পালন হচ্ছে তাতে রাজ্যের মানুষের চাহিদাটুকু টেনেটুনে মিটছে বটে, তবে প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে মুরগি রফতানি নেমে এসেছে কার্যত শূন্যে। সমস্ত খামার আগের মতো জোরকদমে উৎপাদন শুরু না-করলে ফের রফতানি চালুর সম্ভাবনা দেখছে না পোলট্রি শিল্প।
মুরগির মাংস থেকে করোনা সংক্রমণের গুজবে ফেব্রুয়ারি থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশে পোলট্রি মুরগির চাহিদা তলানিতে নেমেছিল। এর পর লকডাউনে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় হোটেল-রেস্তরাঁয়। সব শেষে আমপান ঝড়ে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়ায় মুরগির খামার ভেঙে বিপুল ক্ষতি হয়েছে। ঝাঁপ বন্ধ করতে হয়েছে বহু পোলট্রিকে। এই অবস্থায় রাজ্যের চাহিদা ছাপিয়ে রফতানির জন্য আরও মুরগি পালন শুরু করতে বেশ কিছু দিন সময় লাগবে বলেই মনে করছে পশ্চিমবঙ্গ পোলট্রি ফেডারেশন।
ফেডারেশন সূত্রের খবর, করোনার আগে রাজ্যের খামারগুলিতে প্রতি সপ্তাহে ২.৮০ কোটি কেজির মতো মুরগি বাজারে বিক্রির উপযুক্ত হত। এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১.৭০ কোটিতে। রাজ্যের চাহিদা মেটাতেই তা শেষ হয়ে যাচ্ছে। অথচ, মাস চারেক আগে পর্যন্তও রাজ্য থেকে সপ্তাহে কমপক্ষে ৭০-৮০ লক্ষ কেজি মুরগি রফতানি হত বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসমে। ব্যবসাও বাড়ত খামার মালিকদের।
প্রাণিসম্পদ বিকাশমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, রাজ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য খামারগুলিতে মুরগির অভাব নেই। তবে মাংস ও ডিমের জোগান বাড়াতে শীঘ্রই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ১২ লক্ষ মুরগি শাবক বিলি হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ বছর রাজ্যে ১.৫ কোটি হাঁস-মুরগি শাবক বিলির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতির দাবি, রাজ্যের পোলট্রি শিল্পের যা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে, তাতে সরকারি সাহায্য বা ব্যাঙ্ক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ না-পেলে ছোট-মাঝারি খামারগুলির ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন।
আরও পড়ুন: ছুড়ে ফেলা কি সহজ? প্রশ্ন চিনা পণ্য ঘিরে